মিয়ানমারের বিজিপির নামে টোকেন বাণিজ্য, নাফ নদীতে জাল ফেলছে ওরা কারা?

fec-image

নাফ নদীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও স্থানভেদে জাল ফেলে মাছ শিকার করছে বেশ কয়েকটি চক্র। নদীপারের সাধারণ জেলেরা নৌকা নিয়ে মাছ শিকার করতে না পারলেও কিছু কিছু নৌকা ও বিহিঙ্গি জাল নাফ নদীর কায়ুকখালী খালের মোহনা, জালিয়া পাড়ার ১ নং স্লুইসগেট, সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়া এলাকার নাফ নদীতে দেখা মিলছে প্রতিনিয়ত ছোট ছোট নৌকা ও বিহিঙ্গি জাল।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টেকনাফ পৌর এলাকার রুহুল আমিনের ছেলে ছৈয়দ আলম, আলী হোসেনের ছেলে এমদাদ হোসেন, শাহপরীর দ্বীপের জালিয়া পাড়ার ছৈয়দ আলম, আবুল কালামসহ বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট কৌশলে নাফ নদীতে নৌকা নামিয়ে জাল ফেলছে। তারা মাছ শিকারের চেয়ে মিয়ানমারের ওপারে গিয়ে মূলত মাদক ও মানব পাচার কাজ করছে এমন অভিযোগ করছে স্থানীয় অনেকে। শুধু তাই নয়, নাফ নদীতে যাতে প্রশাসনিক হয়রানির শিকার না হয় সে জন্য চালু করা হয়েছে টোকেন প্রথা। বাংলাদেশ সীমান্তে কোস্ট গার্ড, বিজিবি, নৌ পুলিশের এবং মিয়ানমার সীমান্তে গেলে মিয়ানমার বিজিপি “যাতে কোন ডিস্টার্ব না করে সে জন্য মাসিক টোকেন সরবরাহ করে থাকে এসব চক্র। এসব টোকেন পেতে প্রতি জাল- নৌকার জন্য ৯ থেকে ১২ হাজার টাকা গুনতে হয়।

অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্টের পর থেকে মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে লাখ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। এ সময় সেপ্টেম্বর মাসে বাংলাদেশ সরকার নাফ নদীতে মাছ শিকার বন্ধ করে দেয়। এরপর থেকে এ পর্যন্ত নাফ নদীতে নৌকা নামিয়ে জাল ফেলে মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে। এতে করে নদী পারের হাজারো জেলে পরিবার চরমভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। কিন্তু বেশ কিছু দিন থেকে বেশ কয়েকটি সিন্ডিকেট কৌশলে নাফ নদীতে নৌকা নামিয়ে জাল ফেলে মাছ শিকার চালু করেছে।

এখন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সর্বত্র এসব কীভাবে চলছে। তাদের অবৈধ কাজের লাগাম ধরবে কে? বাংলাদেশ কোস্টগার্ড টেকনাফে স্টেশন কমান্ডার লে. কমান্ডার আশিক আহমেদ (ট্যাজ) বিএন বলেন,”নাফ নদীতে সরকারি আদেশের বিরুদ্ধে কাউকে কিছু করতে দেওয়া হবে না। হয়তো দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে নাফ নদীসহ উপকূলে কিছু অসাধু চক্র অপতৎপরতা চালানোর চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কোস্ট গার্ড সজাগ রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, “পাঁচ বছর ধরে সাধারণ জেলেরা নাফ নদীতে মাছ শিকার করতে পারছেনা সরকারি আদেশের ফলে। যাতে অন্য কেউ সরকারি আদেশ ভঙ্গ না করে সে বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ বিভিন্ন অভিযান চালিয়ে যেতে হবে। “

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: জাল, টোকেন বাণিজ্য, নাফ নদী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন