parbattanews

মিয়ানমারের ওপর চাপ দিন: সিপিসি সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা নির্যাতন বন্ধ করে তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করার জন্য কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর আইনপ্রণেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

রোববার ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি কনফারেন্সের (সিপিসি) উদ্বোধন ঘোষণা করে এ কথা বলেন সিপিএ-এর ভাইস প্যাট্রন ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সকালে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবার সম্মেলনের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘কনটিনিউয়িং টু এনহ্যান্স হাই স্ট্যান্ডার্ডস অব পারফরমেন্স অব পার্লামেন্টারিয়ানস।’

৫২টি দেশের ১৮০টি জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ সদস্যসহ প্রায় সাড়ে পাঁচশ প্রতিনিধি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম সংসদীয় ফোরাম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের এ সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।

কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারির ভাইস প্যাটার্ন শেখ হাসিনা বলেন, মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সাময়িকভাবে আমরা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা নাগরিকদের আশ্রয় দিয়েছি। আপনাদের অনুরোধ জানাবো, রোহিঙ্গা ইস্যুটি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করুন। মিয়ানমারকে তাদের নাগরিকদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করতে এবং বাংলাদেশে আসা সেদেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতে চাপ প্রয়োগ করুন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর অমানবিক নির্যাতন এবং তাদের জোরপূর্বক বিতাড়িত করে দেওয়া শুধু এ অঞ্চলে নয়, এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করেছে। সম্প্রতি মিয়ানমার সরকারের নির্যাতনমূলক আচরণের কারণে সেখান থেকে ৬ লাখ ২২ হাজারেরও বেশি অধিবাসী বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। ১৯৭৮ সাল থেকে বিভিন্ন সময়ে আরও প্রায় ৫ লাখ রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথ ধরে বাংলাদেশ এগিয়ে চলেছে জানিয়ে শেখ হাসিনা আরও বলেন, বাংলাদেশ এরইমধ্যে নিম্ন-মধ্য আয়ের দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। আমাদের প্রত্যাশা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২০২১ সালে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনপ্রতিনিধি হিসেবে আমাদের প্রথম ও প্রধান নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে গণতন্ত্র ও সংসদীয় গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও প্রতিষ্ঠানকে আরও শক্তিশালী করা এবং এসব রীতি-নীতি ও প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের পূর্ণ আস্থা তৈরি করা।

এর আগে শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছালে ঘণ্টা বাজিয়ে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের পর ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। এরপর ‘আলোকের এই ঝর্ণা ধারায় ধুইয়ে দাও’ এবং ‘আমার মুক্তির আলোয়’ গান দুটির সঙ্গে উদ্বোধনী নৃত্য পরিবেশন করেন নৃত্যাঞ্চলের শিল্পীরা।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সিপিএ-এর চেয়ারপারসন এবং বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। পরে তিনি এই ফোরামের প্যাট্রন ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর স্বাগত বক্তব্যের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন এবং সিপিএ’র কার্যক্রম নিয়ে দুটি তথ্যচিত্র দেখানো হয়।
Exit mobile version