রাজস্থলীতে করোনা সংক্রমনরোধে সেনাবাহিনীর আপ্রাণ চেষ্টা

fec-image

পুরো বিশ্বে এখন একটি আতংকের নাম মহামারি করোনা ভাইরাস (কোভিট-১৯)। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের সর্বশেষ জেলা রাঙামাটিতেও এর সংক্রমন ছড়িয়ে পড়েছে। রাঙামাটি জেলায় করোনা ছড়ালেও বর্তমানে এ রাজস্থলী উপজেলা এখনো করোনামুক্ত রয়েছে।

সর্বশেষ তথ্য মতে কাপ্তাই বিলাইছড়ি এবং রাংগুনিয়াতে করোনা শনাক্ত হয়েছে। ফলে রাজস্থলী উপজেলাকে করোনামুক্ত রাখতে প্রথম থেকেই কঠোর অবস্থানে গিয়েছে ২৩ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিঃ কাপ্তাই জোনের অধীনে রাজস্থলী সাব জোন ও বাঙ্গালহালীয়া সাব জোন। উপজেলাকে করোনামুক্ত রাখতে সেনাবাহিনীর পাশাপাশি আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশবাহিনী সহ সরকারি দপ্তর সমূহ। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় করোনাকে জয় করতে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী রাজস্থলী সাব জোন।

রাজস্থলী সাব জোনের অধিনায়ক ক্যাপ্টেন নাজমুস সাকিব, ক্যাপ্টেন দেবাশিষ সরকার, লেফটেন্যান্ট মাহাদি ও সেনাবাহিনীর বিভিন্ন পদের কর্মরত কর্মকর্তা সৈনিকবৃন্দরা রাজস্থলীকে করোনামুক্ত রাখতে সর্বোপরি রাজস্থলীর মানুষের কল্যাণে প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশে যেদিন প্রথম করোনা শনাক্ত হয় তারাই সেইদিন থেকেই রাজস্থলীতে করোনা সংক্রমন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয় এ উপজেলার করোনা পরিস্থিতে কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করা মানুষগুলোকে পৌঁছে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীর উপহার স্বরূপ ত্রাণ সামগ্রী। রাজস্থলী উপজেলার তিনটি ইউনিয়নে এই পর্যন্ত সেনাবাহিনী অসহায় পরিবারের মাঝে পৌছে দিয়েছেন এই ত্রাণ সামগ্রী। রাজস্থলীর মানুষকে করোনা মুক্ত রাখতে এবং হাসি খুশি ও শান্তিতে রাখতে যেই যেই পদক্ষেপ গুলো গ্রহণ করা জরুরী সবগুলো পদক্ষেপ নিয়েছেন রাজস্থলী সাব জোনের সেনা সদস্যরা।

ক্যাপ্টেন দেবাশিষ সরকার জানান, সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকল্পে আমরা শুরু থেকে হাটবাজার বন্ধ রেখেছি, নিয়ন্ত্রণ রেখেছি সড়কেও। জনগণকে ঘরে রাখতে পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করে আসছি। করোনা মোকাবেলায় জনপ্রশাসনের সাথে সেনাবাহিনী অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছে। সেনাবাহিনী বিভিন্ন সময় করোনা সচেতনামুলক পেট্রল করে যাচ্ছে, এলাকাকে করোনার প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা করতে। খেঁটে খাওয়া মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে আমরা তাদের সাহায্য সহযোগিতা দিয়ে আসছি। সরকারের আদেশ আমরা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে আসছি।

রাজস্থলী থানা অফিসার ইনচার্জ মফজল আহামদ খান জানান, পুলিশ সদস্যদের সাথে নিয়ে রাজস্থলীর প্রতিটি প্রবেশমুখে আমরা কঠোর নজরদারি রেখেছি।

এ উপজেলায় যাতে বহিরাগত কেউ প্রবেশ করতে না পারে, লোকজন অহেতুক ঘর থেকে বের না হয় সেই লক্ষ্যে পুলিশ সদস্যরা সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে কাজ করে যাচ্ছেন। রাজস্থলীর সাধারণ জনগণ মনে করেন, রাজস্থলীতে করোনা ভাইরাস সংক্রমনরোধে কাপ্তাই জোনের অধীনে রাজস্থলী সাব জোনের এই পদক্ষেপ যুগোপযোগী।

এ বিষয় নিয়ে কাপ্তাই জোনের জোন অধিনায়ক লে. কর্নেল তৌহিদুজ্জামান বিএসপি,পি এসসি জানান, সেনাবাহিনী সকলের বন্ধু সারা বিশ্বে এ মহামারি ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করে আসছে, পার্বত্য অঞ্চলে সন্ত্রাসী এবং চাঁদাবাজদের প্রতিহত করতে বদ্ধপরিকর। ইতির্পুবে এ ২৩ বেঙ্গল রাজস্থলীতে জনসাধারনের যোগাযোগ সন্নিকটে করার জন্য কাপ্তাই খালের উপর ৪০০ ফিটের একটু ঝুলন্তব্রীজ নির্মাণ করে অসাধারণ ভুমিকা রেখেছেন। যাতে এ স্মৃতি সারাজীবন স্বর্ণ অক্ষরে লেখা থাকবে।

কিছুদিন আগে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধনের লক্ষে রাজস্থলীতে একটি জোন কমান্ডার্স কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করে নজির স্থাপন করেছেন। তারই ধারবাহিকতায় সন্ত্রাস ধমনে এ রাজস্থলীতে অসাধারণ ভুমিকা রেখেছেন কাপ্তাই জোন ২৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট। রমজানে কর্মহীন ও অসহায়দের মাঝে ঈদসামগ্রী বিতরণ করা হয়। অপর দিকে পাহাড়ি বাঙ্গালীর সকলের সুবির্ধাতে কাপ্তাই জোনের ব্যবস্থাপনায় ১ মিনিটের বাজারের আয়োজন করেছিলেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী একটি গর্বিত চৌকসদল শান্তি শৃঙ্খলা উন্নয়ন ও সম্প্রীতিবন্ধনের প্রতীক। সারা বিশ্বে শান্তি রক্ষায় তারা অসাধারণ ভুমিকা রেখেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: করোনা, রাজস্থলীতে, সংক্রমনরোধে
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন