ফলোআপ

রাজস্থলীতে গোলাগুলির ঘটনায় নিহতদের লাশ গায়েব!

fec-image

রাঙামাটি জেলার রাজস্থলিতে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) ও মগ লিবারেশন পার্টির(এমএলপি) সংঘটিত গোলাগুলির ঘটনায় হতাহত বেশকিছু লাশের ছবি ও অস্ত্রের ছবি সামাজিক যোযোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলেও নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশ সরেজমিন পরিদর্শন করে কোনো লাশ পায়নি। এমনকি কোনো অস্ত্রও উদ্ধার হয়নি।

উল্লেখ্য ২২ মার্চ সকালে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার পাইন্দং পাড়ায় মগ লিবারেশন পার্টির উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে তাদের তিনজন সশস্ত্র সদস্যকে হত্যা করে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সদস্যরা। উভয় গ্রুপের সংঘর্ষে নিহতদের ছবিগুলো একাধিক সোর্স থেকে গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে এসে পৌঁছায়।

কিন্তু ঘটনাটি কোথায় ঘটেছে তা নিশ্চিত হতে গণমাধ্যম কর্মীদের মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত গলদঘর্ম হতে হয়েছে। রাঙামাটি প্রশাসন থেকে বান্দরবান ও বান্দরবান প্রশাসন থেকে রাঙামাটি বলা হলে গণমাধ্যম কর্মীরা গোলকধাঁধায় পড়ে যায়। মূলত রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার অত্যন্ত দূর্গম সীমান্তে এ ঘটনা সংঘটিত হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগ পর্যন্ত কেউ নিশ্চিত হতে পারেনি।

তবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রাঙামাটি জেলা পুলিশ দাবী করেছে, তারা ঘটনাস্থলে কোনো লাশ বা অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি।

এবং এ বিষয়ে মগ লিবারেশন পার্টি কিংবা জেএসএস উভয় দলের পক্ষ থেকেও কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

রাঙামাটি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অপরাধ) মাহমুদা বেগম বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলেও কোন মরদেহ পাওয়া যায়নি। বান্দরবান এবং রাঙামাটি পুলিশ নিরাপত্তা বাহিনীর সহায়তা সীমান্তে অভিযান পরিচালনা করছে।

স্থানীয় একটি সূত্রে বলা হয়েছে, অন্ধকার হয়ে যাওয়ায় লাশের অনুসন্ধান স্থগিত রয়েছে। তবে ঘটনাস্থলে যৌথবাহিনী অবস্থান করছে। আগামীকাল সকালে আবারো লাশের অনুসন্ধান করা হবে। তবে তাদের ধারণা লাশ ইতোমধ্যে গায়েব করা হয়েছে।

পাহাড়ের সাথে সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞমহলের মতে, পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকাংশ উপদলীয় বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহতদের লাশ পাওয়া যায় না। সন্ত্রাসীরা সুযোগ পেলে তাদের লাশ গায়েব করে ফেলে।

এদিকে লাশ না পাওয়ায় হতাহতের সঠিক সংখ্যাও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেননা, ঘটনাস্থলে বন্দুকযুদ্ধের একধিক ঘটনা ঘটেছে।

প্রসঙ্গত: মঙ্গলবার সকালে রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের বান্দরবান-রাজস্থলীর সীমান্তবর্তী বালুমুড়া পাড়ার সীমান্তবর্তী কেচিপাড়া এলাকায় গভীর জঙ্গলে মগ লিবারেশন পার্টির সদস্যরা টহল দেওয়ার সময় পাহাড় চূড়ায় অবস্থানরত তাদের প্রতিপক্ষ জেএসএস’র সশস্ত্র সদস্যরা গুলি ছুঁড়লে ঘটনাস্থলে মগ লিবারেশন পার্টির তিন সদস্য ঘটনাস্থলে মারা যান।

এ ঘটনায় আরও দু’জন আহত হন। নিহত তিনজনের মধ্যে একজনের নাম-পরিচয় জানা গেছে। নিহত ব্যক্তির নাম অংথোই মারমা (৪৫)। তিনি উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের জামছড়ির থাংকুই পাড়ার থুই খয় মিঙ মারমার ছেলে। নিহত অংথোই মারমা মগ লিবারেশন পার্টির গাইড হিসেবে কাজ করতেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন