parbattanews

রামগড়ে স্ত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর আহতকারী আরিফ গ্রেফতার

স্ত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর আহতকারী স্বামী আরিফ

খাগড়াছড়ির রামগড়ে মা ও ভাই মিলে স্ত্রীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগে পুলিশ আরিফ হোসেনকে গ্রেফতার করেছে।

রবিবার(১৬ জুন) গভীর রাতে উপজেলার মধ্যম লামকুপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। নির্যাতিতা গৃহবধূ রাহেনা আক্তারের পিতা শফিকুর রহমানের দায়ের করা শিশু ও নারী নির্যাতন আইনের সংশ্লিষ্ট ধারার মামলায় তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শনিবার রাতে রামগড় থানায মামলাটি রুজু করা হয়। মামলার অন্য আসামীরা ঘরে তালা দিয়ে পালিযে গেছে।

অভিযোগে জানাযায়, স্বামী, শাশুড়ি ও দেবরের বর্বরোচিত নির্যাতনে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এক গৃহবধূ। রাহেনা আক্তার(২৭) নামে নির্যাতিতা গৃহবধূ হাসপাতালের বেডে যন্ত্রনায় ছটপট করছেন।

শনিবার (১৫ জুন) দুপুরে উপজেলার মধ্যম লামকুপাড়া গ্রামে ঘরের দরজা বন্ধ করে স্বামী আরিফ হোসেন, দেবর আজাদ ও শাশুড়ি ফোরকান আক্তার তিনজনে মিলে অমানুষিকভাবে শারীরিক নির্যাতন করে গৃহবধু রেহানা আক্তারকে। কাঠের টুকরা দিয়ে তার সমস্ত শরীরে এলোপাথারি আঘাত করে তারা। এক পর্যায়ে স্বামী তার বুকের ওপর বসে গলা চিপে ধরে। বুক, পিঠ, হাত, পা, উরোসহ শরীরের বিভিন্ন স্থান শক্ত বস্তু ও হাতের ঘুষির আঘাতে ফুলে কালো দাগ হয়ে যায়। বর্বরোচিত নির্যাতন দেখে ভয়ে তার শিশু সন্তানরাও আত্মচিৎকার শুরু করে।

প্রতিবেশীরা উপজেলা মহিলা ভাইস চেযারম্যানসহ সমাজপতিদের ঘটনাটি জানালে তারা এসে ঘর থেকে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করান। ফটিকছড়ির বাগানবাজারের দরিদ্র চা বিক্রেতা শফিকুর রহমানের কন্যা রাহেনা আক্তারের বিয়ে হয় রামগড় উপজেলার মধ্যম লামকুপাড়া গ্রামের আমিন খানের ছেলে আরিফ হোসেনের সাথে।

১৪ বছরের দাম্পত্যজীবনে তাদের ঘরে আসে দুই ছেলে, এক মেয়ে। স্বামী আরিফ পেশায় ফার্ণিচার দোকানদার। বিয়ের পর নানা অজুহাতে যৌতুক দাবি করলে এ পর্যন্ত দরিদ্র পিতা প্রায় তিন লক্ষ টাকা দেয় জামাই আরিফকে।  কিছুদিন আগে স্থানীয় এক মহিলার সাথে অবৈধ কাজে লিপ্ত অবস্থায় হাতেনাতে ধরে গ্রামবাসিরা। গ্রাম্য সালিসে তাকে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এখন এই ৮০ হাজার টাকা বাবার কাছ থেকে এনে দেয়ার জন্য আরিফ তার ওপর অবিরাম নির্যাতন চালিযে যাচ্ছে। এত টাকা দিতে পিতার অক্ষমতা জানালেও সে কিছুই শুনতে রাজি না। টাকা না আনলে এভাবে নির্যাতন সইতে হবে, নচেৎ বাপের বাড়ি চলে যেতে হবে বলে আরিফ সোজা জানিয়ে দেয়। তার ওপর অবিরাম নির্যাতনের ব্যাপারে এই পর্যন্ত অসংখ্যবার বিচার সালিস হলেও সে কাউকে তোয়াক্কা করতো না।

শনিবার অমানুষিকভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার ঘটনায় রেহানার পিতা শফিকুর রহমান শিশু ও নারী নির্যাতন আইনে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় মেয়ের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও দেবরকে আসামি করা হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা(আই ও) এসআই মজিবুর রহমান বলেন, রবিবার রাতে অভিযান চালিয়ে নির্যাতনকারী স্বামী আরিফ হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। মামলার অপর আসামীরা ঘরে তালা দিয়ে পালিয়ে গেছে। তিনি বলেন, সহসাই পলাতক আসামীরাও পুলিশের হাতে ধরা পড়বে।

উল্লেখ্য, রবিবার(১৬ জুন) সকালে পার্বত্যনিউজ ডটকম এ ‘রামগড়ে স্বামী শাশুড়ি দেবরের নির্যাতনে গৃহবধূ হাসপাতালে’ শিরোনামে রিপোর্টটি প্রকাশিত হয। সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রিপোর্টটি আপলোড হওয়ার পর এটি ৫৬৩ বার শেয়ার ও ৯৮১টি লাইক হয়।

Exit mobile version