parbattanews

রামগড়ে আসামি ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর টানাহেঁচড়া

নিজস্ব প্রতিবেদক, রামগড়:

খাগড়াছড়ির রামগড়ে জনসংহতি সমিতির(জেএসএস) সংস্কারপন্থী খ্যাত এমএন লারমা গ্রুপের উপজেলা সাংগঠনিক সম্পাদক মোহন কুমার ত্রিপুরার হত্যা মামলার এজাহারভূক্ত দুই আসামিকে বিজিবির সহায়তায় পুলিশ গ্রেফতার করেছে। এসময় রাপ্রু মারমাকে গ্রেফতার করার পর তাকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সাথে গ্রামবাসীর টানাহেঁচড়ার ঘটনা ঘটে।

বৃহস্পতিবার(১৭ জানুয়ারি) তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মামলার এক নম্বর আসামি ম্রাথোয়াই মারমা প্রকাশ কর্তা(৪৫) ও ৩ নম্বর আসামি রাপ্রু চাই মারমা(২৮)। কর্তা রামগড়ের ছোটখেদা গ্রামের মৃত পাইও মারমা এবং রাপ্রু বাজার চৌধুরিপাড়ার মৃত মংশে প্রু মারমার ছেলে।

গত সোমবার (১৪ জানুয়ারি) রামগড় পৌর এলাকার জগন্নাথপাড়ায় একটি বাড়িতে মদের আসরে অজ্ঞাতনামা বন্দুকধারীদের গুলিতে জেএসএস নেতা মোহন ত্রিপুরা নিহত হন। এ ঘটনার জন্য ইউপিডিএফ’র প্রসীত গ্রুপকে দায়ি করে তার স্বজনরা।

নিহতের স্ত্রী হ্যাপী ত্রিপুরা বুধবার(১৬ জানুয়ারি) ১১জনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ১৫-২০জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে রামগড় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বেলা ৪টার দিকে রামগড় কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির অফিস সংলগ্ন রাস্তা থেকে ম্রাথোয়াই মারমা(কর্তা)কে গ্রেফতার করা হয়। এরআগে দুপুরে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ ৪৩ ব্যাটালিয়নের বিজিবির সহায়তায় উপজেলার  দুর্গম এলাকা বাজার চৌধুরিপাড়া থেকে  মামলার ৩ নম্বর আসামি রাপ্রু মারমাকে আটক করে।  আটকের খবর পেয়ে ঐ গ্রামের শতাধিক উপজাতীয় নারী পুরুষ তাকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সাথে টানাহেঁচড়ায় লিপ্ত হয়। প্রায় আধাঘন্টা এ ঘটনা চলে। পরে বিজিবির সহায়তায় পুলিশ আসামিকে থানায় নিয়ে আসে।

এদিকে পুলিশের পিছুপিছু অর্ধ শতাধিক নারী গ্রামবাসীও থানায় ছুটে আসে। থানার প্রবেশদ্বারে জড়ো হয়ে তারা আটক রাপ্রুর মুক্তির দাবি জানায়। এসময়  চিমাপ্রু মারমা(২২), মিওয়াপ্রু মারমা(১৫), চৌচাইন্দা মারমা(৬৫), রিইপাই মারমা(২২), নিলাবাই(৬০), আপ্রু মারমা(৩২), মাচিং মারমা(৪০), উসাচিং মারমা(১৭) পুলিশের বিরুদ্ধে অশালীন আচরনের অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট এলাকার ইউপি সদস্য আহলু অং কার্বারী(বুলু মেম্বার) বলেন, আসামিকে ছাড়িয়ে নিতে পুলিশের সাথে টানাহেঁচড়ার ঘটনায় তারা হয়তো আঘাত পেয়েছে। কিন্তু পুলিশ কাউকে ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু করেনি।

ওসি তারেক মো. আব্দুল হান্নান বলেন, আসামি রাপ্রুকে ছাড়িয়ে নিতে অর্ধ শতাধিক বিক্ষুব্ধ নারী পুলিশের ওপর যেভাবে চড়াও হয় পুলিশ সর্বোচ্চ ধৈর্য্যের পরিচয় দিয়েছে। তিনি বলেন, অশালীন আচরনের অভিযোগ সম্পূর্ন বানোয়াট। পরে থানার ওসি ও ইউপি সদস্য আহলু অং কার্বারী(বুলু মেম্বার) বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীদের শান্ত করে বাড়িঘরে পাঠিয়ে দেন।

Exit mobile version