নিহত বাদশা প্রধান আসামী: মিথ্যা মামলায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী ঘরছাড়া

 07091216

আবদুল্লাহ নয়ন, কক্সবাজার:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় গত ২৫অক্টোবর বিজিবির গুলিতে নিহত হয়েছে পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের মোক্তার আহমদের পুত্র ও পৌর স্বেচ্ছাসেবকদলের ওয়ার্ড যুগ্ম আহবায়ক সাইফুল ইসলাম বাদশা (২৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে চিরিংগা পুরাতন বাসষ্টেশন মসজিদের সামনে মারা যায়। পরে নিহত বাদশার লাশ বিজিবির হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ময়না তদন্ত শেষে পরদিন ২৬অক্টোবর সন্ধ্যায় নিহতের পরিবারের কাছে তার লাশ হস্তান্তর করে। এদিকে চকরিয়া থানা পুলিশ ২৬অক্টোবর রাতে ওই হত্যা মামলাসহ ৩টি মামলায় নিহত সাইফুল ইসলাম বাদশাকে ১নং আসামী করে ১৮দলীয় জোটের আরো ৪৪জনের নাম উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা ১৫শ জনকে আসামী করে ৩টি মামলা দায়ের করে। নিহত ব্যক্তিকে প্রধান আসামী করে চকরিয়া থানা পুলিশ যে মামলা গুলো রুজু করা হয়েছে তা নিয়ে বিবেকবান মানুষের কাছে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নিহত ব্যক্তি কিভাবে হত্যা মামলার ১নং আসামী হয়।

এসব মামলায় অন্যান্য বিএনপি-জামায়াতের আসামীরা হলেন, ১। বিজিবির গুলিতে নিহত স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা সাইফুল ইসলাম প্রকাশ বাদশা, ২। পৌর মেয়র নুরুল ইসলাম হায়দার, ৩। নুরুল আমিন কমিশনার, ৪। পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ফখরুদ্দিন ফরায়েজী, ৫। উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী খোকন মিয়া, ৬। জেলা বিএনপির সহসভাপতি এনামুল হক, ৭। মো: ছরওয়ার, ৮। মৌলভী মোবাশ্বের, ৯। নুর হোসেন কমিশনার, ১০। বেলাল আহমদ, ১১। নাজেম উদ্দিন, ১২। দিদারুল ইসলাম, ১৩। জামায়াত নেতা আজাদুল ইসলাম, ১৪। আবদুল হাফেজ মেম্বার, ১৫। শিব্বির আহমদ, ১৬। মাতামুহুরী উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সোয়াইবুল ইসলাম সবুজ, ১৭। নুরুল আবছার (হালকাকারা), ১৮। আবদুল হামিদ (হাসপাতাল পাড়া), ১৯। পৌর তরুণ প্রজন্মদলের আহবায়ক রানা হামিদ, ২০। পৌর যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মনির, ২১। আবুল কাসেম (ফুলতলা), ২২। আবদুল্লাহ নোমান (ফুলতলা), ২৩। গিয়াস উদ্দিন (১নং ওয়ার্ড), ২৪। ভুট্টো (ডুলাহাজারা), ২৫। আলমগীর  (কোরালখালী) ২৬। আলী আহমদ এমইউপি, ২৭। এনামুল হক বাবু কমিশনার ২৮। মনজুর মোর্শেদ, ২৯। জামাল উদ্দিন, ৩০। উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি জয়নাল আবদীন, ৩১। জামাল উদ্দিন (হাসপাতাল পাড়া), ৩২। আলফাজ উদ্দিন, ৩৩। নুর আহমদ (বাশঘাট), ৩৪। সাইফুল ইসলাম  (সোসাইটি পাড়া) ৩৫। জামায়াত নেতা শওকত আলম (মাষ্টার পাড়া), ৩৬। পটু (পালাকাটা), ৩৭। সাইদুল হক (লক্ষ্যারচর), ৩৮। আনোয়ারুল ইসলাম আজাদ (এসকে পাড়া ফুলতলা), ৩৯। জাফর আলম (পশ্চিম বাটাখালী), ৪০। জমির উদ্দিন (২নং ওয়ার্ড), ৪১। তোফায়েল (২নং ওয়ার্ড), ৪২। পৌর যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল করিম (৯নং ওয়ার্ড), ৪৩। মিজান (পশ্চিমদিগরপানাখালী), ৪৪। পৌরসভার প্যানেল মেয়র ও পৌর যুবদলের সি:সহসভাপতি শহিদুল ইসলাম ফোরকান, ৪৫। পৌরসভা বিএনপির সাবেক সি:যুগ্ম সম্পাদক আবদুর রহিম (মাষ্টারপাড়া)সহ অজ্ঞাতানামা ১২শ/১৫শ জনের বিরুদ্ধে পৃথক ৩টি মামলা ও অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা রুজু হয়েছে। এসব মামলায় আসামী হয়ে বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীরা পুলিশি হয়রাণী ও গ্রেফতারের ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এমনকি অনেক গ্রাম এখন পুরুষ শুন্য হয়ে পড়েছে।

চকরিয়া থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া জানান, থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মনিরুজ্জামান চৌধুরী বাদি হয়ে পুলিশ এসল্ট ও বাদশা হত্যা, বিস্ফোরক দ্রব্য ও সন্ত্রাস দমন আইনের ধারায় তিনটি ও উপ-পরিদর্শক (এসআই) কল্লোল চৌধুরী বাদি হয়ে মিজান হত্যার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন