parbattanews

রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়নে যে কোন ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার ঘোষণা

Ranmgamati Mohashomabesh pic0 1

ফাতেমা জান্নাত মুমু, রাঙামাটি :

রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কাজে যে কোন ধরনের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের নেতারা। নেতৃবৃন্দরা বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর দীর্ঘ দিনের প্রত্যাশা পূরণে সরকার ঘোষিত রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন কাজে বাধা দিতে পাহাড়ের একটি কুচক্রি মহল ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। কারণ তারা চায় না পার্বত্যাঞ্চলের ছেলে মেয়েরা উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হোক। তাই পার্বত্যাঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিবাদ মুখর হয়ে উঠেছে। এখন পার্বত্যবাসী সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে প্রস্তুত। সরকারের এ উদ্যোগ নস্যাৎ হতে দেয়া হবে না বলে নেতৃবৃন্দ হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করেন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় শহরের বনরূপা চত্বরে এক মহাসমাবেশে সংগ্রাম পরিষদের নেতারা এ ঘোষনা দেন।
রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম মুন্না’র সভাপতিত্বে মহাসমাবশে বক্তব্য রাখেন, সংগ্রাম পরিষদের সদস্য সচিব মামুর রশিদ মামুন, রাঙামাটি পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম ভূট্টো, পার্বত্য নাগরিক পরিষদের আহবায়ক বেগম নূর জাহান, আওয়ামী লীগ নেতা সাখাওয়াৎ হোসেন রুবেল, জেলা যুবদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম শাকিল, সমাজ সেবক এ্যাডভোকেট মুক্তার আহমেদ, মহিলা যুব লীগের নেত্রী ফুরমতি ত্রিপুরা প্রমূখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনগণের মৌলিক অধিকার। এ অধিকার বাস্তবায়নের লক্ষে পাহাড়ি-বাঙ্গালী সকল ধর্ম বর্ণ দলমত সকলে ঐক্যবদ্ধ। আরো বলেন প্রায় ৬ লক্ষাধিক পার্বত্য নাগরিকদের এ জেলায় না আছে উচ্চ শিক্ষার জন্য কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, না আছে জরুরী মুহুর্তে উন্নত চিকিৎসা পাওয়ার কোন ধরণের সুযোগ। অথচ এ দুটোই একজন নাগরিক হিসাবে আমাদের মোলিক অধিকার। পার্বত্যঞ্চলের অবহেলিত জনগোষ্ঠির প্রত্যাশা রাঙামাটিতে মেডিক্যাল কলেজ এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন হোক। এতে করে যেমনি আমরা পাবো অসংখ্যাক অভিজ্ঞ ডাক্তার তেমনি আমাদের সন্তানারা পাবে উচ্চ শিক্ষার এক অপুর্ব সুযোগ।

এই দাবী কোন দল বা সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে নয়। পার্বত্যবাসীর প্রত্যাশা ও দাবী পুরনের লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী গত ২৩ ফেব্রয়ারী ২০১৪ইং তারিখে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পর থেকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল ও একটি আঞ্চলিক দল চায়না এ অঞ্চলের আপাময় জনতার মধ্যে উচ্চ শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়ুক। পার্বত্যঞ্চলের আগামী প্রজন্মকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে দিতে ভয় পায়। যা সভ্য জাতি হিসাবে আমাদের হতবাক করেছে। রাঙামাটিবাসীকে সাথে নিয়ে যে কোন মুল্যে এ চক্রান্ত রুখে দিয়ে রাঙামাটি মেডিক্যাল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত বাস্তবায়ন করার বদ্ধ পরিকর বলে ঘোষনা দেন। আগামীতে আরো কঠোর কর্মসুচীতে শান্তিপুর্ণ ভাবে অংশগ্রহনের আহবান জানান বক্তারা। শান্তিপুর্ণ মহাসমাবেশের বক্তব্য বেসরকারী টিভি চ্যানেলে লাইভ দেখানো হয়।

রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাস্তবায়ন সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক জাহাঙ্গীর আলম মুন্না বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে এই একটি দাবীর পক্ষে আওয়ামীলীগ-বিএনপিসহ সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। পার্বত্যবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙামাটিতে মেডিকেল কলেজ ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। একটি কুচক্রি মহল তা বাস্তবায়নের বাধাগ্রস্ত করছে। তাই রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় যত দিন পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হবে না, ততদিন পর্যন্ত সংগ্রাম পরিষদ আন্দোলন চালিয়ে যাবে।

মহাসমাবেশ শুরু করার আগে রাঙামাটি শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে সকল ধর্ম ,বর্ণের ও সকল পেশার খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে পার্বত্য নাগরিকরা সমাবেশে যোগদান করে। প্রচন্ড গরম উপেক্ষা করে নারী পুরুষ মহাসমাবেশ স্থল লোক সমাবেশ ছিল পরিপুর্ণ। সমাবেশস্থলকে ঘিরে চারপাশ থেকে নামতে থাকে মানুষের ঢল। সবস্তরের নারী-পুরুষ মিছিল নিয়ে দলে দলে যোগ দেয় সমাবেশস্থলে। সমাবেশস্থল পরিণত হয় জন সমুদ্রে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ফেব্রুয়ারী বর্তমান সরকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাঙামাটিতে সফরকালে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

Exit mobile version