parbattanews

যৌতুকের দাবি মেটাতে না পারায় বিচারকের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে নারী

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার চার মাসের গর্ভবতী নারী যৌতুক দিতে না পারায় শ্বশুরালয়ে ঠাঁই হচ্ছে না এই পুত্র-বধূর। স্বামীও আর খবর নিচ্ছে না স্ত্রীর। থানা পুলিশ, স্থানীয়  জনপ্রতিনিধির দ্বারে দ্বারে ঘুরছে চার মাসের গর্ভবতী এই নারী।

জানা যায়, কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিউনের ৯ নং ওয়ার্ড নোয়াখালী পাড়ার মো. আয়ুবের মেয়ে সমজিদা বেগম (১৯) ও টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ লেঙ্গুরবিল গ্রামের হোছন আহমদ’র ছেলে ছলিম উল্লাহ (২১) প্রেম করে কয়েক বছর ধরে। পরে বিষয়টি জানাননি হলে উভয় পরিবার প্রাপ্ত বয়সে আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন করতে সম্মত হয়।

কিন্তু এ ফাঁকে প্রেমিক -প্রেমিকা গোপনে স্ট্যাম্প মূলে বিয়ে করে। ইতিমধ্যে সমজিদা বেগম চার মাসের গর্ভবতী হয়। বিষয়টি জানাজানি হলে দু পরিবারের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। সমজিদাকে শ্বশুরালয়ে তুলে নিতে বাধা দেয় শ্বশুর পক্ষের লোকজন। বিষয়টি টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগ আকারে লিখিত ভাবে জানান সমজিদা। এতে উল্লেখ করা হয়, শ্বশুর-শ্বাশুরী একটি অটোরিকশা কিনার জন্য দু’ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে। দাবি মেটাতে না পারায় শ্বশুর বাড়িতে ঢুকতে দিচ্ছে না সমজিদাকে। ইতিমধ্যে স্বামী ছলিম উল্লাহও পিতা মাতার দাবি না মিটানো পর্যন্ত স্ত্রীর ভরণপোষণ দিচ্ছে না।

এদিকে নিজ ও অনাগত সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে দারুণ উৎকন্ঠায় বিচারকের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে সমজিদা। তিনি জানান, ” গত ২০২২ সালের ৬ আগস্ট ছলিম উল্লাহ’র সাথে আমার ইসলামি শরীয়ত মোতাবেক নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্প মূলে বিবাহ হয়। বিবাহের সময় কাবিনের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সংগ্রহ করিয়া কাজী অফিসে গিয়ে আমাকে পরিপূর্ণ কাবিননামা সম্পাদন করার আশ্বাস দেন স্বামী ছলিম উল্লাহ । আমি বর্তমানে ৪ মাসের গর্ভবর্তী। আমাকে বিবাহ করে স্বামীর বাড়ীতে নিয়ে যাওয়ার পর হতে শ্বশুর-শ্বাশুরীর ইন্ধনে আমার কাছ থেকে মোটা অংকের যৌতুকের টাকা দাবী করে আসিতেছিল আমার স্বামী । আমি যৌতুকের টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় সেখানে আমার উপর মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। শুধু তাই নয়, এ ফাঁকে আমার স্বামী বিভিন্ন মেয়ের সাথে পরকীয়া সম্পর্ক আসক্ত হয়। আমাকে সংসারের ভরন পোষন দেওয়া বন্ধ করে দেয় এবং আমাকে এলোপাথারী কিল ঘুষি ও লাথি মেরে এক কাপড়ে তাদের বাড়ী হতে বের করে দেয়।

এর পর হতে আমি আমার পিতার বাড়ীতে দুঃখ কষ্টে দিন যাপন করে আসছি। স্বামীর ঘর থেকে বের করে দেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত আমার কোন ধরনের খোঁজ খবর নেয়নি স্বামী। এ ছাড়া আমার পিতার বাড়ী হতে যৌতুকের ২ লাখ টাকা নিয়ে তাদের বাড়ীতে না গেলে আরেকটি দ্বিতীয় বিবাহ করবে বলে হুমকি ধমকি দিচ্ছে ।”

এ বিষয়ে ছলিম উল্লাহ বলেন,” পারিবারিক চাপের মধ্যে আমার করার কিছু নেই। আইন-আদালতে আমার জেল হলে তা হোক।”

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার শাহ আলম বলেন,” বিষয়টি সামাজিক ভাবে মিমাংসা করার জন্য কয়েকদফা বৈঠক হয়েছে। স্বামী পালিয়ে থাকায় সমাধান করা বিলম্ব হচ্ছে। তবে বিষয়টি দ্রুত সময়ে শেষ করে দেওয়ার জন্য আবারো ডাকা হবে উভয় পরিবারকে।

টেকনাফ মডেল থানার এস আই হ্লামিয়েছা চাকনা বলেন,” এ বিষয়ে সমজিদা বেগম লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে পুলিশ। “

Exit mobile version