parbattanews

রামগড়ে ইফা’র ফিল্ড সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে ঘুষবাজির অভিযোগ

খাগড়াছড়ির রামগড়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে ঘুষবাজিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘুষবাজির শিকার স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ঐ ফিল্ড সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগে ভুক্তভোগী রামগড়ের চাঁন্দপাড়া জামে মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা আব্দুর রহমান উল্লেখ করেন, তিনি উপজেলার লালছড়ি মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্বে থাকাকালীন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) অধীনে ঐ মসজিদে সহজ কোরআন শিক্ষা কেন্দ্রের শিক্ষক ছিলেন। পরবর্তীতে চাঁন্দপাড়া জামে মসজিদে যোগদান করার পর কোরআন শিক্ষার কেন্দ্রটি এ মসজিদে স্থানান্তরের জন্য তিনি ইফা’র উপজেলা ফিল্ড সুপারভাইজারের কাছে আবেদন জানান। এরই প্রেক্ষিতে ইফা’র ফিল্ড সুপারভাইজার মো. নুরনবী এ কাজের জন্য অফিসিয়াল খরচের নামে তার কাছে ২০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। টাকা ছাড়া কাজ হবে না জানালে তিনি নিরুপায় হয়ে চার কিস্তিতে ১১ হাজার টাকা দেন তাকে। কিন্তু কেন্দ্র স্থানান্তর না করায় তিনি তার দেয়া টাকা ফেরৎ চাইলে ফিল্ড সুপারভাইজার নানা তালবাহানা করেন।

ভুক্তভোগী ইমাম জানান, টাকা ফেরৎ পেতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও নেতৃবৃন্দের দারস্থ হয়েও কোন কাজ না হওয়ায় বাধ্য হয়ে তিনি ঐ ফিল্ড সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে ইফা’র খাগড়াছড়ির উপ পরিচালকের বরাবরে ২৭ মার্চ একটি লিখিত অভিযোগ প্রেরণ করেন।

এদিকে ফিল্ড সুপারভাইজার নুর নবী খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলায় চাকুরিকালীন ইফা’র দারুল আরকাম শিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষক পদে চাকুরি দেয়ার কথা বলে ঐ উপজেলার বেলছড়ি জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুর রহিম ও একই উপজেলার কবরস্তানপাড়া জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা জালাল আহমেদের থেকে মোটা অংকের টাকা নেওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে।

মুঠোফোনে মাওলানা আবদুর রহিম অভিযোগ করে বলেন, প্রায় দু’বছর আগে ফিল্ড সুপারভাইজার নুর নবী দারুল আরমান শিক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষক পদে নিয়োগের ব্যবস্থা করার কথা বলে তার কাছ থেকে দেড় লক্ষ টাকা নেন। কিন্তু তার চাকুরি হয়নি। পরে তিনি ঐ টাকা ফেরৎ চাইলে ৫০ হাজার টাকা ফেরৎ দিয়ে অবশিষ্ট এক লক্ষ টাকা পরে দেবেন বলে আর দেননি।

তিনি আরও জানান, ঐ সময় মাওলানা জালাল আহমেদের কাছ থেকেও চাকুরি দেয়ার কথা বলে ঐ ফিল্ড সুপাভাইজার মোটা অংকের টাকা নেন। চাকুরি না হলে তিনিও টাকা ফেরৎ চাইলে কিছু টাকা ফেরৎ দেন।

অন্যদিকে, ইফা’র ফিল্ড সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে কেন্দ্র স্থাপন ও শিক্ষক নিয়োগেও মোটা অংকের ঘুষ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। নাম প্রকাশে অন্ছিুক একাধিক কেন্দ্রের শিক্ষক অভিযোগ করেন, ফিল্ড সুপারভাইজার মো. নুর নবী নিয়োগের সময়ে তাদের কাছ থেকে ১৫-২০ হাজার টাকা অফিস খরচের নাম করে আদায় করেন।

অভিযোগে জানা যায়, কেন্দ্রের সাইনবোর্ডের জন্য জনপ্রতি ১০০০ টাকা এবং গত বছর করোনাকালীন সময়ে যাকাতের নামে জনপ্রতি ৫০০ টাকা করে আদায় করা হয় শিক্ষকদের কাছ থেকে। আরও জানা যায়, রামগড় উপজেলা ইফা’র ফিল্ড সুপারভাইজারের অধীনে রামগড় ও গুইমারায় প্রাক প্রাথমিক শিক্ষা, কোরআন শিক্ষা ও বয়স্ক শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে ৮৯টি। এছাড়া সাধারণ রিসোর্ট সেন্টার ৩টি এবং একটি মডেল রিসোর্ট সেন্টার রয়েছে।

এদিকে ফিল্ড সুপারভাইজার মো. নূর নরী তার বিরুদ্ধে আনা এসব অভিযোগ সত্য নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমার অফিসের কোন স্টাফ হয়তো এ ধরণের কাজ করায় এসব অভিযোগ উঠছে। তবে আমি এসবের কিছুই জানি না।’

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের খাগড়াছড়ি জেলা উপ পরিচালক মঞ্জুরুল আলম মজুমদার মুঠোফোনে জানান, রামগড়ের ফিল্ড সুপারভাইজারের বিরুদ্ধে তিনি কোন অভিযোগ পাননি। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Exit mobile version