parbattanews

রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত: উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি

পার্বত্যনিউজ ডেস্ক:

রাজধানী ঢাকায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ শনিবার সকাল ৮টায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে। ঈদের এ জামাতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে অংশ নেন।

ঢাকায় বৃষ্টি শুরুর আগেই জাতীয় ঈদগাহের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের জ্যেষ্ঠ পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মিজানুর রহমান ইমামতি করেন। পরে খুৎবা পাঠ ও মোনাজাত পরিচালনা করেন তিনি।

প্রধান জামাতে রাষ্ট্রপতি ছাড়াও মন্ত্রিসভার সদস্যরা, সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিরা, সংসদ সদস্যরা, সিনিয়র রাজনৈতিক নেতারা, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের লাখো মানুষ উৎসব আমেজে সেখানে নামাজ আদায় করেন।

নামাজ শেষে রাষ্ট্রপতি উপস্থিত সবার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। তিনি ৭টা ৪৯ মিনিটে ঈদগাহে আসেন।

রাষ্ট্রপতি, বিচারপতি, মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, বিভিন্ন মুসলিম বিশ্বের কূটনীতিকদের এবং নারীদের জন্য আলাদা নামাজের ব্যবস্থা ছিল। বড়দের পাশাপাশি শিশু-কিশোররাও শরিক হয় এ জামাতে।

নামাজ শেষে মোনাজাতে প্রকৃতিক দুর্যোগসহ সব ধরনের বালা-মুসিবত থেকে দেশ ও জাতির মুক্তি ও কল্যাণ কামনা করা হয়। বিশেষ করে দেশের উত্তর ও দক্ষিণ অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সুরক্ষার জন্য আল্লাহর কাছে রহমত প্রার্থনা করা হয়।

এছাড়া মিয়ানমারে নিপীড়িত রোহিঙ্গাসহ বিশ্বের মুসলমানদের জুলুম-অত্যাচার থেকে মুক্ত করে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার দোয়া করা হয়।

এ সময় ‘আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো ঈদগাহ এলাকা। গুনাহ মাফের জন্য দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেন মুসল্লিরা। নামাজের আগে বয়ানের সময় ইমাম বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী চলমান সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

পশু কোরবানি যেন হযরত ইব্রাহিম (আ.)-এর মহান আত্মত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে নিজের ভেতরের পশুত্বকে পরিহার ও আল্লাহর অনুগ্রহ লাভ করা যায় সেই দোয়া করা হয়।

মোনাজাতে রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের বাবা-মায়ের জন্যও দোয়া করেন মাওলানা মিজানুর রহমান। এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শহীদ পরিবারের সদস্যদের রূহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

এছাড়া বর্তমানে দেশের উন্নয়ন তরান্বিত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানানো হয় প্রধান জামাত থেকে।

সবশেষে পরস্পরের সঙ্গে কোলাকোলি ও কুশল বিনিময়ের মাধ্যমে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সবাই।

ঈদের জামাত উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে রমনা পার্ক সংলগ্ন মৎস্য ভবন মোড়, পল্টন মোড় হয়ে প্রেসক্লাব, গুলিস্তান থেকে ফজলুল হক (মুসলিম) হলের সামনে দিয়ে, দোয়েল চত্বর থেকে সুপ্রিম কোর্টের মাজার গেট দিয়ে জাতীয় ঈদগাহর দিকে সকাল সাড়ে ৬টা থেকে দল বেঁধে মুসল্লিরা আসতে শুরু করেন। তাদের র্যােবের নিরাপত্তা চৌকি পার হয়ে ঈদগাহে প্রবেশ করতে হয়।

এদিকে, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, কারাগার ও সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে বলে জানা গেছে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত ঈদের এ প্রধান জামাতে নারী ও বিদেশি কূটনীতিকদের নামাজ আদায়ে বিশেষ ব্যবস্থা ছাড়াও আগত মুসল্লিদের জন্য খাবার পানি ও মোবাইল টয়লেটেরও বিশেষ ব্যবস্থা ছিল।

অন্যদিকে, রাজধানীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয় বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায়। বায়তুল মোকাররম মসজিদে প্রতি ১ ঘণ্টা অন্তর একটি করে মোট ৫টি ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে ঈদুল আজহার নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে মুসল্লিদের সুবিধার্থে জাতীয় ঈদগা এবং বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যাপ্ত পানি ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।

এছাড়াও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উদ্যোগে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এতে মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও সংসদ সদস্যরা সহ সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এবং এলাকার সাধারণ মানুষও অংশ নেন।

Exit mobile version