parbattanews

যেভাবে উদ্ধার হলেন ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিন

পাহাড়ে ড্রোনের মাধ্যমে অনুসন্ধান চালিয়ে অপহরণের দুই দিন পর বান্দরবানের রুমার সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব-১৫।

বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যায় তাকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) এর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন নিশ্চিত করেছেন।

খন্দকার আল মঈন বলেন, র‌্যাবের মধ্যস্থতায় বান্দরবানের রুমার সোনালী ব্যাংকের অপহৃত ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারের পর তাকে র‌্যাব কার্যালয়ে আনা হয়েছে।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, রুমার সোনালী ব্যাংক ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে ব্যাংকের পেছনে বেতেল পাড়া দিয়ে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। সম্ভবত এ কারণে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বেতেল পাড়াসহ পাহাড়ের সন্দেহজনক এলাকায় ড্রোন দিয়ে পর্যবেক্ষণ করে যৌথ বাহিনী। এ সময় পাহাড়ের বিভিন্ন স্থানের চিত্র ধারণ করে ড্রোন। সন্দেহজনক এলাকাগুলোতে যৌথ অভিযানে কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্যরা অনেকটা ভীত হয়ে পড়ে।

অন্য আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রামু থেকে ৪টি মহিন্দ্র করে ৫০ জন পুলিশকে সেনাবাহিনী নিয়ে যায় অভিযান চালানোর জন্য।

অপহরণের ৪৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার সোনালী ব্যাংক বান্দরবানের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে গিয়েছিলো অপহরণকারীরা। তাকে মুক্তি দিতে কোনো মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছিলো কি না সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানা যায়নি।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধারের খবর জানান।

পরে একাত্তরকে টেলিফোনে এই র‌্যাব কর্মকর্তা বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টা ১০ মিনিটের দিকে নেজাম উদ্দীনকে পায় তারা। র‌্যাবের মধ্যস্ততায় উদ্ধার করা হয় সোনালী ব্যাংকের রুমা শাখার ম্যানেজার নেজাম উদ্দীনকে।

কীভাবে তাকে উদ্ধার করা হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, ‘সরাসরি আমাদের হাতে দেয়নি। একটা নির্দিষ্ট জায়গায় তাকে রেখে গিয়েছিলো। আমরা চেয়েছি তাকে সম্পূর্ণ সুস্থ ও নিরাপদে আনার জন্য। সেইভাবেই আমরা কিছু কৌশল অবলম্বন করে তাকে উদ্ধার করতে সম্ভব হয়েছি।’

অপহরণকারীদের কোনো মুক্তিপণ দেওয়া হয়েছিলো কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, কোনো টাকা পয়সা লেনদেন হয়েছে কি না সেটা আমরা আলোচনা করছি। আমাদের সঙ্গে অন্যান্য সংস্থাও কাজ করেছে। উনাদের সঙ্গে আলোচনা করে হয়তো বলতে পারবো।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যখন আমাদের কাছে ফেরত দেওয়া হয়ে তখন কোনো টাকা পয়সা দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন সোর্স ও সংস্থা কাজ করছিলো। তারা দিয়েছে কি না সেটা আলোচনার পর জানতে পারবো। কিন্তু যখন আমাদের মধ্যস্থতায় রেখে গেছে তখন কোনো অর্থের লেনদেন হয়নি।’ র‌্যাবের এই কর্মকর্তা কোনো সংগঠনের নাম বলেননি।

এর আগে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে পাহাড়ের সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীরা রুমার সোনালী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লুট করার চেষ্টা করে। কিন্তু টাকা লুট করতে না পেরে যাওয়ার সময় ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে। বৃহস্পতিবার তাকে ছাড়তে ১৫-২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, পাহাড়ের সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ কুকিচিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে এসে বাজারের মসজিদ ও ব্যাংক ঘেরাও করে ঈমামসহ সবাইকে জিম্মি করে রাখে। এসময় তারা সোনালী ব্যাংকের ভল্ট ভেঙে টাকা নিতে না পেরে ডিউটি পুলিশের ১০টি অস্ত্র ও আনসার বাহিনীর ৪টি অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় তারা রুমা সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

Exit mobile version