parbattanews

রাঙামাটিতে ওমর ফারুক এর স্মরণে পিসিএনপি’র শোক সভা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবন জেলার রোয়াংছড়ি ইউনিয়নের তুলাবন ছড়া গ্রামের শহীদ ওমর ফারুক ত্রিপুরার স্মরণে শোক সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৮ জুন) বাদ মাগরিব রাঙামাটি জেলা কার্যালয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ (পিসিএনপি) এর আয়োজনে এই শোক সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

উক্ত শোক সভা ও দোয়া মাহফিলে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ রাঙামাটি জেলা সভাপতি শাব্বির আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক মো. সোলায়মান, প্রচার সম্পাদক মো. কবির হোসেন, ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক মো. নজরুল ইসলাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম মহিলা পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মোরশেদা আক্তার, পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটির সি. সহ-সভাপতি মো. হাবিব আজম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মামুনুর রশীদ, প্রচার সম্পাদক মো. তাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা মাঈনুদ্দীন, ছাত্রনেতা মো. শহিদুল, মো. রাজু, মো. সাব্বির, মো. রাজ্জাক প্রমুখ।

বক্তাগণ বলেন, ১৮ ই জুন ২০২১ আজকের এই দিনে গতবছর বান্দরবান জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলাধীন তুলাছড়ি পাড়ার মসজিদের ঈমাম নওমুসলিম শহীদ ওমর ফারুক ত্রিপুরাকে সন্তু লারমার মদদপুষ্ট পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনী কর্তৃক গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

দেখতে দেখতে একটি বছর পার হয়ে গেলো, কোন আসামি এখনো গ্রেফতার হয়নি। মামলার কোন অগ্রগতি নেই। এমনকি হত্যাকান্ডের শিকার ওমর ফারুক ত্রিপুরার পরিবার পায়নি সরকারি কোনো ধরনের সহায়তাও।

পার্বত্য চট্টগ্রামে সন্ত্রাসী সংগঠন গুলো বাঙালী, সাধারণ পাহাড়িসহ নও মুসলিমদের হত্যা করছে, খুন, গুম অব্যাহত রেখেছে। রোয়াংছড়ির তুলাছড়িতে নও মুসলিম হওয়া ৩০টি পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় আছে। অবিলম্বে নও মুসলিম পরিবার গুলোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।

পাহাড়ের মানুষ এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীদের থেকে মুক্তি চায়। পাহাড়ে শান্তি আনতে হলে অবিলম্বে সশস্ত্র সংগঠন গুলোর কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। পাহাড়ে আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলো না থাকলে অত্র অঞ্চলে শান্তির সুবাতাস বইবে।

অবিলম্বে ওমর ফারুক ত্রিপুরাসহ পার্বত্য চট্টগ্রামে আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন জেএসএস ও ইউপিডিএফ কর্তৃক হত্যাকান্ডের শিকার হওয়া সকল খুনীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।

সভা শেষে ওমর ফারুক ত্রিপুরার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবন জেলার রোয়াংছড়ি ইউনিয়নের তুলাবন ছড়া গ্রামের ওমর ফারুক ত্রিপুরা ২০১৪ সালে ইসলাম গ্রহণ করেন। ইসলাম গ্রহণের পর তার মাধ্যমে ওই এলাকার আরও ৩০টি পরিবার ইসলাম গ্রহণ করে। ওই এলাকায় তিনি নিজ উদ্যোগে তৈরী করেছেন একটি মসজিদ।তিনি সেই মসজিদের ইমাম।

ওমর ফারুকের এই ইসলাম গ্রহণ ও অন্যদেরকে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে ইসলামে দীক্ষিত করাটাকে পছন্দ হয়নি দেশদ্রোহী উপজাতীয় সন্ত্রাসী ও খ্রিস্টান মিশনারীদের।

পশ্চিমাদের পৃষ্ঠপোশকতা পরিচালিত খ্রিস্টান মিশনারীদের ইন্দনে গত ১৮ জুন ২০২১  নওমুসলিম ওমর ফারুক ত্রিপুরাকে নির্মমভাবে হত্যা করে ভিন্ন দেশদ্রোহী উপজাতীয় সন্ত্রাসীরা।

ঘটনার এক বছর অতিবাহিত হলেও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি প্রশাসন এবং এমনকি হত্যাকাণ্ডের শিকার ওমর ফারুক ত্রিপুরার পরিবার পায়নি সরকারি কোনো ধরনের সহায়তাও।

দেশের সংবিধান মোতাবেক স্বাধীনভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামে বিভিন্ন ধর্মের ধর্মপ্রচারকগণ তাদের ধর্মের প্রচার ও প্রসার দীর্ঘ সময় ধরে চালিয়ে যাচ্ছেন, যার ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের অনেক বড় একটি অংশ ইতোমধ্যে তাদের পূর্ব পুরুষদের আচরিত বৌদ্ধ, হিন্দু ধর্ম বা প্রকৃতি পূজা ত্যাগ করে খ্রিস্টান ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছেন। তাতে কেউ বাধা দেয়নি।

Exit mobile version