মিয়ানমারের কুখ্যাত ইনসেইন কারাগারে বোমা বিস্ফোরণে ৮ জন নিহত

fec-image

মিয়ানমারের ইয়াঙ্গুনের কুখ্যাত ইনসেইন কারাগারে বিস্ফোরণে অন্তত ৮ জন মারা গেছে। বুধবার (১৯ অক্টোবর) সকালে দুটো পার্সেল বোমা ওই কারাগারের প্রবেশপথে বিস্ফোরিত হয়। এতে কারাগারটির তিনজন কর্মকর্তা ও পাঁচজন দর্শনার্থী মারা যান। খবর বিবিসি বার্মিজ

ইনসেইন কারাগারটি দেশটির সবচেয়ে বড় কারাগার। এখানে প্রায় দশ হাজারের মতো বন্দী আছে। এদের অনেকেই মূলত রাজনৈতিক বন্দী।

কোনো গোষ্ঠীই এ হামলার ঘটনার দায় স্বীকার করেনি। এতে আরও অন্তত ১৮ জন আহত হয়েছে বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

কর্তৃপক্ষ বলছে, কারাগারটির পোস্ট রুমে একটি বোমা বিস্ফোরিত হয়। তবে আরেকটি বোমা বিস্ফোরিত হয়নি এবং সেটিকে একটি প্লাস্টিক ব্যাগে মোড়ানো অবস্থায় পাওয়া গেছে।

যে পাঁচজন দর্শনার্থী মারা গেছে, তারা সবাই নারী এবং কারাগারে থাকা বন্দীদের স্বজন।

এরমধ্যে একজন দেশটির ছাত্রনেতাদের একজন লিন টেট নেইং ওরফে জেমস-এর মা। তিনি আদালতে শুনানির দিনে তার ছেলের জন্য একটি বক্সে করে ভাত নিয়ে গিয়েছিলেন।

মিস্টার নেইংকে সামরিক জান্তা গত জুনে আটক করেছিলো।

তার শ্বশুর নে উইন জানিয়েছেন, তিনি মর্গে গিয়ে মিস্টার নেইংয়ের মায়ের মৃতদেহ দেখেছেন।

“আমার খুবই খারাপ লাগছে। তার স্বামী কিছুদিন আগেই মারা গেছেন। ছেলেকে কারাগারে গিয়ে খাবার ও অন্য দরকারি জিনিসপত্র দিতে একমাত্র তিনিই ছিলেন,” বলছিলেন তিনি।

প্রায় এক দশক আগে ছাত্রনেতা হিসেবে পরিচিতি অর্জন করা লিন টেট নেইং অনেকবারই গ্রেফতার হয়েছেন।

গত বছরের সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করায় তাকে আবার আটক করেছে জান্তা সরকার।

অং সান সুচির বেসামরিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে জান্তা ক্ষমতা দখল করেছিলো।

ইনসেইন কারাগারটি বেশ বড় ও কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা আছে সেখানে। এটি দেশটির সাবেক রাজধানীর শহরতলীতে অবস্থিত।

তবে শতবর্ষী পুরনো এই কারাগারটি মূলত কঠোর পরিস্থিতি ও বন্দীদের সাথে অমানবিক আচরণের জন্য কুখ্যাত বলে মানবাধিকার সংস্থাগুলো জানিয়েছে।

এদিকে সামরিক সরকার দেশের বড় অংশেই প্রতিরোধের মুখোমুখি হচ্ছে, বিশেষ করে যেখানে পিপলস ডিফেন্স ফোর্স বা পিডিএফের গেরিলারা সক্রিয়।

ইয়াঙ্গুনে প্রায়ই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে গত বছর অভ্যুত্থান বিরোধী গণবিক্ষোভ দমনের পর থেকেই ছোটো ছোটো বোমা বিস্ফোরণ দেখা যাচ্ছে।

এগুলোর লক্ষ্যবস্তু থাকে সাধারণত জান্তা সরকারকে সহায়তা করছে এমন ব্যক্তিরা, যেমন-সরকারি কর্মকর্তা, কথিত সোর্স ও সাম্প্রতিক কালে গ্রামগুলোতে বিমান হামলার সাথে জড়িত পাইলটরা।

এছাড়া গুলি করে হত্যাচেষ্টার ঘটনাও ঘটে দেশটিতে। পর্যবেক্ষকরা রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পাশাপাশি এসব ঘটনাকে গৃহযুদ্ধের লক্ষণ হিসেবে মনে করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন