parbattanews

মিয়ানমারে ফিরে যেতে রোহিঙ্গাদের “গো ব্যাক হোম’ ক্যাম্পেইন: ৭ দফা দাবি

???? ????? ?????? ?????????? ??????????? ???????

“গো ব্যাক হোম’ শিরোনামে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ক্যাম্পেইন পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে টেকনাফসহ বিভিন্ন ক্যাম্পে মানববন্ধন, মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

রবিবার (১৯ জুন) সকালে টেকনাফের শালবাগানে এই গণ জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়।

এ ছাড়া সকাল ৮ টা থেকে সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত উখিয়াস্থ ১৫টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১১টি ভেন্যুতে ক্যাম্পেইন পরিচালিত হয়। উক্ত ক্যাম্পেইনে সবগুলো ক্যাম্পে প্রায় ১০ হাজার জন রোহিঙ্গা অংশগ্রহণ করে। এতে রোহিঙ্গারা ৭ দফা দাবিও উত্থাপন করেন।

ক্যাম্পেইনে অংশগ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের প্রতিনিধি বদরুল ইসলাম, আবুল কালাম, ডাক্তার জোবায়ের, নুরুল আমিন বক্তব্যে বলেন, ” মিয়ানমার আমাদের মাতৃভূমি সত্ত্বেও আমরা যুগ যুগ ধরে মিয়ানমার সরকার দ্বারা অত্যাচারের সম্মুখীন হচ্ছি। ১৯৭৮ সাল থেকে আমরা নিয়মিত নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যাসহ আমাদের গ্রাম ও ঘরগুলি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৭৮, ১৯৯২, ২০১২, ২০১৬, ২০১৭ সালে মিয়ানমার সরকার আমাদের উপর একই ধরনের অত্যাচার নিপীড়ন পরিচালনা করে। মিয়ানমার সরকার আমাদের নিজ দেশ হতে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশে বিতাড়িত করে। সর্বশেষ ২০১৭ সালে তাদের গণহত্যার মুখে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা নিজ দেশ মিয়ানমার হতে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়।

আমাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। “

আমাদের খাদ্য, আশ্রয় এবং অন্যান্য সমর্থন প্রদানের জন্য জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তারা আরো বলেন, ” কিন্তু, বাংলাদেশ আমাদের জন্মভূমি নয়। আমরা আমাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই। ২০১৭-২০১৮ এর মধ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সহায়তায় বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের বিভিন্ন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কিন্তু, বাংলাদেশ থেকে আমাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য কোন দৃশ্যমান এবং কার্যকর অগ্রগতি হয়নি। ২০১৭ থেকে ২০২২ পাঁচ বছর পার হয়ে গেছে। আমরা কত দিন গৃহহীন থাকব? আমরা আর গৃহহীন থাকতে চাই না। আমরা আমাদের এবং আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের ভবিষ্যতের বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন! আমরা মিয়ানমারের আমাদের মাতৃভূমি আরাকানে ফিরে যেতে চাই এবং সঠিক অধিকারের সাথে নাগরিক হিসাবে সেখানে থাকতে চাই। “

এ ছাড়া আন্তরিকভাবে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের ও সম্প্রদায়গুলিকে এগিয়ে আসার জন্য এবং মিয়ানমারে যাতে করে পূর্ণ অধিকারসহ দ্রুত ফিরে যেতে পারে সে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি অনুরোধ জানান ক্যাম্পেইনে অংশ নেওয়া রোহিঙ্গারা।

দেশে ফিরতে রোহিঙ্গাদের ৭ দফা :
প্রত্যাবাসন বিষয়ে রোহিঙ্গারা ৭ টি দাবির কথা উল্লেখ করেন সমাবেশে, তা হলো,
(১) অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন শুরু
(২) ১৯৮২ সালের নাগরিকত্ব আইন বাতিল
(৩) অবিলম্বে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের নিজ গ্রামে পুনর্বাসন
(৪) মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের অধিকার, নিরাপত্তা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা
(৫) নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা
(৬) রাখাইন রাজ্যে আইডিপি ক্যাম্প বন্ধ করা এবং রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে তাদের গ্রামে পুনর্বাসন করা
(৭) এবং মিয়ানমারে নিরীহ মানুষের ওপর নির্যাতন বন্ধ করা।

ক্যাম্পেইন চলাকালীন এপিবিএন সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও ক্যাম্পেইন ভেন্যু সমূহ পরিদর্শন করেন বলে জানান টেকনাফ ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) তারিকুল ইসলাম তারিক ও উখিয়া ১৪ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) নাইমুল হক।

কর্মসূচিতে নেয় নি পুরাতন রোহিঙ্গারা!
“গো ব্যাক হোম ‘ কর্মসূচি পালন করেনি পুরাতন ক্যাম্পের রোহিঙ্গারা। টেকনাফের নোয়াপাড়া ও উখিয়ার কুতুপালং নিবন্ধিত ক্যাম্প দুটিতে ১৯৯১-৯২ সাল থেকে অবস্থান করছে প্রায় ৩৫ হাজার রোহিঙ্গা। তারা নিজেদের নিবন্ধিত শরনার্থী হিসেবে মনে করে।
এসব রোহিঙ্গারা ২০১৬ ও ২০১৭ সালে বাংলাদেশে আসা রোহিঙ্গাদের একি ধরনের মর্যাদায় বিশ্বাসী নয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নোয়াপাড়া নিবন্ধিত ক্যাম্পের বাসিন্দা জানান, নতুন রোহিঙ্গারা যদি বাংলাদেশে না আসতো এতদিনে আমাদের একটা সুরাহা হতো। হয়তো বাংলাদেশ নাগরিকত্ব বা তৃতীয় দেশে নিয়ে যাওয়া হতো। এ ছাড়া অপর এক রোহিঙ্গা জানান, ১৯৯১-৯২ সালে বাংলাদেশে রয়ে যাওয়া রোহিঙ্গারা বাংলা ও ইংরেজি ভাষাভাষি। এরা বার্মিজ ভাষা জানেন না। যার কারণে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী নন এরা। যার ফলে “গো ব্যাক হোম’ কর্মসূচি পালন বিষয়ে এদের অংশ গ্রহণ ছিল না।

Exit mobile version