parbattanews

মেসির হ্যাটট্রিকে বড় জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শুরু বার্সার

 barca-1

খেলা ডেস্ক:
লা লিগায় আলাভেসের কাছে হেরে তেতে থাকা বার্সেলোনা উড়িয়ে দিয়েছে সেল্টিককে। লুইস এনরিকের শিষ্যরা গোল উৎসবে ভুলেছেন সেই হারের ব্যথা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হ্যাটট্রিক করেছেন দলের সেরা তারকা লিওনেল মেসি। দুবার লক্ষ্যভেদ করেছেন লুইস সুয়ারেস। চার গোলে অবদান রাখা নেইমার নিজেও করেছেন একটি।

মঙ্গলবার স্কটল্যান্ডের দলটির বিপক্ষে বার্সেলোনার ৭-০ ব্যবধানের জয়ে অন্য গোলটি আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে এটাই স্পেনের অন্যতম সফল দলটির সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়।

আলাভেসের বিপক্ষে শুরুর একাদশ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এনরিকে এবার পরীক্ষিত দলকেই বেছে নেন। শুরু থেকেই মাঠে থাকা মেসি-নেইমার-সুয়ারেস আবার উপহার দিয়েছেন জাদুকরী ফুটবল। তাদের সামনে কোনো বাধাই হতে পারেনি সেল্টিকের রক্ষণ।

গোলের জন্য কাম্প নউয়ে তিন মিনিটের বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি স্বাগতিকদের। নেইমারের দারুণ পাসে বার্সেলোনাকে এগিয়ে নেন মেসি।

মেসি-নেইমারের অসাধারণ বোঝাপড়ায় অতিথিদের রক্ষণকে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রাখে বার্সেলোনা। তবে এরই মধ্যে খেলার বিপরীতে সমতা আনার সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে যায় সেল্টিক।
মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগেন মুসা দেমবেলিকে ফাউল করলে পেনাল্টি পায় সেল্টিক। ২৪তম মিনিটে দেমবেলির পেনাল্টি ডানদিকে ঝাঁপিয়ে ব্যর্থ করে দেন বার্সেলোনার গোলরক্ষক।

২৭তম মিনিটে দেওয়া-নেওয়া করে সুযোগ তৈরি করেন নেইমার। যা কাজে লাগাতে মোটেও সমস্যা হয়নি পাঁচ বারের বর্ষসেরা ফুটবলার মেসির।

আট মিনিট পর ইভান রাকিতিচের একটি প্রচেষ্টা গোললাইন থেকে ফিরিয়ে দেন সেল্টিকের একজন ডিফেন্ডার।

দ্বিতীয়ার্ধে ৫০তম মিনিটে অসাধারণ এক ফ্রি-কিকে ব্যবধান ৩-০ করেন নেইমার। গোলরক্ষক বল স্পর্শ করলেও জালে জড়ানো ঠেকাতে পারেননি।

রাকিতিচের বদলে দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই খেলেন ইনিয়েস্তা। ৫৯তম মিনিটে স্কোর লাইন ৪-০ করার কাজটা সারেন তিনিই। নেইমারের দারুণ ক্রস থেকে স্প্যানিশ এই মিডফিল্ডারের ভলি ফাঁকি দেয় সেল্টিক গোলরক্ষককে।

৭২ সেকেন্ডের মধ্যে আবার উৎসবে মাতে বার্সেলোনা। সুয়ারেসের ক্রস থেকে নিজের তৃতীয় গোলটি করেন মেসি। এই গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সবচেয়ে বেশি-৬টি হ্যাটট্রিকের রেকর্ড গড়েন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার।

৭৫তম মিনিটে আবার নেইমারের নিখুঁত ক্রস। এবার বুক দিয়ে নামিয়ে চমৎকার এক ভলিতে দলের ষষ্ঠ গোলটি করেন স্ট্রাইকার সুয়ারেস। ৮৮তম মিনিটে মেসির কাছ থেকে বল পেয়ে আবার জালে পাঠান উরুগুয়ের এই তারকা। তার ঠিক আগে নেইমারের একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় বারে লেগে।

ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ লুইস এনরিকে বললেন, তিনি বুঝে-শুনেই মেসিকে মেসির মতো খেলার লাইসেন্স দিয়ে রেখেছেন, ‘ওর যে স্বাধীনতা আছে, এ কারণেই ও মাঠের সবখানে খেলতে পারে। ওকে আপনি দলের ছয় নম্বর, আট কিংবা দশ নম্বর হিসেবে খেলিয়ে দেখুন। সব পজিশনেই ও বিশ্বের সেরা। ওর এই স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হবে বোকামি।’

মেসিকে সর্বকালের সেরাও বললেন এনরিকে, ‘এ কারণেই ও সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়। এতে কোনো সন্দেহ নেই। ওর পরিসংখ্যান দেখুন, ওর ফুটবল দর্শন দেখুন। মেসিই টোটাল ফুটবল।’

শুধু তো মেসি নন, দল হিসেবেই বার্সা কাল ছিল অবিশ্বাস্য। শুধু টের স্টেগেনের সেই পেনাল্টি উপহার দেওয়া ভুলটা বাদে। স্টেগেন নিজে সেই ভুল শুধরেও নিয়েছেন সঙ্গে সঙ্গে দারুণ সেভ করে পেনাল্টি বাঁচিয়ে।

এনরিকেও শিষ্যদের শতভাগ নম্বর দিচ্ছেন, ‘শুরু থেকেই আমার ছিলাম চোখধাঁধানো। দল আর সমর্থকেরাও দারুণ উপভোগ করছিল। চ্যাম্পিয়নস লিগ এভাবে শুরু করতে পারাটা দারুণ। ম্যাচে আমাদের অবস্থান সব সময়ই ভালো ছিল। প্রতিপক্ষের পায়ে বল গেলেই আমরা সঙ্গে সঙ্গেই তা কেড়ে নিয়েছি। এটাই প্রত্যেককে সুযোগ করে দিয়েছিল খেলাটা উপভোগ করে খেলার।’

টানা বৃষ্টির জন্য নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট আগে স্থগিত করা হয় ম্যানচেস্টার সিটি ও বরুসিয়া মনশেনগ্লাডবাখের মধ্যকার ‘সি’ গ্রুপের অন্য ম্যাচ।

‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে পিএসজির সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে আর্সেনাল। খেলার ৯০তম মিনিটে আর্সেনালের অলিভিয়ে জিরুদ ও পিএসজির মার্কো ভেরাত্তি দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন। এফসি বাসেলের বিপক্ষে লুদোগোরেতস রাজগার্দের স্কোর লাইনও একই।

‘বি’ গ্রুপে দিনামো কিয়েভকে ২-১ গোলে হারিয়েছে নাপোলি। ৬৮তম মিনিটে কিয়েভের সিদরচুক দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন। গ্রুপের অন্য ম্যাচে বেনফিকার সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করেছে বেসিকতাস।

‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচে রুস্তভকে ৫-০ গোলে হারিয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। গ্রুপের অন্য ম্যাচে পিএসভি আইন্দহোফেনকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আতলেতিকো মাদ্রিদ।

Exit mobile version