parbattanews

রাঙামাটিতে সাংবাদিক জামালের কবরে শ্রদ্ধাঞ্জলি ও বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত

Jamal7,03,2016

স্টাফ রিপোর্টার:

২০০৭সালে ৭ মার্চ, এদিনে রাঙামাটির শহরের বনরূপা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে সাংবাদিক জামালকে সমাহিত করা হয়। তাই প্রতি বছরের মত সোমবার তার পরিবারের পক্ষ থেকে বিশেষ দোয়া ও কবর জেয়ারতের আয়োজন করা হয়। কাঠালতরী মসজিদের মোয়াজ্জেম এ বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন।

এ সময় সাংবাদিক জামালের বড় ভাই মো. সালাউদ্দিন করিম (আবু), মো. এম কামাল উদ্দিন আকাঁশ, মো. জাবেদ উদ্দিন হৃদয়, বোন বানাছা, সাংবাদিক মহুয়া জান্নাত মনি, ছোট বোন সাংবাদিক ফাতেমা জান্নাত মুমু ও মাহাফুজ আলম সজীব বিশেষ দোয়ায় অংশগ্রহণ করেন।

এর আগে সাংবাদিক জামালে কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন তার পরিবারের সদস্যরা। এ সময় জামালের শূন্যতা তার পরিবারের মাঝে হাহাকার সৃষ্টি করে। স্বজনদের বুকফাটা কান্না আবারও কবরস্থানের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে। তাদের আহাজারি আবারও রাঙামাটিবাসীকে স্মরণ করিয়ে দেয় ২০০৭সালের সাংবাদিক জামাল হত্যার ঘটনার কথা।

এ ব্যাপারে জামালের ছোট বোন সাংবাদিক ফাতেমা জান্নাত মুমু বলেন, যারা আমার ভাইজানকে হত্যা করেছে তাদের বিচার চাই। হত্ত্যাকারীদের বিচার যদি পৃথিবীর বুকে না হয়, তাহলে আখিরাতে অবশ্যই হবে। আল্লাহর উপর এ বিশ্বাস নিয়ে এখনো বেচেঁ আছেন আমার মা।

এদিকে জামাল হত্যাকাণ্ডের কথা মনে করে তার সহকর্মীর মাঝে জন্ম দেয় বুকভরা কান্নার। বার বার জ্বলে ওঠে বেদনার আগুন। তবুও সবাই অসহায়।

অন্যদিকে গত শুক্রবার সাংবাদিক জামালের আত্মার মাগফিরাত কামনায় রাঙামাটি শহরের বনরূপা জামে মসজিদ ও কাঁঠাল তলী জামে মসজিদে মিলাদসহ বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

তথ্য সূত্রে জানা গেছে, তরুণ এই সাংবাদিক অতি অল্প বয়স থেকে দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। তিনি মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত পুরো ১০বছর পেশাগত কাজে দক্ষতার ছাপ রেখেছিলেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে কারো রক্ত চক্ষু তাকে থামিয়ে দিতে পারেনি। আর তাই অকালে চির বিদায় নিতে হয়েছে তাকে। একজন পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে তিনি যেমন সফল হয়েছেন তেমনি একজন ভালো আলোক চিত্রী সাংবাদিক হিসেবেও তার বহুল পরিচিতি ছিল শহরে। তিনি রাঙামাটির মানুষের মাঝে অতি পরিচিত মুখ ছিলেন সাংবাদিক জামাল উদ্দিন নামে। পেশাগত জীবনে জামাল উদ্দিন পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচার বহুল দৈনিক গিরিদর্পন পত্রিকায় প্রতিবেদককের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে তিনি বেসরকারি টিভি চ্যানেল এনটিভি, বার্তা সংস্থা আবাস, দৈনিক বর্তমান বাংলা, দৈনিক করতোয়ায় কাজ করেছিলেন।

জামাল উদ্দিন ১৯৮৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাঙামাটি শহরের কাঠালতলী এলাকায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। জন্মের ৩ বছল পর জামাল উদ্দিনের পিতা আব্দুল আলম (ওয়াশিংটন) মারা যান । পিতার মৃত্যুর পর জামাল উদ্দিন অতি কষ্টে লেখা পড়া শেষ করে পেশাগত জীবনে সফল হতে পেরেছিলেন। তিনি বাকি জীবনেও মানুষের  স্নেহ আর ভালোবাসায় বেঁচে থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এই সুন্দর পৃথিবীতে বাচঁতে দিল না কতগুলো নিষ্ঠুর সন্ত্রাসী। সাংবাদিক জামাল উদ্দিন ২০০৭সালের জন্মদিনের ১৩ দিনের মাথায় রহস্য জনক কারণে খুন হন রাঙামাটি পর্যাটন এলাকার হেডম্যান পাহাড়ে। সেখানে মেরে ফেলে রেখে যায় ঘাতকরা।

Exit mobile version