parbattanews

মিয়ানমারে তুমুল লড়াই, রোহিঙ্গারা হতাহত

গতকাল শুক্রবার মিয়ানমারে সামরিক জান্তার সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির চলমান সংঘর্ষ ব্যাপক রুপ ধারণ করেছে।

ওইদিন বিকেলে রাখাইনের রামরি শহরে বোমারু বিমান নিয়ে আরাকান আর্মির ওপর হামলা চালায় তাতমাদো নামে পরিচিত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

এ ছাড়া গতকাল ভোর থেকে রাখাইনের বুচিডং ও ফুমালিতে রোহিঙ্গা–অধ্যুষিত এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ হয়। মিয়ানমার থেকে কূটনৈতিক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

সূত্র আরো জানায়, রাখাইনের বুচিডং ও ফুমালিতে রোহিঙ্গা-অধ্যুষিত এলাকায় তাতমাদোর সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াইয়ে বেশ কয়েকজনের হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। তবে এর সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। দুই পক্ষের তুমুল লড়াইয়ের সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ঘাঁটি থেকে গোলা ছুড়ে মারা হলে হতাহতের ঘটনা ঘটে।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিয়ানমারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনোয়ার হোসেন গতকাল বিকেলে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘মিয়ানমারের রাখাইনে কয়েক দিন ধরে দেশটির সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির সংঘর্ষের কথা আমরা নানাভাবে জেনেছি। তবে এ বিষয়ে আমাদের কাছে বিস্তারিত কোনো তথ্য নেই।’

এদিকে গত বছরের নভেম্বরে আরাকান আর্মির সঙ্গে তাতমাদোর লড়াইয়ের পর থেকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের উল্লেখযোগ্যসংখ্যক সীমান্ত ফাঁড়ি সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দখলে রয়েছে। দুই দেশের সীমান্ত ফাঁড়ির বেশ কটিই মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষীরা খালি রেখে চলে গেছে। দুই দেশের সীমান্ত ২৭১ কিলোমিটারের। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, এই সীমান্তে যেসব সীমান্ত পিলার রয়েছে, এর অনেকগুলো আরাকান আর্মির দখলে। বিশেষ করে কালাদান নদীর পশ্চিম পারের সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ করে আরাকান আর্মি

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সরকারি সূত্রে জানা গেছে, কালাদান নদীর পূর্ব পারে পালেতোয়া জেলা মিয়ানমারের সামরিক জান্তার হাতছাড়া হয়ে গেছে। বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী ওই এলাকায় কিছু জায়গা দিয়ে মানুষের চলাচল রয়েছে। সেখানে নিরাপত্তার শূন্যতা তৈরি হলে তার প্রভাব ব্যাপক হতে পারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নিরাপত্তা বিশ্লেষক গণমাধ্যমকে বলেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির লড়াইয়ে ‘হট পারস্যুটে’র ঘটনা ঘটতে পারে। এর মানে হলো আক্রমণের হাত থেকে বাঁচতে এক পক্ষের অস্ত্র হাতে পাশের দেশের ভূখণ্ডে ঢুকে পড়া। অতীতে মিয়ানমার সেনারা থাইল্যান্ডে এবং সম্প্রতি মিজোরামে ঢুকে পড়েছিল। গত সপ্তাহে মিয়ানমার সেনাবাহিনী মিজোরামে ঢুকে পড়া সৈন্যদের হেলিকপ্টারে করে ইয়াঙ্গুনে ফিরিয়ে এনেছে।

২০২২ সালের অক্টোবরে আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘর্ষের সময় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ছোড়া গোলা পড়েছিল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে।

থাইল্যান্ডে নির্বাসিত মিয়ানমারের নাগরিকদের পরিচালিত সংবাদমাধ্যম ইরাবতী জানিয়েছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী দ্য ইউনাইটেড ওয়া স্টেট পার্টি (ইউডব্লিউএসপি) শান রাজ্যের হোপাং শহরে চলতি মাসের শুরুর দিকে নিজস্ব প্রশাসনিক ব্যবস্থা চালু করেছে। এই রাজ্যে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি জান্তা বাহিনীর কাছ থেকে দুটি শহর দখল করে নিয়েছে বলেও জানায় সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।

Exit mobile version