মৃত ব্যক্তিকে ১০ দিনের মধ্যে ভূমি অফিসে হাজির হতে নোটিশ!

fec-image

দুই বছর আগে মারা যাওয়া মাস্টার এহছানুল হককে ১০ দিনের মধ্যে কাগজপত্র নিয়ে পেকুয়া উপজেলা ভূমি অফিসের শুনানীতে অংশ নেয়ার জন্য নোটিশ দেয়া হয়েছে।

শুধু তাই নয়, নোটিশ পেয়ে ওই মৃত ব্যক্তির বড় ছেলে ২ বছর আগে তার পিতার মৃত্যু হয়েছে জানিয়ে সময়ের আবেদন নিয়ে উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ে গেলে বিবাদী (মৃত ব্যক্তি) স্বশরীরে উপস্থিত না হওয়ায় আবেদনটি গ্রহণ করতেও অস্বীকৃতি জানায় ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী।

চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি ঘটেছে পেকুয়া উপজেলা ভূমি সহকারী কমিশনারের কার্যালয়ে।

জানাযায়, পেকুয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহুল চন্দের স্বাক্ষরে ২৯ জুলাই সিকদার পাড়ার মরহুম মাস্টার এহছানুল হকের নামে একটি নোটিশ পাঠানো হয়।

নোটিশে উল্লেখ করা হয়, একই এলাকার মৃত ছৈয়দ নূর সিকদারের পুত্র দিদারুল ইসলাম সিকদার বাদী হয়ে তার ২ টি নামজারী খতিয়ানের বিরুদ্ধে আপত্তি দায়ের করেছেন। সে বিষয়ে শুনানীতে অংশ নিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ বিবাদীকে ১১ আগস্ট উপস্থিত থাকতে হবে। উপস্থিত না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে, নোটিশ জারির এক সপ্তাহ পরে নোটিশটি হাতে পান মরহুম মাস্টার এহসানুল হকের ছেলে অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান।

তিনি বলেন, “আমি নোটিশ হাতে পেয়ে কিছুটা অবাক হই। কারণ আমার পিতা মাস্টার এহছানুল হক ২ বছর আগেই মারা গেছেন। তার মৃত্যুর বিষয়টি উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জোগাড় করে শুনানীতে অংশ নেয়ার জন্য বাবার মৃত্যু সনদসহ উপজেলা ভূমি অফিসের প্রধান সহকারীর কাছে গেলে তিনি বিবাদী স্বশরীরে না গেলে আবেদনপত্র গ্রহণ করতে পারবেননা বলে সাফ জানিয়ে দেন। পরে এক আওয়ামী লীগ নেতার মাধ্যমে ফোন করে আবেদনটি গ্রহণ করাই।”

এদিকে মৃত ব্যক্তিকে শুনানীতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ প্রদানের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।

খোঁজ নিয়ে জানাযায়, সিকদার পাড়া এলাকার দিদারুল ইসলাম সিকদার নামের এক ব্যক্তি একই এলাকার মৃত এহছানুল হক ও তার ভাইদের নামে সৃজিত নামজারী ১৬০৯ ও ৫১৬৫ নং খতিয়ানের বিরুদ্ধে আপত্তির আবেদন করেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ নোটিশটি দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভূমি অফিসের প্রধান সহকারী তপন কুমার বলেন, ‘বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে নোটিশটি প্রদান করা হয়েছিল। পরে জানলাম বিবাদী মারা গেছেন। আবেদনটি খারিজ করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।’

এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাহুল চন্দের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মূলত নোটিশটি প্রদান করা হয়েছিল। এসময় কে মৃত কে জীবিত সেটি জানার সুযোগ খুব কম থাকে। কিন্তু বিষয়টি জানার পরপরই আমরা আবেদন দুটি খারিজ করার ব্যবস্থা করেছি।’

মৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে নোটিশ ইস্যুর বাদী দিদারুল ইসলাম সিকদারের বক্তব্য জানতে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করা হয়। কল পড়লেও ফোন ধরেন নি।

তবে, দিদারুল ইসলাম এলাকায় একজন ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। তিনি ক্ষমতাসীন দলের প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন জনের খতিয়ানের বিরুদ্ধে আপত্তি দিয়ে প্রায়সময় লোকজনকে হয়রানী করে থাকেন বলে অভিযোগ শোনা যায়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: কক্সবাজার, নোটিশ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন