parbattanews

মুকুলে ভরে গেছে পানছড়ির আম্রকানন

Mango Pic

স্টাফ রিপোর্টার:

‘আাম্র মুকলের মৌ মৌ ঘ্রান, আকুল করে প্রাণ’ কবির এই অনুভুতির ছোঁয়াকে শতভাগ রূপ দিয়ে খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার প্রতিটি আাম্রকাননে এখন মুকুলের মৌ মৌ গন্ধ। সেই গন্ধে এই মুকুল থেকে ঐ মুকুলে ছুটছে মৌমাছির দল। এ আাম্র মুকুল ঝুলে থাকার উপভোগ্য দৃশ্য নজরে পড়ে উপজেলার ছোট থেকে বড় বড় প্রতিটি গাছে। মাত্র ৩/৪ থেকে বছর বয়সী গাছগুলিও মুকুলের ভারে নুইয়ে পড়ার নয়নাভিরাম চিত্র একবার দেখলে মনে দাগ কাটবে অনেকদিন।

গেল বছর উপজেলায় আমের বাম্পার ফলন হলেও এত মুকুল নজরে আসেনি। তাই বিভিন্ন চায়ের দোকান থেকে শুরু করে পাড়া-পল্লীতে ইউপি নির্বাচনী আলাপচারিতার পাশা-পাশি চলছে আাম্র মুকুল নিয়ে যত কথা। প্রবীন মুরব্বীরা কেউ কেউ বলছেন আম চাষীদের ভাগ্যের দুয়ার এবার খুলে গেছে আবার অনেকে মনে করছেন, বড় ধরণের প্রাকৃতিক দূর্যোগের এটি পূর্ব লক্ষণ এটি। আবার কেউ বলছেন, হাজার হাজার গাছের আাম্রমুকুল পানছড়িকে দৃষ্টিনন্দন করে তুলেছে।

পানছড়ির কালানাল ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নয়ন্টু চাকমা জানান, ইতিমধ্যে গাছে ৮০ শতাংশ মুকুল বের হয়েছে এখনও সময় আছে আগামী ৮/১০ দিনে হয়তো এ পরিসংখ্যান ৯০ শতাংশে গিয়ে পৌঁছাবে।

লতিবান ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা অরুণাংকর চাকম জানান, এই ব্লকে ছোট-খাট অনেক বাগান রয়েছে। এসব বাগানে গতবারের তুলনায় অনেক বেশি মুকুল এসেছে। গতবারে হেক্টর প্রতি আমের ফলন হয়েছিল ৬.৫ মেট্টিক টন। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে রয়েছে। যদি আবহাওয়া এভাবে অনুকূলে থাকে তাহলে ফলন হেক্টর প্রতি ৭.৫ মেট্টিক টন পর্যন্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

উগলছড়ির উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দিবস চাকমা জানান, মুকুলের ভারে গাছ নুইয়ে পড়েছে গতবারের তুলনায় অনেক বেশি। তাছাড়া নিজ ব্লকের আম্রকাননে পিকনিক করতে গিয়ে খুটি-নাটি সব দেখেছেন। এবারও তিনি বাম্পার ফলনের আশাবাদি।

কংচাইরী পাড়া এলাকার সফল কৃষক মংশী মারমা জানান, আম্রপালি, মল্লিকা, গোপাল ভোগ, রাঙ্গোয়াই জাতের আম দিয়েই সাজিয়েছে আাম্রকানন। বর্তমানে বাগানের সহস্রাধিক গাছে শোভা পাচ্ছে আাম্র মুকুল। তবে কিছু কিছু গাছে মুকুল আসে দেরিতে। বিশেষ করে রাঙ্গোয়াই জাতের আম। গত বছর সাড়ে তিন লক্ষ টাকার আম বিক্রি করেছেন এবং এবারের আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আরো বেশি হবে বলে তিনি ধারণা করছেন।

পানছড়ি উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আলাউদ্দিন শেখ জানান, পাক্ষিক ভ্রমণসূচীর আওতায় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা সব সময় বাগানের তদারকী করছে এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শও প্রদান করছেন। পরিবেশ, অনুকূল আবহাওয়া ও ঝড়-বৃষ্টিতে মুকুল ক্ষতিগ্রস্থ না হলে আমের বাম্পার ফলন হয়ে গতবারের চেয়েও বেশি আম নিজ জেলার চাহিদা মিটিয়ে সারা দেশে ছড়িয়ে যাবার আশা করছেন।

Exit mobile version