রামগড় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম স্থগিত: যুবলীগের কয়েকজনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা

al_30088

পার্বত্যনিউজ রিপোর্ট:

আওয়ামী লীগের খাগড়াছড়ি জেলা কমিটি রামগড় উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এছাড়া চাঁদাবাজিসহ সাংগঠনিক শৃঙ্খলাবিরোধী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে রামগড় উপজেলা ও পৌর যুবলীগের কয়েকজন কর্মী সমর্থকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণেরও সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ৭ দিনের মধ্যে বর্তমান উপজেলা কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা সহ ৫৫ নেতার পদত্যাগের প্রেক্ষিতে খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

গত মঙ্গলবার জেলা পরিষদ রেস্ট হাউসে খাগড়াছড়ির এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সভায় এ সিদ্ধন্ত নেয়া হয়। সভায় জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলম, যুগ্ন সম্পাদক এস এম শফি ছাড়াও রামগড় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোস্তফা হোসেন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী আলমগীর হোসেন, পদত্যাগী নেতাদের মধ্যে সিনিয়র সহসভাপতি শাহা আলম মজুমদার, করিমুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আবুল বশরসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, রামগড় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো: মোস্তফা হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে যুবলীগ নামধারী কিছু উশৃঙ্খল যুবককে ব্যবহার করে লাগামহীন চাঁদাবাজি ও কয়েকজন দলীয় নেতাকে লাঞ্চিত করাসহ দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ এনে উপজেলা আওয়ামী লীগের ৬ জন উপদেষ্টা ও ৫ জন সহ-সভাপতি, তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদক ও একজন যুগ্ন সাধারণ সম্পাদকসহ মোট ৫৫ জন নেতা দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহেদুল আলম ফোনে এ বিষয়ে বলেন, দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা আওয়ামী লীগ বরাবরই কঠোর অবস্থানে আছে। রামগড় উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে আনীত বিভিন্ন্ অভিযোগে ৫৫ নেতার পদত্যাগের প্রেক্ষিতে জেলা কমিটি রামগড় উপজেলা কমিটির সকল কার্যক্রম স্থগিত করে আগামী ৭ দিনের মধ্যে নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়া অভিযুক্ত যুবলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার পাশাপাশি আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করার সিদ্ধান্তও হয়।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সভাপতি শাহা আলম মজুমদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী আবুল বসর জানান, যুবলীগ নামধারী উশৃঙ্খল যুবকদের দিয়ে চাঁদাবাজি ছাড়াও পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি আইয়ুব আলী, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম কামালসহ একাধিক নেতাকে শাররীকভাবে লাঞ্চিত করা হয়েছে।

সর্বশেষ গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের সরকারি অনুষ্ঠানে যাওয়ার পথে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে তারা মারধর এবং সহসভাপতি করিমুল হককে লাঞ্চিত করেছে। তাঁরা অভিযোগ করেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোস্তফা হোসেন ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী আলমগীর হোসেন যুবলীগ নামধারী যুবকদের ব্যবহার করে একের পর এক এসব করছেন। তাই বাধ্য হয়ে দলীয় পদ থেকে তারা পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করার সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, জেলা নেতৃবৃন্দ উত্থাপিত অভিযোগের প্রমান পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি মোস্তফা হোসেন ফোনে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যকরী কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করার জেলা আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের কথা তিনি জানেন না। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আনা পদত্যাগকারী নেতাদের অভিযোগ সত্য নয় বলেও তিনি দাবী করেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন