রাঙামাটিতে মাসব্যাপী কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান
রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে দানানুষ্ঠান কঠিন চীবর দান। প্রতিবছর টানা তিনমাস ভান্তেদের বর্সাবাস শেষে প্রবারণা পূর্ণিমার পরদিন থেকে এ দানকার্য অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সোমবার (১০ অক্টোবর) সকালে রাঙামাটির আসনে সংসদ সদস্য প্রথমে উলুছড়া ছাবা বৌদ্ধ বিহার এবং পরে আসামবস্তির বুদ্ধাংকুর বৌদ্ধ বিহারে গিয়ে দান কার্যে অংশ নেন।
এবার উলুছড়ি ছাবা বৌদ্ধ বিহারে ১৫তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সকালে বিহার প্রাঙ্গণে পঞ্চশীল প্রার্থনা, বুদ্ধ মূর্তি দান, সংঘ দান, অষ্ট পরিস্কার দান, আকাশপ্রদীপ দান, চীবর দানসহ বিভিন্ন দানের মাধ্যমে চীবর দানানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন পার্বত্য ভিক্ষু সংষের সভাপতি শুদ্ধালংকার মহাথের, ছাবা বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শুভদর্শী মহাথের। পরে ভিক্ষুসংঘকে চীবর উৎসর্গ করার মধ্যদিয়ে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, অনুষ্ঠানের প্রধান সদ্ধর্মালোচক পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ বাংলাদেশ রাঙামাটি সদর সভাপতি পূণ্যজ্যোতি মহাথের, ছাবা বৌদ্ধ বিহার অধ্যক্ষ শুভদর্শী মহাথের, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর রাঙামাটি সহকারী কমান্ড্যান্ট আব্দুল মুত্তাকীম, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য প্রিয়নন্দ চাকমা, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টিস জয়সেন তঞ্চঙ্গ্যা, পৌরসভার মেয়রের প্রতিনিধি ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সন্তোষ কুমার চাকমা, বিহার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনুচিং মারমা, তথ্য ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্মল বড়ুয়া মিলনসহ, বিভিন্ন বিহার থেকে আগত ভান্তে-শ্রামণ, বিহার পরিচালনার কমিটির সদস্য, উপাসক-উপাসিকা, দায়ক-দায়িকা, সাংবাদিক এবং গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।
উল্লেখ্য, মহামতি বুদ্ধের প্রজ্ঞাদীপ্ত শিক্ষা ‘বর্ষাবাস তথা বর্ষাব্রত’ পালনের সমাপনী অনুষ্ঠান শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা এবং দানোত্তম কঠিন চীবর দান উৎসব হলো বৌদ্ধদের অতি পবিত্র ও মাহাত্ম্যপূর্ণ ধর্মীয় অনুষ্ঠান। এ পূত-পবিত্র অনুষ্ঠান-উৎসবের মধ্যদিয়ে বৌদ্ধরা তথাগত গৌতম বুদ্ধের পরম কল্যাণময় শিক্ষা চর্চার ব্রত হয়। হিংসা ক্রোধ ও মোহের বদলে প্রেম দয়া ও ক্ষমায় মানুষের কল্যাণে তপস্যা ভিক্ষুদের। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্রকে বলা হয় চীবর। তাই এ বৌদ্ধ সন্ন্যাসীদের পরিধেয় বস্ত্রের অভাব দুর করতেই কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান। তাই বৌদ্ধদের কাছে প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান অত্যন্ত গুরুত্ববহ পুণ্যানুষ্ঠান।