রামুতে আদালতের রায়ে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি উদ্ধার

fec-image

কক্সবাজারের রামুতে বিজ্ঞ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি উদ্ধার করা হয়েছে।

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহর নেতৃত্বে দুপুরে রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের দক্ষিণ দ্বীপ ফতেখাঁরকুল শিকলঘাট এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।

এ অভিযানে অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে ৫০ শতক জমি বুঝে পেয়ে বিজ্ঞ আদালত ও জেলা প্রশাসনের প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জমির মালিক ফরিদুল আলম।

ফরিদুল আলম জানান, তিনি শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে দীর্ঘদিন ‘দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ড’ এ অফিসার পদে কর্মরত ছিলেন। দীর্ঘদিন পূর্বে বাঁকখালী নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে ৩ সহোদর কাসিম, আবদুস শুক্কুর ও নুরুল হক তার কাছে আশ্রয় চান। এসময় তাদের ব্যবসায়িক চুক্তিতে ও নতুন ভিটে বাড়ি করে অন্যত্র চলে যাওয়ার শর্তে অস্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ দেন। শর্ত অনুযায়ী কাসিম অন্যত্র বাড়ি ভিটে করে চলে যান। জমির মালিক ফরিদুল আলম দেশে আসার পর অপর দুই ভাই আবদুস শুক্কুর ও নুরুল হককে অন্যত্র চলে যেতে চললে তারা উল্টো জমি ছাড়তে অপরাগতা প্রকাশ করে উল্টো দুর্ব্যহার ও হাকাবকা শুরু করেন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন ফরিদুল আলম। এরই মধ্যে একটি নিঃস্বত্ত্ববান ও ফেরেবি দলিল সৃজন করে উল্টো জমির মালিক ফরিদুল আলমকে বিবাদী করে মিথ্যা মামলা (নং ২৭০/১৭) দায়ের করেন। ২০২২ সালে বিজ্ঞ রামু আদালতে মামলাটি খারিজ হয়।

পরবর্তী আবদু শুক্কুর ও নুরুল হক জমি ছেড়ে দিতে অপরাগতা জানালে ফরিদুল আলম নিরুপায় হয়ে বিজ্ঞ আদালতে উচ্ছেদ মামলা (নং ১৩১/১৮) দায়ের করেন। রামু আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মো. মাজেদ হোসাইন চলতি বছরের ৬ এপ্রিল এ উচ্ছেদ মামলায় ফরিদুল আলমের পক্ষে রায় দেন। রায়ে অবৈধ দখলদার আবদু শুক্কুর গংকে উচ্ছেদের নির্দেশ দেয়া হয়।

বিজ্ঞ আদালতের এ আদেশের প্রেক্ষিতে বুধবার কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহর নেতৃত্বে অবশেষে এ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন জমির মালিক মাস্টার ফরিদুল আলম।

অভিযানে আরো অংশ নেন জেলা নাজির বেদারুল আলম, এডভোকেট কমিশনার মীর মোশাররফ হোসেন, রামু থানার সেকেন্ড অফিসার আবুল কাওসার, জারিকারক টিটুসহ জেলা পুলিশের প্রায় ২০ জন সদস্য। উচ্ছেদ অভিযানে অবৈধদখলদার আবদু শুক্কুর গং এর বসতঘর সহ অন্যান্য স্থাপনা স্কেভেটর দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হয়। পরে জমি দখলমুক্ত করে প্রকৃত মালিক মাস্টার ফরিদুল আলমকে বুঝিয়ে দেয়া হয়।

অভিযান চলাকালে এলাকার শত শত উৎসুক মানুষের উপস্থিতি দেখা গেছে। এ অভিযান ভূমিগ্রাসী চক্র ও অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে একটি শতর্কবার্তা বলে মনে করছেন এলাকাবাসী। দখলদাররা প্রভাবশালী হলেও আইনের মাধ্যমে প্রতিকার পাওয়ার অন্যন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে এ অভিযান। এ জন্য এলাকাবাসীও বিজ্ঞ আদালত, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অবৈধ স্থাপনা, আদালত, উচ্ছেদ
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন