parbattanews

যারা ২১ বছর বুকে পাথর বেঁধে দল করেছে তাদের মূল্যায়ন করা হবে: তথ্যমন্ত্রী

যারা ২১ বছর বুকে পাথর বেঁধে দল করেছে তাদের মূল্যায়ন করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এমপি।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল না তখন যারা নির্যাতন, কষ্ট সহ্য করেছে সেই সব ত্যাগী নেতাকে দলে মূল্যায়ন করতে হবে। তবেই তৃণমূল পর্যায়ে দল সুসংগঠিত হবে।

আগামীতে কোন কাউয়ার স্থান আওয়ামী লীগে হবে না। অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করে বিতাড়িত করা হবে।

শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেলে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের সাথে দলীয় কার্যালয়ে মতবিনিময়কালে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

ড. হাসান মাহমুদ বলেন, তৃণমূলের পছন্দের প্রার্থীদের আগামীর মনোনয়ন দেয়া হবে। টাকা পয়সার বিনিময়ে মনোনয়ন দেয়া হবে না। দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ লোকজনকে মূল্যায়ন করা হবে।

জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) এডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় ড. হাসান মাহমুদ বলেন, অনেকে পিঠ বাঁচানোর জন্য অনেকে নৌকায় ওঠতে চায়। এধরণের লোক আওয়ামী লীগে দরকার নাই।

আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন বিষয়ে নেতাদের উদ্দেশ্যে ড. হাসান মাহমুদ বলেন, তৃণমূল থেকে নাম পাঠানোর সময় দলের জন্য ত্যাগী, বিশ্বস্তদের নাম পাঠাবেন। টাকার বিনিময়ে যেন কারো নাম না পাঠানো হয়।

দলের সিদ্ধান্ত না মেনে নির্বাচনে অংশ নিলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এই নেতা।

তথ্য মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেন, মৌলবাদের আস্ফালন ও রোহিঙ্গা সমস্যা মোকাবেলা করেই আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। ঐক্যবদ্ধভাবে দলের কাজকে এগিয়ে নিতে হবে।

তিনি বলেন, আজ থেকে কয়েক বছর আগেও কক্সবাজারের এই চিত্র ছিল না। এখানে যেসব উন্নয়ন কাজ হচ্ছে তা অকল্পনীয়।

কক্সবাজারকেন্দ্রিক সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা চিত্র তুলে ধরে হাসান মাহমুদ বলেন, কক্সবাজারের মানুষ ভাবেনি, এখানে আন্তর্জাতিকমানের একটি বিমানবন্দর হবে। স্বপ্নকে হার মানিয়ে উন্নয়ন হচ্ছে। গৃহহীনকে ঘর দেয়া হয়েছে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে কক্সবাজারে ট্রেন আসবে। সেটা স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। এমন পরিবর্তন কেউ ভাবেনি।

তিনি বলেন, গত ১২ বছরে দেশের প্রতিটি মানুষের চেহারার পরিবর্তন হয়েছে। রুচির পরিবর্তন ঘটেছে। এখন আর ছেঁড়া কাপড়, খালি পায়ে মানুষ দেখা যায় না। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ গেছে। গ্রামে-গঞ্জেও ব্যাপক উন্নয়নের জোয়ার। তা আওয়ামী লীগের নেতাদের কারণে সম্ভব হয়েছে।

শেখ হাসিনার যোগ্য নেতৃত্বে দেশ আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন হাসান মাহমুদ।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা।

তিনি বলেন, সরকারের উন্নয়ন কাজে কক্সবাজারবাসী ভিটেমাটি দিয়ে ফেলেছে। অনেকে উদ্বাস্তু হয়ে গেছে। সরকারের উন্নয়ন কাজে কক্সবাজারবাসী একমত।

তবে, উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বিষয়ে খেয়াল রাখতে মন্ত্রীর দৃশ্য আকর্ষণ করেন এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন- জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী, আশেক উল্লাহ রফিক এমপি, সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ সিআইপি, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কর্নেল ফোরকান আহমদ, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কানিজ ফাতেমা আহমেদ মোস্তাক, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি রেজাউল করিম।

মতবিনিময় সভায় জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রঞ্জিত দাশ, মাহবুবুল হক মুকুল, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম, জেলা যুব লীগের সভাপতি সোহেল আহমেদ বাহাদুর, যুব মহিলা লীগ নেত্রী আয়েশা সিরাজ, তাহমিনা হক চৌধুরী লোনা, জেলা ছাত্র লীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে শুক্রবার দুপুরে বাংলাদেশ বেতার কক্সবাজার আঞ্চলিক কেন্দ্র পরিদর্শনকালে কক্সবাজার বেতারকে আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সরকারের তথ্যমন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ এমপি। তিনি এও বলেছেন, স্থানীয় সংস্কৃতি, কৃষ্টি, কৃষি ও ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে বেতারকে ভূমিকা রাখতে হবে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বেতারের অনিয়মিত শিল্পীদের কিছু সমস্যার কথা জেনেছি। এসব বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হবে। করোনাকাল পার হলেই শিল্পী সন্মানী বাড়ানোর বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।  দুপুরে আঞ্চলিক কেন্দ্রে পৌঁছেন তথ্য মন্ত্রী ডঃ হাসান মাহমুদ। এ সময় বেতারের কর্মকর্তা, কলাকুশলী, সাংবাদিক ও শিল্পীরা তাকে বরণ করে নেন। মতবিনিময় সভা শেষে মন্ত্রী বেতার ভবন ঘুরে দেখেন এবং সামনের প্রাঙ্গনে একটি নিম গাছের চারা রোপন করেন।

Exit mobile version