parbattanews

মিয়ানমারে কত বিনিয়োগ চীন-ভারতের

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:
প্রতিবেশী মিয়ানমারে প্রভাব বাড়াতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছে চীন। বসে নেই ভারতও। তারাও দীর্ঘদিন সেনাশাসিত দেশটিতে বিনিয়োগ নিয়ে এগিয়ে এসেছে। তবে চীনের বিপুল বিনিয়োগের তুলনায় ভারত এখনও শিশু।
ইয়াঙ্গুনে ভারতের রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিস্ত্রি দাবি করেন, ভারতের বিনিয়োগ বা অনুদানের পেছনে কোনো ব্যবসায়িক স্বার্থ নেই। তিনি বলেন, শুধু মিয়ানমার সরকারের পাশে দাঁড়াতেই নয়াদিল্লি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা ঢালছে। রাস্তা, সেতুসহ নানা অবকাঠামো প্রকল্প নির্মাণ করে সরাসরি মিয়ানমারের হাতে তুলে দেয়া হবে।
‘ভারত-মিয়ানমার সম্পর্কের আগামী দিন’- শীর্ষক এক সম্মেলনে শনিবার তিনি এ মন্তব্য করেন বলে জানায় আনন্দবাজার পত্রিকা। এরপর চীনকে লক্ষ্য করে ভারতের রাষ্ট্রদূতের হুশিয়ারি, ‘যারা শুধু ব্যবসায়িক স্বার্থে মিয়ানমারে লগ্নি করছে, তাদের উদ্দেশ্য নিয়েই ভাবা উচিত।’
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, মিয়ানমারে বিনিয়োগের পেছনে চীন ও ভারত উভয়ই ব্যবসায়িক স্বার্থের পাশাপাশি ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থকেও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়ে থাকে। মিয়ানমারে চীনের একাধিপত্য রয়েছে।
আর দক্ষিণ এশিয়ায় প্রভাব বাড়াতে সচেষ্ট ভারতও চাচ্ছে দেশটি যেন চীনের একক প্রভাববলয়ে অবস্থান না করে।
মিয়ানমারে ব্যাংকিং, কৃষিপণ্যের ব্যবসা, যোগাযোগ ব্যবস্থা, প্রতিরক্ষাসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই চীনাদের প্রতিপত্তি। ভারত যেখানে মিয়ানমারে ১২ হাজার কোটির বিনিয়োগ করেছে, সেখানে শুধু বেসরকারি ক্ষেত্রে চীনের লগ্নি প্রায় ১ লাখ হাজার কোটি রুপি। সঙ্গে সরকারি ক্ষেত্রেও তাদের কিছু বিনিয়োগ রয়েছে।
বাণিজ্য সম্ভাবনা নিয়ে এদিনের আলোচনায় ভারতীয় আইনি উপদেষ্টা নিশান্ত চৌধুরী বলেন, ‘আমরা অনেক পিছিয়ে। সরকারি স্তরেই যেটুকু কাজ হচ্ছে, বেসরকারি লগ্নিকারীরা মোটেই আসছেন না। ফলে মিয়ানমারের বাজার চীনের দখলে।’
ভারতের বেসরকারি সংস্থার বিনিয়োগের ক্ষেত্র যে মোটেই আশাব্যঞ্জক নয়, তা স্পষ্ট। ইউবিআই, এসবিআই এবং এক্সিম- মিয়ানমারে মাত্র তিনটি ভারতীয় ব্যাংকের অফিস রয়েছে। বীমা ক্ষেত্রেও একমাত্র নিউ ইন্ডিয়া ইনসিওরেন্স।
ভারতের ব্যবসায়ীরা মূলত কাঠ, প্লাইউড এবং ডাল শস্যের কারবার করে থাকেন। কিন্তু সরকার জঙ্গল কাটায় নিষেধাজ্ঞা জারি করায় কাঠের ব্যবসা অনিশ্চিত। তবুও কলকাতার কয়েকটি প্লাইউড সংস্থা এখানে ছোট কারখানা করেছে।
ভারত ডালের আমদানিতে নিয়ন্ত্রণ আনায় এখন সেই ব্যবসাও তলানিতে। তবে এখনও একচেটিয়া কারবার ভারতের ওষুধ সংস্থাগুলোর। বাড়ছে ইলিশ রফতানি।
ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের ব্যাখ্যা, ‘ভারতের সংস্থা এ দেশে উৎসাহ নিয়েই আসছে। কিন্তু মিয়ানমারে এখনও সেই পরিবেশ তৈরি হয়নি।’
যদিও চীন, জাপান, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়ার ক্ষেত্রে এই যুক্তি কেন খাটে না, সেই প্রশ্নও উঠেছে। চীন ও জাপান যে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিপুল টাকা ঢেলেছে, সে কথাও ওঠে আলোচনায়।
সূত্র: যুগান্তর
Exit mobile version