parbattanews

মিয়ানমারে সহিংসতা, খাদ্যাভাব থেকে বাঁচতে নতুন করে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ঢুকছে বাংলাদেশে

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

ক্ষুধার্ত, নিঃস্ব, আতঙ্কিত কয়েক হাজার রোহিঙ্গা সোমবার (১৬ অক্টোবর) বাংলাদেশের সীমান্ত জেলা কক্সবাজারের পালংখালী এলাকা দিয়ে ঢুকেছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর দমন অভিযান শুরুর পর ৫৩ দিন পেরিয়ে গেলেও বাংলাদেশ সীমান্তে রোহিঙ্গাদের ঢল থামছে না। বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য দেয়।

নতুন আসা রোহিঙ্গারা জানিয়েছে, পশ্চিম রাখাইনের বাসিন্দারা এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে খাবারের অভাবে। বাজার বন্ধ; ত্রাণকর্মীদেরও সেখানে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি স্থানীয় বৌদ্ধরা রোহিঙ্গা মুসলমানদের গ্রামে হামলা করছে বলে তারা জানায়।

যাত্রাপথের কষ্ট আর দুর্দশা বর্ণনা করতে গিয়ে এক রোহিঙ্গা রয়টার্সকে জানান, টানা কয়েক দিন বুথিদাউং এলাকা থেকে হেটে পাহাড়, জঙ্গল আর বর্ষার পানি ঠেলে তাদের বাংলাদেশে পৌঁছাতে হয়েছে। নাফ নদীতে কোমর পানি পেরিয়ে যারা এসেছেন, তাদের অনেকেই আহত, অসুস্থ। একইভাবে পালংখালি গ্রাম থেকে বাংলাদেশে এসেছেন বহু রোহিঙ্গা। অসুস্থ ও বৃদ্ধদেরকে বাঁশের তৈরি স্ট্রেচারে করে বয়ে আনা হচ্ছে। নারীদের কারও কারও মাথায় পুটলিতে বাঁধা সামান্য চাল, থালা-বাটি বা কাপড়। পুরুষদের কেউ কেউ কাঁধে বাঁশের বাঁকে বইছেন শেষ সম্বলটুকু।

মোহাম্মদ শোয়েব নামের ২৯ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা যুবক রয়টার্সকে বলেন, “গত এক মাস ধরে আমরা ঘর থেকে বের হতে পারিনি। সেনাবাহিনী দেখা মাত্র গুলি এবং লুটপাট চালাচ্ছিল। ফলে আমরা আরো আগে রওনা হতে পারিনি। কিন্তু তারা গ্রামে এসে গুলি শুরু করায় পর আমরা পালিয়ে অন্য গ্রামে চলে যাই।

শোয়েব বলেন, রাখাইনের পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে নিজেদের গ্রামের এলাকায় গিয়েছিলেন শোয়েব। সেখানে গিয়ে দেখেছেন, পুরো গ্রাম পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ৫৩৬,০০০ রোহিঙ্গার সাথে যোগ হচ্ছে নতুন করে আসা লোকজন। রোহিঙ্গাদের কথিত একটি বিদ্রোহী সংগঠনের হামলার জের ধরে মিয়ানমারের সেনবাহিনী রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নির্মূল অভিযান শুরু করে। মিয়ানমার সরকার রাখাইনে তাদের সেনাবাহিনীর অভিযানকে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে লড়াই’ বললেও জাতিসংঘ একে চিহ্নিত করেছে ‘জাতিগত নির্মূল অভিযান’ হিসেবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন সোমবার জানিয়েছে, মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বেআইনি বল প্রয়োগের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং হ্লাইংয়ের ইউরোপ সফরের আমন্ত্রণ তারা স্থগিত করছে।

এছাড়া শুক্রবার মিয়ানমারকে দেয়া ২০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা স্থগিত করেছে বিশ্বব্যাংক।

 

সূত্র: south asian monitor

Exit mobile version