parbattanews

রাঙামাটিতে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্রঐক্যের রাস্তা অবরোধ, প্রথম আলো পত্রিকায় অগ্নিসংযোগ

রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি:
পার্বত্য ভূমি সমস্যার সমাধান, শান্তি চুক্তির বৈষম্যমূলক ধারাগুলো বাতিল, পার্বত্যাঞ্চলে বিশেষ অভিযানের মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারসহ পাবর্ত্যাঞ্চল নিয়ে ষড়যন্ত্রকারিদের রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বিচারের আওতায় আনার দাবিতে রাঙামাটি শহরে মানববন্ধন, স্মারকলিপি পেশ ও ঘন্টাব্যাপী রাস্তা অবরোধ করে সমাবেশ করেছে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র ঐক্য পরিষদ।

বুধবার বেলা বারটার সময় শহরের বনরূপা বাজারে এই কর্মসূচি পালন করে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। এসময় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির রাঙামাটি জেলা সভাপতি উজ্জল পাল ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইউনুছসহ নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, “বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই, বাংলাদেশে বসবাসকারী সবাই বাঙ্গালী” সরকারের এই ঘোষনায় জনমনে আশার সঞ্চার হলেও সরকারের শরিক কতিপয় তথাকথিত মস্কোপন্থী রাশেদ খান মেনন(এমপি) গং আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় কমিটি (ককাস) গঠনের মাধ্যমে পাহাড়ীদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে পার্বত্য জনমনে উস্কানি সৃষ্টিসহ নানা বিভ্রান্তি চড়াচ্ছে। যার ফলে পার্বত্যাঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট সহ দেশের অখন্ডতাকে হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।

অন্যদিকে পার্বত্যাঞ্চলে মানবধিকার সংরক্ষণ ও উন্নয়নের নামে পূর্বতিমূর ও দক্ষিণ সুদানের মতো আলাদা রাষ্ট্র বানানোর মূল হোতা লর্ড এরিক এ্যাভব্যুরির সংগঠন সিএইচটি কমিশন এবং উক্ত সংগঠনের বাংলাদেশে নিয়োগপ্রাপ্ত কো-চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল এর নেতৃত্বে স্বপন আদনান, মেজবাহ কামাল, ইয়াসমিন হক, মেঘনা গুহঠাকুরতা, ইফতেখারুজ্জামান, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানসহ কতিপয় বুদ্ধিজীবি, উপজাতীয় নেতাদের মদদদাতা হিসাবে পার্বত্যাঞ্চলে অশান্ত পরিস্থিতি সৃষ্টির লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পার্বত্য চুক্তি নিয়ে বাড়াবাড়ি, তথাকথিত আদিবাসী ষড়যন্ত্র, পার্বত্য ভূমি নিয়ে ষড়যন্ত্র, পার্বত্য পুলিশ প্রশাসন উপজাতীয় করণের ষড়যন্ত্র, আন্তর্জাতিকভাবে সম্মানিত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পার্বত্য বাঙ্গালীদেরকে মানহানী করার ষড়যন্তে লিপ্ত রয়েছে। উপজাতীয় নেতাদের কল্পিত পার্বত্যাঞ্চল নিয়ে আলাদা রাষ্ট্র “জুমল্যান্ড” গঠনের লক্ষ্যে এ নির্লজ্জ কার্যক্রম পার্বত্য বাঙ্গালীরা যে কোন মূল্যে প্রতিহত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

এছাড়া গত শনিবার ১৮মে ২০১৩ তারিখে সিরডাপ মিলনায়তনে পার্বত্য চট্টগ্রাম কমিশনের কো-চেয়ারম্যান সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে সভার আলোচনা পার্বত্য জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের অখন্ডতা রক্ষার্থে কোন ষড়যন্ত্রকারী রক্ত চক্ষুর নিকট ভীত না হয়ে তথাকথিত আদিবাসী ষড়যন্ত্রকারী, পার্বত্য ভূমি নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী, গর্বিত সেনাবাহিনী ও পার্বত্য বাঙ্গালীদের মানহানীর ষড়যন্ত্রকারীদেরকে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনা এবং পার্বত্য বাঙ্গালীদের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করণ ও বাংলাদেশ সংবিধানের প্রচলিত আইন অনুযায়ী পার্বত্য ভূমি সমস্যার সুষম সমাধানের কোন বিকল্প নেই।

সমাবেশ শেষে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত বাঙ্গালীদের নিয়ে একটানা বিরোধী সংবাদ পরিবেশন করার প্রতিবাদে দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় অগ্নিসংযোগ করে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতাকর্মীরা।

এর আগে রাঙামাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে জেলা প্রশাসক মোস্তফা কামালের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে ছয় দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি পেশ করা হয় সংগঠনটির পক্ষ থেকে। দাবি গুলো হলো -(১)পার্বত্য বাঙ্গালীদেরকে সাংবিধানিক অধিকার দিতে হবে,(২) পার্বত্য শান্তি চুক্তির বৈষম্যমূলক ধারাগুলি বাতিল করতে হবে, (৩) বাংলাদেশ সংবিধানের প্রচলিত আইন অনুযায়ী পার্বত্য ভূমির সমস্যার সমাধান করতে হবে, (৪) পার্বত্যাঞ্চল নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী রাশেদ খান মেনন, সুলতানা কামাল গংদের দেশদ্রোহী মামলায় বিচারের আওতায় আনতে হবে, (৫) পার্বত্য অঞ্চল থেকে প্রত্যাহারকৃত সেনা ক্যাম্প পূনরায় স্থাপন পূর্বক পার্বত্য অঞ্চল থেকে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ও (৬) চিহ্নিত চাদাঁবাজ ও শান্তি শৃংখলা বিঘ্নকারি উপজাতীয় গডফাদারদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করার দাবি জানানো হয়েছে।

এদিকে সমাবেশ শেষে বনরূপা বাজার থেকে সংগঠনটির রাঙামাটি জেলা সভাপতি উজ্জ্বল পালকে রাঙামাটি কোতয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম পুলিশের গাড়িতে তুলে থানায় নিয়ে গেলেও ঘন্টা খানেক পরে তাকে ছেড়ে দেয়।

Exit mobile version