parbattanews

রাঙামাটিতে কার্তিক বৈদ্যের বিরুদ্ধে ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

Kartik boddo pic1

স্টাফ রিপোর্টার:

রাঙামাটিতে কার্তিক বৈদ্য ওরফে ক্রাইম রিপোর্টার বাবু ভাই নামে চট্টগ্রামের ভুয়া সাংবাদিক পরিচয়ধারী এক প্রতারকের বিরুদ্ধে ৩৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গ্রেফতারের পর জামিন পেয়ে আবার গোপন স্থান থেকে প্রতিনিয়ত বাদীকে হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। ঘটনাটি রাঙামাটি শহরে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।

বাদীপক্ষের মামলা ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রতারক কার্তিক বৈদ্য ২০১৩ সালে সরকারি নিলামের বৈধ কাঠ সরবরাহ করার নামে চিরঞ্জীব চাকমা নামে স্থানীয় এক পাহাড়ী কাঠ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রতারণা করে ৩৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। কিন্তু কোনো রকম কাঠ সরবরাহ না করে সব টাকা আত্মসাত করেন কার্তিক বৈদ্য ওরফে ক্রাইম রিপোর্টার বাবু ভাই। এতে প্রতারণার খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত হন চিরঞ্জীব চাকমা।

পরে রাঙামাটি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে বাদী হয়ে কার্তিক বৈদ্যের বিরুদ্ধে একটি প্রতারণা মামলা (সিআর মামলা নং-০৫/২০১৩, ধারা:৪২০/৪০৬ দ.বি.) করেন রাঙামাটি শহরের দক্ষিণ কালিন্দীপুরের বাসিন্দা মৃত হেমন্তু কৃমার চাকমার ছেলে চিরঞ্জীব চাকমা।

আসামি কার্তিক বৈদ্য চট্টগ্রামের খুলশী থানার কৈবল্য ধাম বিশ্ব কলোনির এম ব্লকের বাসিন্দা ক্ষেত্র মোহন বৈদ্য’র ছেলে। কার্তিক বৈদ্যের চাঞ্চল্যকর এ প্রতারণার ঘটনাটি নিয়ে ২০১৫ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি মাসে একটি চাঞ্চল্যকর বিশেষ প্রতিবেদন প্রচার করে ইন্ডিপেন্ডেট টেলিভিশনের তালাশ টিম।

এদিকে মামলার প্রায় দীর্ঘ আড়াই বছর পর ২০১৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম থেকে আসামিকে গ্রেফতার করে চট্টগ্রামের আকবর শাহ থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পর আকবর শাহ থানা পুলিশ থেকে রাঙামাটি জজ আদালতে হস্তান্তর করলে আসামি কার্তিক বৈদ্যকে রাঙামাটি জেলা কারাগারে জেলহাজতে পাঠান আদালত। ওই সময় আসামিপক্ষ আটক কার্তিক বৈদ্যের জামিনের জন্য কয়েক দফায় আবেদন করলেও জামিন নামঞ্জুর করেন রাঙামাটির চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত। পরে দীর্ঘ প্রায় আট মাস পর হাইকোর্টে আবেদন করলে মামলাটির ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিয়ে আসামি নিরাপত্তা সূত্রে একই সালের ১ সেপ্টেম্বর কার্তিক বৈদ্যকে জামিন দেয়ার আদেশ দেন হাইকোর্ট।

মামলার বিষয়ে বাদী চিরঞ্জীব চাকমা বলেন, আসামি কার্তিক বৈদ্য হাইকোর্ট থেকে জামিন পায়। কিন্তু হাইকোর্ট মামলার ছয় মাসের স্থগিতাদেশ দিলেও জামিনের পর রাঙামাটির আদালতে একবারও হাজিরা দিতে আসেনি কার্তিক বৈদ্য।

অন্যদিকে মামলার স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১ মার্চ। এই সুযোগে মামলাটি রাঙামাটি থেকে চট্টগ্রামের আদালতে স্থানান্তর করতে নানা তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে সে। চট্টগ্রামে মামলা চালে গেলে আমার পক্ষে কোনো রকম নিরাপত্তা ও সামর্থ্য থাকবে না। কারণ, জামিন পাওয়ার পর থেকে মামলা প্রত্যাহার করে নিতে আমার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা দেয়াসহ নানা ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছে আসামি কার্তিক বৈদ্য।

এ ব্যাপারে কার্তিক বৈদ্যের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে আগে তার ব্যবহার করা একাধিক মোবাইল ফোন নম্বরে কল দিলেও সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। তবে মামলায় তার পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, কার্তিক বৈদ্য এক-দেড় বছর আগে আমার মক্কেল ছিলেন বটে। কিন্তু হাইকোর্ট থেকে জামিন পাওয়ার পরে আর আমার সঙ্গে কোনো রকম যোগাযোগ করেননি তিনি।

Exit mobile version