রাখাইনে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের উপর বীভৎস্য নির্যাতনের কথা আন্তর্জাতিক বিশ্বে তুলে ধরা হবে: জোলি

উখিয়া প্রতিনিধি:

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) এর বিশেষ দূত ও হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি দ্বিতীয় দিনে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বলেন, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষের উপর বীভৎস্য নির্যাতনের কথা আন্তর্জাতিক বিশ্বে তুলে ধরা হবে।

মঙ্গলবার বিকেল ৪টায় কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৫ ব্লকে প্রেস ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন হলিউডস্টার জোলি।

এর আগে সকালে তিনি ইনানীর হোটেল রয়েল টিউলিপ সী পার্ল থেকে উখিয়ার কুতুপালং এক্সটেনশন-৪ ক্যাম্পে পৌঁছান। সেখানে রোহিঙ্গা শিবিরে আশ্রিত নারী-শিশুর সাথে সময় কাটান তিনি। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পালিয়ে আসার কারণ, নিপীড়ন-নির্যাতনের কথাও শোনেন।

এছাড়াও নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের সাথে কথা বলার পাশাপাশি ইউএনএইচসিআর ‘ ব্র্যাক, রিলিফ ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা করেন। পাশাপাশি ক্যাম্পে অবস্থানরত বিভিন্ন দাতা সংস্থা ও এনজিও পরিচালিত স্বাস্থ্যসেবামুলক প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন এই অভিনেত্রী।

সন্ধ্যায় ক্যাম্প থেকে কক্সবাজার ফিরে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এবং ইউএনএইচসিআরসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। কক্সবাজার রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন শেষে বুধবার ঢাকায় পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা রয়েছে তাঁর।

এর আগে সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে দশটার দিকে একটি বেসরকারি বিমানে কক্সবাজার পৌঁছেন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী। সেখান থেকে কড়া নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে উখিয়ার ইনানীতে তারকামানের হোটেল রয়েল টিউলি সী-পার্লে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে টেকনাফের চাকমারকুল ২১ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন তিনি।

অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ২০১২ সাল থেকে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ‘ইউএনএইচসিআর’র বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এটাই তাঁর প্রথম বাংলাদেশ সফর। যদিও ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের দেখতে বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করলেও নানা কারণে তা বাতিল হয়।

এর আগে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি ২০১৫ সালে মিয়ানমার ও ২০১৬ সালে ভারত সফর কালেও রোহিঙ্গাদের সাথে দেখা করেন। তিনি জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক দূত হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর থেকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার মানুষের বিশেষ করে নারীর প্রতি সহিংসতা ও যৌন নির্যাতনের প্রতিরোধে সোচ্চার ভুমিকা রেখে আসছেন।

এদিকে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশ পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মৌলিক চাহিদা পুরণের পাশাপাশি স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৯২ কোটি ডলার সাহায্য চেয়ে একটি জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান জাতিসংঘের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হবে বলে জানা গেছে।

গত বছরের ২১মে জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেন বলিউড অভিনেত্রী প্রিয়াংকা চোপড়া।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন