Notice: Trying to get property 'post_excerpt' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 53

Notice: Trying to get property 'guid' of non-object in /home/parbatta/public_html/wp-content/themes/artheme-parbattanews/single.php on line 55

রাখাইনে হিন্দু হত্যা: মঙ্গলবার মিয়ানমার যাচ্ছেন মোদি

ডেস্ক নিউজ:

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনী সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের সঙ্গে অপর সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপরও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে কেউ আশ্রয় নিয়েছেন বাংলাদেশে কেউ অবস্থান করছেন বাংলাদেশ সীমান্তের জিরো পয়েন্টে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এ খবর তুলে ধরা হয়েছে।

এসব খবরে বলা হয়েছে, গত ২৫ আগস্ট থেকে এক সপ্তাহে রাখাইন রাজ্যের ফকিরাবাজারের ৭৫টি হিন্দু পরিবারের ঘরবাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত ৮৬ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে।

এমন প্রেক্ষাপটে মিয়ানমারের নোবেল বিজয়ী নেত্রী অং সান সুচির সঙ্গে আলোচনা করতে দেশটিতে দু’দিনের সফরে যাচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। আগামী মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) তিনি মিয়ানমার পৌঁছাবেন। বর্তমানে মোদি ব্রিকস সম্মেলনে অংশ নিতে চীনে অবস্থান করছেন। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে।

মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা শ্রীপ্রিয় রঙ্গানাথান জানান, রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে যে সংকট চলছে, সেটি কীভাবে সমাধান করা যায়, মিয়ানমারের নেত্রীর সঙ্গে বিষয়ে নিয়ে আলোচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারই তৈরি করেছে। সমাধানও তাদের হাতে। প্রতিবেশী দেশ হিসেবে এসব নিয়ে আমাদের যথেষ্ট উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ রয়েছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভারতকে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছে।

এদিকে এক খবরে বলা হয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং এলাকার একটি ছোট পরিত্যক্ত মুরগি খামারে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমার বাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১৬০ পরিবারের ৪৯৫ জন হিন্দু। এক সাথে এত বিপুল সংখ্যক নারী-পুরুষ গাদাগাদি করেই মানবেতর দিনযাপন করছে মুরগি খামারটিতে। তারা এখানে পারছে না শুয়ে ঘুমাতে আর পারছে না রান্নাবান্না করে খেতেও। কক্সবাজার জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সাময়িক খাবারের ব্যবস্থা করলেও তাদের ঘুমানোর জায়গা মেলেনি।

গত ৩০ আগস্ট বুধবার রাতেই প্রাণ ভয়ে সীমান্ত অতিক্রম করে ৪১২ হিন্দু নারী-পুরুষ শিশু উখিয়ার কুতুপালং এলাকার পশ্চিম হিন্দু পাড়ায় আশ্রয় নিয়েছে। দ্বিতীয় দফায় আরো ৮৩ জন আশ্রয় নেয়। এছাড়া সীমান্তের জিরো পয়েন্ট অপেক্ষা করছে আরো শতশত হিন্দু। তারাও প্রবেশের অপেক্ষা করছে।

প্রসঙ্গত, ২৪ আগস্ট মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ৩০টি পুলিশ ফাঁড়ি ও একটি সেনা ছাউনিতে ‘রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের’ হামলার ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর ১২ সদস্যসহ অন্তত ৯৬ জন নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের ৮৪ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) ‘আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি (এআরএসএ)’ নামে একটি গ্রুপ হামলার দায় স্বীকার করেছে। রাখাইনে এ হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে গঠিত কমিশনের প্রধান ও জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান।

এ অঞ্চলের অমুসলিম নাগরিকদের ভাষ্য, এ পর্যন্ত আরাকানে অন্তত ৪০০ মানুষ নিহত হয়েছে। ১১ হাজার ৭০০ ‘জাতিগত অধিবাসী’ তাদের বাসস্থান ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

এর আগে গেল বছরের অক্টোবরে প্রায় একই ধরনের এক হামলায় ৯ পুলিশ নিহত হওয়ার পর এই রাজ্যে ব্যাপক সেনা অভিযান শুরু করে মিয়ানমার। সেনাবাহিনীর ওই অভিযানে ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের অভিযোগ ওঠে। রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ ও তাদের ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগও ওঠে। কিন্তু মিয়ানমার সরকার বরাবরই ওই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

সেবার মিয়ানমারে সেনা অভিযান শুরুর পর প্রায় ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে অবস্থান নেয়। ওই ঘটনায় জাতিসংঘ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনে।

এরপর পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করতে না করতেই আবার উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে পরিস্থিতি। চলতি মাসের শুরুর দিকে মংড়ু এলাকায় সাত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। এরপর আগস্ট মাসের ১২ তারিখে নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলে রাখাইনে কয়েকশ সেনা মোতায়েন করে মিয়ানমার সরকার। এ দফায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার পর ফের বাংলাদেশে ঢুকতে শুরু করেছেন রোহিঙ্গারা।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন