parbattanews

মুক্তিপণ না পেয়ে খুন, ২৫ দিন পর লামা থেকে লাশ উদ্ধার

কুমিল্লা থেকে বান্দরবানের লামা উপজেলায় এনে জিম্মি করে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি, টাকা না পেয়ে এক হাফেজকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে হত্যার ঘটনা লুকাতে মাটি চাপা দেয়া হয় লাশ, ২৫ দিন পর মাটির নিচ থেকে নিহত হাফেজ মো. অলি উল্লাহ স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করে লামা থানা পুলিশ।

নৃশংস এই ঘটনা ঘটে বান্দরবানের লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শিং ঝিরি এলাকায়। এই ঘটনায় লামা থানা পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে লামা উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বেত ঝিরি হতে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত মূল দুই আসামী ফয়েজ আহমদ (৩৮) ও মো. আরিফুল ইসলাম (১৭) কে আটক করে। বুধবার (২১ এপ্রিল) রাত ২টায় আসামিদের দেয়া তথ্য মতে অভিযান চালিয়ে খুনের ২৫ দিন পরে মাটির নিচ থেকে নিহত হাফেজ স্বাধীনের লাশ উদ্ধার করে লামা থানা।

নৃশংসভাবে খুন হওয়া হাফেজ মো. অলি উল্লাহ স্বাধীন (১৭) কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের বিষুপুর গ্রামের মো. মোবারক হোসেন ও লুৎফা বেগমের ছেলে। খুনের ঘটনায় আটক দুই আসামি হল কুমিল্লা জেলার বুড়িচং থানার খারাতাইয়া গ্রামের আব্দুল মালেক এর ছেলে মো. ফয়েজ আহমদ (৩৮) ও নিহতের আপন ফুফাতো ভাই কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার থানার ফতেহাবাদ ইউনিয়নের বিষুপুর গ্রামের মৃত মোঃ আব্দুল গণি খাঁ এর ছেলে মো. আরিফুল ইসলাম (১৭)।

নিহতের বড় ভাই রিয়াজ উদ্দিন সোহেল (২৪) বলেন, গত ২২ মার্চ ২০২১ইং ছোট ভাই হাফেজ স্বাধীন তার ফুফাতো ভাই মোঃ আরিফুল ইসলাম এর সাথে বেড়ানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। কয়েকদিন যাবৎ ছোট ভাইয়ের কোন খোঁজ খবর না পেয়ে আমরা গত ২৪ মার্চ কুমিল্লার বুড়িচং থানায় হারানোর জিডি করে। জিডির সূত্র ধরে তার মোবাইল নাম্বার ট্রেকিং করে মঙ্গলবার লামা থানায় আসি। আমাদের দেয়া তথ্য মতে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে লামা থানা পুলিশ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত আসামী ফয়েজ আহমদ ও আরিফুল ইসলামকে সন্দেহভাজন হিসাবে উপজেলার রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের বেত ঝিরি ফয়েজ আহমদের শশুড় বাড়ি থেকে তাদের আটক করে। ফয়েজ আহমদ বেত ঝিরি এলাকার ইউনুচ মোল্লার মেয়ের জামাই।

তাদের আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করলে চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় পুলিশ। আসামীদের দেয়া তথ্য মতে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় অভিযানে বের হয় লামা থানা। রাত ১টায় আসামি ও নিহতের দুইভাইকে সাথে নিয়ে খুনের ঘটনাস্থলে পৌঁছায় লামা থানা পুলিশ। আসামিদের দেখানো স্থান রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের শিং ঝিরিস্থ পাহাড়ের উপরে রাত ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত মাটি খুঁড়ে নিহত হাফেজ স্বাধীন এর লাশ উদ্ধার করা হয়।

অভিযানে নেতৃত্ব দেন লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। তার সাথে অভিযানে অংশ নেন লামা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আসিফ মাহমুদ, থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মো. আলমগীর, পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. রাশেদ, আশ্রাফুল ইসলাম, ত্রিদীপ বড়ুয়া, মো. ফরিদ, রূপসীপাড়া ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড মেম্বার আবু তাহের সহ লামা থানা পুলিশের অন্যান্য অফিসার ও পুলিশ সদস্যরা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আসামিদের দেয়া তথ্য মতে ও তাদের দেখানো স্থানে মাটি খুঁড়ে আমরা নিহত হাফেজ স্বাধীন এর লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হই। লাশটি যে হাফেজ মো. অলি উল্লাহ স্বাধীনের তা তার বড় দুই ভাই রিয়াজ উদ্দিন সোহেল ও মো. জিলানী বাবু নিশ্চিত করেছে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ নিহতের পরিবারের লোকজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। দীর্ঘদিন হওয়ায় লাশ অনেকাংশ পঁচে গলে গেছে৷

Exit mobile version