parbattanews

রামগড়-সাব্রুম স্থল বন্দর চালুর উদ্যোগ : ফেনী নদীর ওপর মৈত্রী সেতু নির্মাণে ভারতের দরপত্র আহ্বান


রামগড় প্রতিনিধি :
খাগড়াছড়ির রামগড়- সাব্রুম স্থল বন্দর চালুর লক্ষ্যে সীমান্তবর্তী ফেনীনদীর ওপর বাংলাদেশ ভারত মৈত্রী সেতু-১ নির্মাণের ঠিকাদার নিয়োগের জন্য দরপত্র আহবান করেছে ভারত। সেদেশের ন্যাশনাল হাইওয়েস এন্ড ইনফ্রাস্টাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন লিমিটেড (এনএইচআইডিসিএল) নামে সংস্থাটি অনলাইন দরপত্রটি আহবান করে।

ত্রিপুরার বহুল প্রচারিত পত্রিকা দৈনিক সংবাদ ও প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ওয়েবসাইটে  দরপত্র বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হয়। ফেনীনদীর উপর এক্সটা ডোজড/ ক্যাবল স্টেইড আরসিসি সেতু নির্মাণের দরপত্র দাখিলের শেষ তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি।

জানা যায়, প্রায় ১০০ কোটি ভারতীয় রুপি ব্যয় করে সেতুটি নির্মাণ করবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। আর্ন্তজাতিক মানের  দুই লেনের এ সেতুতে থাকবে ফুটওয়ে এবং এ্যাপ্রোচ রোড। নির্মাণের সময়সীমা ধরা হয়েছে দুই বছর পাঁচ মাস।

এদিকে ত্রিপুরার আগরতলা থেকে প্রকাশিত ডেইলি দেশের কথা পত্রিকায় ১৬ জানুয়ারি‘ফেনী সেতুর অনলাইন টেন্ডার ডাকা হলো’ শিরোনামে প্রকাশিত এক রির্পোটে বলা হয়, ফেনী নদীর উপর প্রস্তাবিত এই আর্ন্তজাতিক সেতু নির্মিত হলে শুধু ভারতের পূর্বোত্তরই নয়, খুলে  যাবে দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা। সেতুটি হলে বাংলাদেশের সঙ্গে সড়কপথে ত্রিপুরাসহ উত্তরপূর্ব রাজ্যগুলোর বাণিজ্যিক আদানপ্রদানের সম্ভাবনা কয়েকগুণ বেড়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শুধু তাই নয়, কাছে এসে যাবে চট্টগ্রাম নৌ বন্দর। সমুদ্র পথে পণ্য পরিবহনের সুযোগও মিলবে।  রামগড়ে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরামের এক অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে ভারতের লোকসভার পূর্ব ত্রিপুরার এমপি ও ত্রিপুরা রাজ্যসভার  প্রাক্তন মন্ত্রী কমডর জীতেন্দ্র চৌধুরিও বলেছেন, ১-২ মাসের মধ্যে মৈত্রী সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আর সেতুটি নির্মিত হলে দুদেশের বাণিজ্যিকসহ সার্বিক সর্ম্পক আরও জোরদার হবে।

রামগড় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল মামুন মিয়া পার্বত্যনিউজকে বলেন, সেতু নির্মাণের বিষয় নিয়ে রামগড়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পদস্থ কর্মকর্তাদের যৌথসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর গত ডিসেম্বর মাসেই দুদেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যৌথভাবে সরেজমিনে পরিদর্শন-পরিমাপ করে সেতু নির্মাণের প্রস্তাবিত মহামুনি এলাকায় সেতুর এলাইনমেন্টের কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সর্বশেষ গত ২ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বাংলাদেশ স্থল বন্দর কর্তৃপক্ষের আহবানে রামগড় স্থল বন্দর উন্নয়ন বিষয়ে এক গণ পরামর্শ সভাও অনুষ্ঠিত হয়।

এদিকে, গত বৃহষ্পতিবার ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের উদয়পুর সেক্টরের আইজি মি. ইউপি সারেনঙীর নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা মৈত্রী সেতু নির্মাণের প্রস্তাবিত স্থান সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন। সীমান্তের ওপাড়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র পার্বত্যনিউজকে জানায়, রামগড়ের মহামুনি এলাকার বিপরীতে ভারতের সাব্রুম মহকুমার সীমান্তবর্তী আনন্দপাড়া ও নবীনপাড়ায় সেতু নির্মাণের প্রস্তাবিত এলাকাটি তাঁরা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শকদলে বিএসএফের ডিআইজি(অপারেশন) ডিকে বোড়া, ৫১ বিএসএফের কমান্ডিং অফিসার জিএন মিনাসহ মহকুমা প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তারাও ছিলেন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ৬ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সেতু-১ নামে ফেনী নদীর ওপর প্রস্তাবিত সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন।

Exit mobile version