parbattanews

মুক্তিপণ দিয়ে মিয়ানমার থেকে ফেরত এলো ৭ বাংলাদেশী জেলে

মুক্তিপণ

টেকনাফ প্রতিনিধি:

মুক্তিপণের টাকা দিয়ে মিয়ানমার থেকে ফেরত এলো সাত বাংলাদেশী জেলে। সোমবার সকালে মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) সদস্যদেরকে ৪০ হাজার টাকা দিয়ে তিন নৌকাসহ পাচঁ জেলে বাংলাদেশের টেকনাফে ফিরে আসে ।

ফেরত আসা বাংলাদেশীরা হল মো. আলমগীর, মো. হোসেন , আবদুল আমিন , মো. আবদুল্লাহ ও মো. ইউনুছ। এরা সবাই টেকনাফের বাসীন্দা। এর আগে শনিবার রাত ৯ টার দিকে মুক্তিপণের ৪০ হাজার টাকা চেয়ে একটি নৌকাতে জেলে মো. আকবর ও শাহিদ উদ্দিনকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।

স্থানীয় জেলেদের ভাষ্য মতে, রোববার সকালে টেকনাফ পৌরসভার দক্ষিন জালিয়া পাড়ার মো. হোসেন, ছৈয়দ আকব ও জাফর আলমের তিনটি নৌকা নাফ নদীতে মাছ শিকারের সময় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছয় জেলে ও রাতে রমজান আলীর একটি নৌকাসহ জেলে মো. ইউনুছসহ মোট সাত জেলেকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমার পুলিশ। তারা আটককৃতদের মুক্ত করতে ৪০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।

এ ব্যপারে ৪২ ব্যাটালিয়ন বিজিবির টেকনাফ বিওপির কর্মকর্তা হাবিলদার মো. শামসুল আলম জানান, রবিবার সকালে নাফ নদীতে মাছ শিকার অবস্থায় তিনটি নৌকাসহ ছয় জেলেকে ধরে নিয়ে যায় মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপির) সদস্যরা। পরে রাত ১০ টার দিকে নৌকাসহ ইউনুছ নামে আরো এক জেলেকে ধরে নিয়ে যায়। একইদিন রাত সাড়ে ১০ টার দিকে মুক্তিপণের টাকার খবর দিয়ে একটি নৌকাসহ দু’জেলেকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয় তারা। তিনি আরো জানান, সোমবার সকাল ১২ টার দিকে তিন নৌকাসহ পাচঁ জেলেকে ফেরত দেয় মিয়ানমার পুলিশ। সুস্থভাবে সবার ফিরে আসার কথা বলে মুক্তিপণের বিষয়ে তিনি কোন কিছু জানেন না বলে এ প্রতিনিধিকে জানান ।

নৌকার মালিক মো. জাফর আলম ও রমজান আলী জানান, রোববার নাফ নদী থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া জেলেদের মধ্যে রাত ৯ টার দিকে মুক্তিপণের ৪০ হাজার টাকা চেয়ে একটি নৌকা করে জেলে মো. আকবর ও শাহিদ উদ্দিনকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়। মুক্তিপণ না দিলে আটক জেলেসহ নৌকাগুলো ফেরত না দেওয়ার হুমকি দেয় বিজিপি।

তারা আরো জানান, বিজিপির হাতে আটক জেলেসহ নৌকাগুলো ফেরত আনতে একটি নৌকায় করে আমরা চার জন মালিক মিয়ানমার মংডু খায়ুংখালী খালে যায়। এর পর বিজিপির এক দালালের হাতে ৪০ হাজার টাকা বুঝিয়ে দিলে তিন নৌকাসহ পাচঁ জেলেকে ফেরত দেয়। নৌকাসহ জেলেদের নিয়ে ১২ টার দিকে পৌরসভার চৌধুর পাড়ার নাফনদী বেড়ি বাঁধে এসে পৌছাই। এর পর আটককৃতদের গ্রামে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

ফেরত আসা জেলে মো. আলমগীর ও আবদুল্লাহ জানান, ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকায় ১৫দিন ধরে সাগরে নামেননি। নিষেধাজ্ঞার সময় শেষে রবিবার একটি নৌকা নিয়ে নাফ নদীতে মাছ শিকারে যাই। এ সময় মিয়ানমার থেকে একটি ট্রলারে করে ১০/১২ জনের সশস্ত্র দল তাদের দিকে তেড়ে আসলে তারা পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু মিয়ানমার দল ধাওয়া করে তাদের আটক করে। এ সময় কাছাকাছি মাছ শিকার অবস্থায় দুই নৌকাসহ আরো পাচঁ জেলেকে ধরে নিয়ে মিয়ানমার মংডু খালে রাখা হয়। সেখানে সবাইকে বেদম মারধর করে মুক্তিপণের টাকা চেয়ে একটি নৌকা করে দুই জেলেকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়।

এ ব্যাপারে টেকনাফ ৪২ ব্যটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আবুজার আল জাহিদ জানান, নাফ নদীতে ধরে নিয়ে যাওয়া নৌকাসহ সব জেলে ফেরত এসেছে এবং বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করে নদীতে মাছ শিকারে না যাওয়ার জন্য সবাইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Exit mobile version