parbattanews

রামুর ঐতিহ্যবাহী জোয়ারিয়ানালা বাজারের বেহাল দশা


রামু প্রতিনিধি:
রামু উপজেলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহি জোয়ারিয়ানালা বাজার নানা সমস্যা ও সংকটে বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বাজারের বেচা-কেনার প্রধান স্থানটি সামান্য বৃষ্টিতে পানিতে একাকার হয়ে যায়। কয়েক ঘন্টার বর্ষণে পরিনত হয় জলাশয়ে। এছাড়া বাজারে বেচাকেনার পর্যাপ্ত জায়গা ও শেড এর অভাবে ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। বাজারের জরাজীর্ণ শেডগুলোতে বৃষ্টি পানি পড়ে। একারণে বৃষ্টি হলে নিজেদের রক্ষাও কঠিন হয়ে পড়ে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের।

সম্প্রতি সরেজমিন জোয়ারিয়ানালা বাজারে গিয়ে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সাথে আলাপ করে বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যার কথা জানা গেছে। ব্যবসায়ীরা জানান, বাজারটি ২ শত বছরের পুরনো। এর পুরনো নাম ছিলো জোয়ারিয়ানালা মৌলভী বাজার। বর্তমানে সবার কাছে জোয়ারিয়ানালা বাজার হিসেবে পরিচিত। এখানে সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার দুদিন জমজমাট হাট বসে। এ দু’দিন রামু উপজেলা ও অন্যান্য এলাকার বিপুল সংখ্যক ব্যবসায়ি ও ক্রেতা এখানে মালামাল ক্রয় বিক্রয় করতে আসেন। এ দু’দিন ছাড়াও সপ্তাহের অন্যান্য দিনগুলোতে এখানে নিয়মিত কাঁচা তরকারি, মাছ, মাংস থেকে শুরু করে সব ধরনের পণ্য বেচা কেনা হয়। অতি প্রাচীন হলেও বর্তমানে বাজারটি নানা সমস্যা জর্জরিত।

বাজারের ঔষধ বিক্রয় প্রতিষ্ঠান ‘ফ্রেন্ডস মেডিকো’র মালিক আজিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রতিবছর এ বাজার থেকে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব আদায় করে। অথচ বাজারটির উন্নয়নে একটি টাকাও ব্যয় করা হয় না। উপজেলা পরিষদ কিংবা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদও বাজারটির উন্নয়নে কোন ভূমিকা রাখছে না। এ নিয়ে ব্যবসায়ি ও স্থানীয় মানুষের মনে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

তিনি আরো জানান, ইতিপূর্বে বাজারের পাশে মাটি ভরাট মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়েছিলো। ফলে বাজারের বেচাকেনার স্থানটি নিচু হয়ে যায়। বৃষ্টি পানি নিষ্কাশনের পথগুলোও প্রভাবশালীরা ভরাট কওে ফেলেছে। একারনে বর্ষাজুড়ে বাজারে চরম জলাবদ্ধতা লেগে থাকে।

বাজারের মাছ ব্যবসায়ি জালাল আহমদ, মোস্তাক আহমদ, মোস্তফা ও আমানু জানান, বাজাওে বেচাকেনা করতে গিয়ে তারা বিভিন্ন দূর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এখানে বেচাকেরা পর্যাপ্ত জায়গা ও উন্নত শেড নেই। সামান্য বৃষ্টি হলে তাদের বেচাকেনা স্থবির হয়ে পড়ে। অতিবৃষ্টি হলে এখানে কেউ চলাচলও করতে পারে না।
একই অভিযোগ বাজারের সবজি ব্যবসায়ি আজিজুল আলম, মমতাজ ও হাকিম আলীর। তারা জানান, অচিরে বাজারটি সংস্কার ও বেচাকেনার জন্য পর্যাপ্ত শেড বা ঘর তৈরী করা না হলে ব্যবসায়িদের দূর্ভোগ আরো বেড়ে যাবে। এতে ঐতিহ্যবাহি বাজারটি ক্রমেই ক্রেতাশূণ্য হয়ে যাবে। আর্থিক লোকসানের শিকার হবে বাজারের ব্যবসায়িরা।

জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল শামসুদ্দিন আহমেদ প্রিন্স বাজারের বেহাল দশার কারনে মানুষের দুর্ভোগের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, এতবড় বাজারের সংস্কার কাজের পর্যাপ্ত বরাদ্ধ ইউনিয়ন পরিষদের থাকে না। এরপরও তিনি সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ, উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বাজারটির সমস্যা নিরসন ও উন্নয়নে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাজাহান আলি জানিয়েছেন, বাজারে জলাবদ্ধতাসহ বিরাজমান সমস্যাসমূহ নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হবে। প্রয়োজনে তিনি সরেজমিন গিয়ে সমস্যা চিহ্নিত করবেন।

Exit mobile version