মিয়ানমারের সামরিক মালিকানাধীন বন্দর ব্যবহার বন্ধ করছে শিপিং জায়ান্ট

fec-image

বিশ্বের বৃহত্তমর শিপিং কোম্পানি মায়েরস্ক চলতি মাসেই মিয়ানমারের সামরিক-মালিকানাধীন বন্দরগুলোর সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করবে। রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগের প্রেক্ষাপটে প্রতিষ্ঠানটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ড্যানিশ শিপিং কোম্পানিটি জানায়, তারা ২০১৩ সালে আন্তর্জাতিক অবরোধ প্রত্যাহারের পর থেকে যেভাবে চলছিল, সেভাবে মিয়ানমারের সাথে ব্যবসা পরিচালনা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বৃহস্পতিবার মায়েরস্ক জানায়, টিএমটি বন্দরগুলোতে শেষ যাত্রা হবে ১৪ ও ১৫ অক্টোবর। এই যাত্রার পর তাদের সার্ভিস স্থায়ীভাবে মিয়ানমারের শিল্প বন্দর টার্মিনালে স্থানান্তির হবে।

২০১৭ সালের আগস্টে দমন অভিযানের পর সাত লাখ ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে চলে গেছে। জাতিসঙ্ঘ এই অভিযানকে জাতি নির্মূলের বাস্তব উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছে।

মিয়ানমার সেনাবাহিনী এই অভিযোগ অস্বীকার করে জোর দিয়ে বলছে যে রাখাইন রাজ্যে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির সমন্বিত হামলার প্রতিক্রিয়ায় তারা এসব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল।

বার্মা ক্যাম্পেইন ইউকে মে মাসে জানায়, সামরিক বাহিনীর মালিকানাধীন ইয়াঙ্গুনের টিএমটি বন্দর ব্যবহার করায় মায়েরস্ককে তারা তাদের ‘নোংরা তালিকায়’ রেখেছে।

টিএমটি বন্দর মিয়ানমার ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেড (এমইএইচএল) নামের সামরিক-ব্যবসায়িক গ্রুপের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ইয়াঙ্গুনে সামরিক বাহিনী তিনটি বাণিজ্যিক বন্দরের মালিক। এগুলো হচ্ছে টিএমটি পোর্টস, হতিদান পোর্ট টার্মিনাল ও আহলোন ইন্টারন্যাশনাল পোর্ট।

জুলাই মাসে পোর্টিয়া জানায়, অধিকার গ্রুপগুলোর চাপের কারণে ২০২১ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তারা টিএমটি বন্দর ব্যবস্থাপনার চুক্তি নবায়ন করবে না।

বিসিইউকের পরিচালক মার্ক ফারমানার বলেন, মায়েরস্কের সামরিক মালিকানাধীন বন্দর ব্যবহার না করার সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এর ফলে অন্যান্য শিপিং কোম্পানিও একই কাজ করতে পারে।

বিসিইউকে জানিয়েছে, তারা তাদের নোংরা তালিকায় গ্রিস, ইস্টার্ন মেডেটেরিয়ান মেরিটাইম, ক্যাপিটাল ম্যানেজম্যান্ট কোরপোরেশন ও ইউরোবাল্কের আরো তিনটি কোম্পানিকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।

জার্মান কোম্পানি ইন্টারস্ক্যান শিফার্ট, এমপিসি ক্যাপিটাল ও হ্যারেনও এই তালিকায় আছে। তাইওয়ানের এভারগ্রিন, ভিয়েতনামের এফজিএএস পেট্রোল, পানামার ফিন্যান্সিয়াল ভেনচার, হংকংয়ের ইন্টারএশিয়া সিঙ্গাপুরের নর্সো গ্রুপও তালিকাটিতে রয়েছে।

মিয়ানমার সামরিক বাহিনী এমইএইচএল ও এমইসি নামের দুটি গ্রুপের মাধ্যমে বিপুলসংখ্যক ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সাথে জড়িত রয়েছে।

সূত্র: দি ইরাবতী

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: মিয়ানমার, রোহিঙ্গা, শিপিং কোম্পানি মায়েরস্ক
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন