parbattanews

মিয়ানমারে অভ্যুত্থানবিরোধীরা ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে

গত এক সপ্তাহ আগে উত্তরের শান রাজ্যে সামরিক আক্রমণ চালিয়েছে মিয়ানমারের সশস্ত্র জোট। এছাড়া চীনের সঙ্গে দেশটির পূর্ব সীমান্তে থাকা সামরিক ঘাঁটিতেও হামলা চালানো হয়েছে।

এ হামলা দেশটিতে চলমান অভ্যুত্থানবিরোধী প্রতিরোধকে শক্তি জোগাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর আল জাজিরা।

থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সংগঠকরা এক বিবৃতিতে জানান, অপারেশন ১০২৭ কোডনেমে এ হামলা পরিচালনা করা হচ্ছে। জান্তাবিরোধী প্রতিবাদ জোরদার, একনায়কত্ব নির্মূল ও সীমান্তে অনলাইন জালিয়াতির বিরুদ্ধে লড়াই করা এর মূল উদ্দেশ্য।

মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তাআং ন্যাশনাল লিবারেল আর্মি (টিএনএলএ) ও আরাকান আর্মিকে নিয়ে এ জোট গঠিত। এটি সাতটি জাতিগত সশস্ত্র সংগঠনের একটি জোটের অংশ। জোটটি চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে এবং নিজস্ব ঘাঁটি রয়েছে। এ অপারেশন পরিচালনার একটি লক্ষ্য হচ্ছে সাইবার প্রতারণা প্রতিরোধ করা।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থান হলে দেশটির পূর্ব সীমান্তের সামরিক অঞ্চলগুলোয় এ ব্যবসার বিস্তার ঘটে। প্রতারণার মাধ্যমে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে কাজ করা চীনা হ্যাকাররা কোটি ডলার আয় করে।

গত আগস্টে প্রকাশিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, অনলাইনে প্রতারিত হয়ে মিয়ানমারের ১ লাখ ২০ হাজার মানুষ পাচারকারীদের খপ্পড়ে পড়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের অধিবাসীদের সঙ্গে প্রতারণা করতে বাধ্য করা হয়। এছাড়া তাদের ওপর শারীরিক নির্যাতন ও যৌন সহিংসতা চালানো হয়।

স্বাধীন সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি-মিয়ানমার গত মাসে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, চক্রটি চীনা নাগরিকদের ফাঁদে ফেলে পাচার ও প্রতারণার শিকার বানিয়েছে।

এমন দমন-পীড়নের কারণে গত এক বছরে মিয়ানমার সামরিক বাহিনীর ওপর চাপ বাড়িয়েছে চীন সরকার। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় চীন আন্তঃসীমান্তে সিরিজ অপারেশন চালিয়েছে। এতে সাড়ে চার হাজারের বেশি লোককে গ্রেফতার ও প্রত্যাবাসনে বাধ্য করা হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এটি মিয়ানমারের অভ্যুত্থানবিরোধী আন্দোলনকেও নতুন শক্তি দিতে পারে, যেটি ‘মিয়ানমার ‌বিপ্লব’ নামে পরিচিত। যাদের লক্ষ্য সামরিক শাসনকে অপসারণ এবং একটি ফেডারেল গণতান্ত্রিক ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করা।

অপারেশন থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সকে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দেয়। এতে জনসাধারণের প্রত্যাশাও বাড়ছে। তারা মনে করছে, অপারেশনটি সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করার জন্য যথেষ্ট গতি সৃষ্টি করবে।

সম্প্রতি প্রকাশিত এক বিবৃতি অনুসারে, জোটটি এখন পর্যন্ত ৮০টিরও বেশি সামরিক ঘাঁটি এবং চিন শোয়ে হাও সীমান্ত পোস্ট দখলে নিয়েছে। একই সময় জান্তা সরকারের শতাধিক সেনা আত্মসমর্পণ করেছে প্রতিরোধ বাহিনীর কাছে।

এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা গেছে, জোটটির সদস্যরা সেনাবাহিনীর কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ সামরিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ জব্দ করেছে ।

Exit mobile version