parbattanews

মিয়ানমারে সংঘাত: সীমান্তে আবারো গোলাগুলির শব্দ

কক্সবাজার জেলার উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের রহমতের বিল সীমান্তের ওপার থেকে আবারো ভেসে আসছে গোলাগুলির শব্দ।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যে এই গোলাগুলি শব্দ শুনতে পান স্থানীয়রা।

এসময় কয়েকটি মর্টার শেলের আওয়াজও ভেসে এসেছে। এতে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দেয় এ সীমান্তের বাসিন্দাদের মধ্যে। তবে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু-ঘুমধুম সীমান্ত ছিল শান্ত।

শুক্রবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপির) সংঘর্ষ শুরু হয়।

এর পর থেকেই অশান্ত হয়েছে উঠে সীমান্তবর্তী অঞ্চল। মিয়ানমারের সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি মধ্যে সংর্ঘষের ঘটনায় দেশটিতে অভ্যন্তরণী উত্তেজনা বেড়েই চলে। এদিকে চলমান সংঘর্ষে জীবন বাঁচাতে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশসহ অন্যান্য বাহিনীর ৩২৮ সদস্য এ পর্যন্ত বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীসহ দেশটির সেনা সদস্য, ইমিগ্রেশন সদস্য, পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থার সদস্য রয়েছে। এদের মধ্যে লে. কর্নেল পদমর্যাদার অফিসারসহ ১০ জন অফিসার রয়েছে বলেও জানা গেছে।

বিজিবি বলছে, যারা অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে নিরাপদ আশ্রয়ে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া আহতদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে দেশটিতে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের জেরে গত কয়েকদিন বাংলাদেশের ঘুমধুম, তুমব্রু ও উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত দিয়ে বিরতীহীনভাবে ভেসে আছে বিস্ফোরণের শব্দ। ৫ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল বিস্ফোরণে ঘুমধুম ইউনিয়নের জলপাইতলী এলাকায় এক নারীসহ দুইজন নিহত হন। এসময় আহত হয় এক শিশু।

পরের দিন ৬ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে ঘুমধুম ইউনিয়নের পশ্চিমকুল পাহাড়পাড়া এলাকায় এক যুবক আহত হন। একই দিন উখিয়ার পালংখালী ও থাইংখালীর এলাকায় আরো চার গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় সীমান্তজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। বাড়ি-ঘর ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয়ে চলে যান সীমান্তবর্তী তিন গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার মানুষ। খোলা হয় দুটি আশ্রয়কেন্দ্রে। ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে ঘুমধুমের উত্তর ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আশ্রয় নেন সীমান্তবর্তী পশ্চিমকুল, কোনারপাড়া, মধ্যমপাড়া, ভাজাবনিয়া, তুমব্রু বাজার এলাকার ২৮ পরিবারের প্রায় ১৪০ জন।

তবে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলে পরের দিন বিকেলে অনেককে বসতবাড়িতে ফিরে আসে। বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ।

এদিকে চলামান সংঘাতে মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি শহর নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াইরত বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। ইতিমধ্যে বিজিপিকে হটিয়ে তুমব্রু রাইট ক্যাম্প ও ঢেঁকিবনিয়া সীমান্তচৌকি আরাকান আর্মি দখলে নিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। সীমান্তে উত্তপ্ত এ পরিস্থিতেতে সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবিকে ধৈর্য ধারণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠোকাতে সীমান্তে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলেও জানিয়েছে বিজিবি।

Exit mobile version