রাঙামাটি হানাদার মুক্ত দিবস আজ

fec-image

আজ ১৭ ডিসেম্বর, রাঙামাটি পাক হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে এই দিনে রাঙামাটি শক্র মুক্ত হয়। বিজয় দিবসে পাকিস্তানী সৈন্যরা চলে গেলেও রাঙামাটিতে থেকে যায় তাদের দোসর মিজো বাহিনী। ফলে পার্বত্য এ জেলা মুক্ত হতে এক দিন বেশি সময় নেয়। মুক্তিযোদ্ধারা মিজোদের হটিয়ে একদিন পর ১৭ ডিসেম্বর রাঙামাটিতে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন।

১৯৭১ সালের মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মে মাসে পাক বাহিনীর সৈন্যরা রাঙামাটি, রামগড় ও বান্দরবান দখল করে। এরপর মুক্তিযুদ্ধের ১নং সেক্টরের আওতায় সর্বপ্রথম ৫ মে ২৫ জন সদস্যের পার্বত্য চট্টগ্রামের মুক্তিযোদ্ধা দল গঠন করা হয়। এ দলকে পরবর্তীতে কোম্পানী হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে হেমদা রঞ্জন ত্রিপুরাকে কোম্পানী কমান্ডার নিযুক্ত করা হয়। শুরু হয় পাক বাহিনীর সঙ্গে গেরিলা যুদ্ধ। দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের একেবারে শেষ সময়ে ১৪ ডিসেম্বর রাঙামাটির বরকলে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ২টি যুদ্ধ বিমানযোগে পাকবাহিনীর সামরিক অবস্থানের উপর আক্রমন চালায়।

১৫ ডিসেম্বর মিত্র ও মুক্তিবাহিনী বরকলে পাক হানাদার বাহিনীর উপর আক্রমন শুরু করে। এদিন সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত উভয় পক্ষের যুদ্ধ চলে। যৌথ বাহিনীর আক্রমনে টিকতে না পেরে পাক সৈন্যরা পিছু হটে এবং মিত্র ও মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা অগ্রসর হয়ে রাঙামাটি দখল করে নেয়।

১৬ ডিসেম্বর আত্মসর্মপনের দিনে পাক হানাদার বাহিনী সরে গেলেও তাদের মিত্র বাহিনী হিসেবে লুসাই ও মিজো সৈন্যরা রাঙামাটিতে অবস্থান নেয়। পাক হানাদার বাহিনীর সহযোগী উপজাতি মিজো বাহিনীর কিছু সৈন্য থেকে যাওয়ায় রাঙামাটি মুক্ত হতে ১দিন বেশি সময় নেয়।

মুক্তিবাহিনীর সাথে টিকতে না পেরে রাঙামাটি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয় মিজো বাহিনী। বিজয় দিবসের একদিন পর ১৭ ডিসেম্বর রাঙামাটি সম্পূর্ণ শক্রমুক্ত হয়। ঐদিনেই পুরাতন কোর্ট বিল্ডিং মাঠে প্রথম স্বাধীন দেশের পতাকা উড়ান মুক্তিযোদ্ধারা। এর একদিন পর ১৮ ডিসেম্বর মিত্র বাহিনীর পূর্বাঞ্চল কমান্ডের অধিনায়ক জেনারেল সুজন সিং ওভান ও শেখ ফজলুল হক মনি ভারতীয় হেলিকপ্টার যোগে রাঙামাটির পুরাতন কোর্ট বিল্ডিং মাঠ বর্তমান শহীদ শুক্কুর স্টেডিয়ামে অবতরণ করেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।

১৭ ডিসেম্বর স্বাধীন দেশের পতাকা উত্তোলনের সময় যুদ্ধের ধবংস স্তুপের মধ্যে দিয়ে স্বজন হারাদের বিয়োগ ব্যাথা ভুলে হাজার হাজার উৎফুল¬ জনতা-সেদিন রাস্তায় নেমে আসে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন