রাজস্থলী তাই তং পাড়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে

রাজস্থলী প্রতিনিধি:
রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা সবচেয়ে সুবিধা বঞ্চিত দুর্গম রাজস্থলী উপজেলার তাই তং পাড়া সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়টি শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। এ বিদ্যালয়ে ছাত্র ছাত্রীর মাধ্যমিক শিক্ষা অর্জনের এটাই একমাত্র মাধ্যম। প্রধান শিক্ষক সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ১১ জন শিক্ষকের জনবলের মধ্যে ও ৩ জন শিক্ষক মাত্র কর্মরত রয়েছেন।

তার মধ্যে একজন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে অফিসিয়াল কাজে ব্যস্ত থাকেন। ৫টি শ্রেনীর ক্লাস একসাথে ২ জন শিক্ষক পরিচালনা করেছেন। বিদ্যালয়টিতে ১১ জন প্রধান শিক্ষকসহ খুব কম সংখ্যক জনবল দেখিয়ে সরকারীকরন হওয়াতে প্রতি বছর অসংখ্য সমস্যা লেগে থাকে। সরকারী বিধি মোতাবেক নব যোগদানকৃত একজন শিক্ষক কমপক্ষে একটি বিদ্যালয়ে কর্মরত থাকার নিয়ম রয়েছে।

কিন্তু প্রতিবছর বিদ্যালয়ে সৃষ্টিকৃত ১১টি পদে কর্তৃপক্ষ শিক্ষক নিয়োগ দিলেও ২-৩ মাস যেতে না যেতে সরকারী উপর মহলের সহযোগিতায় বদলী হয়ে যাচ্ছে এমন তথ্য বিদ্যালয় সুত্রে পাওয়া গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক ও সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদ ২টি শুন্য রয়েছে। বর্তমানে যিনি আছেন, তিনি একজন কৃষি শিক্ষা বিষয়ের শিক্ষক বলে জানা গেছে। বর্তমানে বিদ্যালয়ে মাত্র ৩ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। গ্রুপ ভিত্তিক ক্লাস নিতে গেলে শিক্ষক সংকটের সমস্যা দেখা দেয়। তাছাড়া ছাত্র-ছাত্রীদের বানিজ্যিক বিভাগে পড়ার ইচ্ছা থাকলেও বিদ্যালয়ে শিক্ষকের সংকটের কারনে এ বিভাগটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে দাড়িয়েছে। বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষক না থাকায় সরকারী বরাদ্দকৃত কম্পিউটারগুলো অকেজো অবস্থায় হয়ে আছে। শিক্ষক সংকটের কারনে ছাত্র-ছাত্রীরা কম্পিউটারের মত আধুনিক প্রযুক্তি শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ছাত্রের অভিভাবক জানান, বিদ্যালয়টি বেসরকারী থাকা অবস্থায় ভাল ছিল, কিন্তু সরকারী হয়ে প্রতিনিয়ত শিক্ষক সংকট লেগে থাকে, এবার আমরা সরকাররের আশায় না থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান উথিনসিন মারমা ও ভাইস চেয়ারম্যান অংনুচিং মারমার সহযোগিতায় কিছু খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ করে শিক্ষার মানটি কোনরকম এগিয়ে নিয়ে এসেছি। আমরা মনে করি বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়নে সরকারের প্রতি ভরসা করা যাচ্ছে না। এলাকার হতদরিদ্র অভিভাবকদের আর্থিক সহযোগিতায় কিছু সংখ্যক খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ করে বিদ্যালয়ের ভাবমুর্তি অক্ষুন্ন রেখেছি।

এ ব্যাপারে ছাত্রের অভিভাবক রেঅংগ্যা মারমা জানান, সরকারীভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলে সরকারী নিয়োগকৃত শিক্ষকরা যোগদান দিতে না দিতে বদলীর প্রতিযোগীতায় নেমে পড়ে, যার কারনে প্রতি বছর শিক্ষক সংকট লেগে আছে। এ ভাবে বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান উন্নয়ন হতে পারেনা। তাই আমরা বাধ্য হয়ে অল্প শিক্ষিত খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ করছি। যা খুবই দুঃখজনক হলেও বাস্তব সত্য।

এ ব্যাপারে উপজেলা চেয়ারম্যান উথিনসিন মারমা জানান, কর্তৃপক্ষের নিয়ম মোতাবেক নববিদ্যালয়ে যোগদানকৃত শিক্ষকদের ৩ বছরে পুর্বে বদলীর আদেশ বন্ধ করা উচিৎ। তাছাড়া বিদ্যালয়টি সুন্দর পরিচালনার জন্য বেসরকারীভাবে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, যার দায়িত্ব উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান অংনুচিং মারমা ও অভিভাবক মন্ডলীর সদস্যের ধারায় বেসরকারী শিক্ষকদের সম্মানী ভাতা প্রদান করা হবে। উল্লেখিত বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আশু কামনা করেন এলাকাবাসী।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন