রামুর চা বিক্রেতা মিজানকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন

ramu mizan pic
খালেদ হোসেন টাপু, রামু প্রতিনিধি:
এক বছর আগে গলার পাশে টিউমার সদৃশ্য কিছুর অস্তিত্ব দেখা দেয়। কয়েক মাস না যেতেই গলার অপর পাশেও টিউমার সদৃশ্য কিছু ফুলে উঠতে দেখে আতংকে পড়েন রামুর ভ্রাম্যমান চা বিক্রেতা মিজানুর রহমান। সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গলার এক পাশে অপারেশন করা হলেও অন্য পাশে এখনো ফুলে রয়েছে। অপারেশন শেষে বেশ কয়েক ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁর হাঁড়ে দূরারোগ্য ক্যান্সার ধরা পড়েছে।

ভ্রাম্যমান চা বিক্রেতা মিজানুর রহমান (৫৫) রামুর ব্যস্ততম এলাকা চৌমুহনী স্টেশন এবং আশপাশের অনেকের পরিচিত মুখ। বছরের পর বছর তিনি এসব এলাকা বা বিভিন্ন অনুষ্ঠানস্থলে চা এর কেটলী আর বিস্কিট ফেরী করে আসছেন। মিজানুর রহমান কক্সবাজারের রামু উপজেলার সদর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের উত্তর শ্রীকুল গ্রামের মৃত আবদুস ছালামের ছেলে।

ক্যান্সার আক্রান্ত মিজানুর রহমানের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, গলার দুপাশে বড় টিউমার আকৃতির ফুলে উঠায় গত ২১ এপ্রিল তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান, গলা বিভাগের ১৯ নং ওয়ার্ডে ৫৬ নং আসনে ভর্তি করা হয়। সেখানে গত পহেলা মে ডা. মিনহাজুল হকের তত্ত্বাবধানে মিজানুর রহমানের গলার ডান পাশে অপারেশন করা হয়। তবে এখনো গলার বামপাশে টিউমার আকৃতির মতো ফুলে রয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার গলার বাম পাশের অপারেশন খুবই জটিল হবে।

গলার চিকিৎসা নিয়ে অর্থ কষ্টের মধ্যেই কয়েকটি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চমেক এর চিকিৎসক ডা. জিল্লুর রহমান জানান, মিজানুর রহমানের দেহের বামপাশে হাঁড়ে ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছে। ২১ মে অপারেশন শেষে মিজানুর রহমানের দেহের অংশ বিশেষ পরীক্ষার জন্য ঢাকা ডেল্টা হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ওই পরীক্ষার রিপোর্ট দেখে ক্যান্সারের বিষয়টি নিশ্চিত হন চিকিৎসকেরা। এখবরে হতবিহবল হয়ে পড়ে হতদরিদ্র মিজানুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যরা। বর্তমানে হাঁড়ের ক্যান্সার জনিত তীব্র যন্ত্রনায় ছটফট করতে হচ্ছে মিজানুর রহমানকে। নিজের স্ত্রীর স্বর্ণালংকারসহ সহায় সম্বল বিক্রি করে এবং স্থানীয় অনেকের সহায়তা নিয়ে গলার এক পাশের চিকিৎসা করিয়েছেন। এখন প্রতিদিনের ঔষধ কেনার সামর্থ্যও তার নেই বললেই চলে। তার উপর ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে আরো বেশী উৎকণ্ঠিত তিনি এবং পরিবারের সদস্যরা।

মিজানুর রহমানের স্ত্রী মর্জিনা বেগম জানান, ইতিমধ্যে স্বামীর গলায় অপারেশন করতে গিয়ে ৫০ হাজার টাকার বেশী খরচ হয়েছে। এখন ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থে প্রয়োজন বলে তাদের জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এত বিপুল অর্থের জোগান দেয়া তাদের মতো দরিদ্র পরিবারের পক্ষে মোটেও সম্ভব হবে না।

তিনি আরো জানান, এমনিতে স্বামীর আয়ের উপর তাদের পরিবার চলতো। এখন স্বামী অসুস্থ হওয়ায় তাদের খেয়ে-না খেয়ে মানবেতর সময় কাটাতে হচ্ছে। তাদের ৩ শিশু সন্তান রয়েছে। এদের মধ্যে বড় দুই ছেলে নাসির উদ্দিন (১১) ও সাইফুল ইসলাম (১০) পঞ্চম শ্রেণিতে এবং কনিষ্ট সন্তান সাইদুল ইসলাম (৫) মাদ্রাসার নুরানী বিভাগের ছাত্র। অর্থাভাবে বর্তমানে তাদের পড়ালেখাও বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

রামু রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি আবুল কাশেম জানিয়েছেন, মিজানুর রহমান চা বিক্রেতা হলেও একজন সাদা মনের মানুষ হিসেবে সবার কাছে সুপরিচিত। চা বিক্রি করে তিনি দীর্ঘদিন সংসারের জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। মিজানুর রহমানকে চিকিৎসা সহায়তা দিয়ে বাঁচানো সব মানুষের দায়িত্ব। মিজানুর রহমান বেঁচে থাকলেই মানুষের মতো জীবনের অধিকারী হয়ে বাঁচবে তাঁর পরিবারের সদস্যরাও।

মিজানুর রহমানের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন সমাজের সকল স্তরের, সকল পেশার মানুষের আর্থিক সহায়তা। আর্থিক বা যে কোন প্রকার সহায়তা করতে আগ্রহীরা যোগাযোগ করুন, মিজানুর রহমান, মোবাইল নং-০১৮৬২-৩০৫৬৭৬।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন