“২০১৭ সালের ১৩জুন রাঙামাটিতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ পাহাড় ধসে সরকারি হিসেবে মতে ৯৮জন এবং বেসরকারি হিসেব মতো আরও বেশি মানুষ মারা যায়। ”

রাঙামাটিতে আবারও পাহাড় ধসের শঙ্কা

fec-image

বর্ষা মৌসুম শুরু হয়েছে। বেড়েছে পাহাড় ধসের শঙ্কা। রাঙামাটির পাহাড়ে হাজার-হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। ঝুঁকি থাকলেও মুত্যুর ভয়কে উপেক্ষা করছে তারা। তাই তারা পাহাড়ও ছাড়তে নারাজ।

পাহাড়ে বসবাসকারী একাধিক মানুষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, কোন বছর রাঙামাটিতে বড় ধরণের পাহাড় ধস হয়নি ২০১৭ সাল ব্যাতীত। এছাড়া রাঙামাটি পুরো শহর গঠিত হয়েছে পাহাড়কে ঘিরে। কোন জায়গায় সমতল নেই।

তারা দাবি জানিয়ে বলেন, পাহাড়ি অঞ্চল রাঙামাটি। সমতল পাবো কোথায়? তাই পাহাড়ে বসবাস করি। কোন ঘর ভাড়া করে থাকা আমাদের পক্ষ কোনদিন সম্ভব নয়। তাই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে ঘর বেধে বসবাস করি। কারণ ঘর ভাড়া করে থাকার মতো আমাদের সামর্থ্য নেই।

জেলা শহরের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ির এলাকা শিমুলতলীর বাসিন্দা মো. শাহজাহান জানান, দীর্ঘ বছর ধরে এ এলাকায় বসবাস করছি। কোনদিন পাহাড় ধস দেখার অভিজ্ঞতা হয়নি। ২০১৭ সালে যে পাহাড় ধস হয়েছে তার কথা আমরা কোনদিন ভুলবো না। কতশত মানুষ যে মাটি চাপা পড়েছে তার কোন হিসেব নেই।

ভেদভেদীস্থ পশ্চিম মুসলিম পাড়ার বাসিন্দা আব্দুল করিম জানান, বর্ষা আসলে আমাদের ভয় বেড়ে যায়। প্রতিনিয়ত ভয়ে থাকি কখন পাহাড় ধসে আমাদের ঘরকে চাপা দেয়।

ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও কেন পাহাড়ে বসবাস করছেন এমন প্রশ্নে তিনি জানান, আমাদের থাকার কোন জায়গা নেই। ঘর ভাড়া করার মতো সামর্থ নেই। পাহাড়ে না থাকলে কোথায় থাকবো? রাঙামাটি সদর জোন কমান্ডার মো. রফিক জানান, আমরা অতীতের সকল দূযোর্গ মোকাবেলায় স্থানীয় জনগণের পাশে ছিলাম, এখনো আছি। পাহাড় ধসের মতো দূর্যোগ মোকাবেলায় সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টিমকে তৈরি করে রাখা হয়েছে বলে যোগ করেন তিনি।

এছাড়া যান্ত্রিক সহায়তায় সেনাবাহিনী সবকিছু প্রস্তুতি সেরে রেখেছে বলে জানানা সেনাবাহিনীর এ কর্মকর্তা

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক (ডিসি) একেএম মামুনুর রশীদ বলেন, আমরা সকল ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রস্তুতি সেরে ফেলেছি। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতাল, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি বর্গকে একটি তালিকায় বদ্ধ করেছি এবং তাদের সাথে আলোচনা সভা ও তাদের সজাগ থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ডিসি জানান, প্রত্যোক এলাকায় স্থানীয় কাউন্সিলরদের মাধ্যমে স্বেচ্ছা সেবী কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্রগুলো। জেলা প্রশাসন মাইকিং, পোস্টারিং এর মতো সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে।

প্রসঙ্গত: ২০১৭ সালের ১৩জুন রাঙামাটিতে স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ পাহাড় ধসে সরকারি হিসেবে মতে ৯৮জন এবং বেসরকারি হিসেব মতো আরও বেশি মানুষ মারা যায়।

এছাড়া ২০১৮ সালের ১২জুন নানিয়ারচর উপজেলার সাবেক্ষং ইউনিয়নে ১১জন মানুষ পাহাড় ধসে নিহত হন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: পাহাড় ধস
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন