parbattanews

‘রামুর রাংকুট বৌদ্ধ বিহারে সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কা’

বুদ্ধের অস্থি সংবলিত রামু রাংকুট বৌদ্ধ বিহার নাশকতার টার্গেটঃ সেনা ও বিজিবির নতুন সতর্কতা জারি – See more at: http://dhammainfo.com/news/bangladesh/750#sthash.CtAcmwq9.dpuf

IMG 3021

পার্বত্য নিউজ ডেস্ক:

কক্সবাজারের রামুতে অবস্থিত রাংকুট বৌদ্ধ বিহারে সন্ত্রাসী হামলা হতে পারে। এমনই সতর্কতা জানিয়েছে পৃথকভাবে দুটি নিরাপত্তা বাহিনীর স্থানীয় কর্মকর্তারা। গত সোমবার ও মঙ্গলবার দিকে বাংলাদেশ সেনা বাহিনীর ৫৭ ইসিবি এবং বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-এর কর্মকর্তারা একদিন পরপর পৃথকভাবে বিহারে এসে বিহারের বৌদ্ধ ভিক্ষুদের এই সতর্কতা জানিয়ে যান। কর্মকর্তারা বিহারের বুড়ো ভান্তে শাসনবংশ ভিক্ষুর কাছে তাঁদের সতর্কতার কথা জানিয়ে যান। বৌদ্ধদের আদর্শ তথ্য কেন্দ্র ধম্মইনফো নামক ওযেবসাইটে এখবর জানানো হয়েছে।

ধম্মইনফো ওয়েব সাইটের ১০ আগস্ট তারিখে প্রকাশিত ‘বুদ্ধের অস্থি সংবলিত রামু রাংকুট বৌদ্ধ বিহার নাশকতার টার্গেটঃ সেনা ও বিজিবির নতুন সতর্কতা জারি ’ শীর্ষক খবরে বলা হয়েছে, রামুতে অবস্থিতে এই বিশ্বখ্যাত রাংকুট বিহারে বুদ্ধের “বুকের অস্থি” রয়েছে। বিহারে অবস্থিত বুদ্ধ মূর্তির মাথায় বুদ্ধের “বক্ষাস্থি” সংযোজিত রয়েছে বলে জানান বিহারধ্যক্ষ। আরাকানি প্রাচীন ভাষায় “রাং” শব্দের অর্থ “বুকের অস্থি” আর তাই এই বিহারের নাম রাংকুট বিহার।

রাংকুট বৌদ্ধ বিহারের পরিচালক ফ্রা জ্যোতিসেন থের জানান, এই বিহার সন্ত্রাসীদের হামলার টার্গেট এবং এখানে হামলা হতে পারে বলে সেনা ও বিজিবি কর্মকর্তারা জানিয়ে গেছেন।

বৌদ্ধ ইতিহাসের প্রাচীনতর নিদর্শনগুলোর একটি “রামু রাংকুট” বিহার ২৬০ খৃষ্টপূর্বে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন মহামতি সম্রাট অশোক। সুপ্রাচীন এই বিহারে বুদ্ধের অস্থি থাকায় এটিকে বৌদ্ধদের জন্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত। বিহারাধ্যক্ষ্য জানান, গৌতম বুদ্ধ আনন্দকে নিয়ে এই স্থানে কিছু সময় অবস্থানও করেছিলেন বলে ইতিহাসে জানা যায়। প্রতিদিন শত শত পূণ্যার্থী ও দর্শণার্থী আসেন এই বিহারে বুদ্ধের বক্ষাস্থি সংবলিত বুদ্ধ মূর্তি এক নজর দেখতে এবং প্রার্থণা করতে।

সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত এই বিহার নাশতকতার টার্গেট হওয়ায় বিহার সংশ্লিষ্টরা বেশ অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যেই আছেন। ইতিমধ্যেই বুদ্ধের অস্থি সংবলিত বুদ্ধমূর্তিটি যে ঘরে রাখা হয়েছিল তার দরজা কাঁচের গ্লাস দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে যাতে কেউ সেই ঘরে ঢুকতে না পারেন। দর্শনার্থী বা পূণ্যার্থীরা দরজার বাইরে থেকে দেখতে এবং প্রার্থণা করতে পারবেন। বিহারের পরিচালক ফ্রা জ্যোতিসেন থের ধম্মইনফো-কে জানান, সতর্কতামূলক বার্তা পাওয়ার পরেই আগত নিরাপত্তাবাহিনীর কর্মকর্তাদের পরামর্শে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে যাতে কেউ ভেতরে প্রবেশ করে বুদ্ধ মূর্তিটির কোন ক্ষতি করতে না পারে।

তবে এটা কোনভাবেই যথেষ্ট নয়। সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, এত গুরুত্বপূর্ণ এই বিহারে হামলার সম্ভাবনার কথা জানানো হলেও কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন। বিহারে চারপাশ অনেকটাই খোলা এবং অরক্ষিত। কোন নিরাপত্তা কর্মীও নিয়োজিত ছিল না। হামলার সতর্কতা থাকা সত্ত্বেও পুলিশ কিংবা অন্য কোন নিরাপত্তা বাহিনী কেন নিয়োজিত করা হয়নি সেটাই এখন প্রশ্ন। বিহারের পরিচালক ফ্রা জ্যোতিসেন থের জানান, নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিহারের জন্যে নিরাপত্তাবাহিনী নিয়োজনের ব্যাপারে কিছুই বলেননি উল্টো নিজেদের ব্যবস্থাপনায় বেসরকারীভাবে পাহাড়া বসানোর পরামর্শ দিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, এমতাবস্থায় বিহারে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রত্যক্ষ নজরদারী খুবই প্রয়োজন।

এই বিহারে বর্তমানে ৪ জন ভিক্ষু এবং ৩০ জন শ্রামণ বসবাস করছেন। প্রসঙ্গতঃ গত বছর ২৯ সেপ্টেম্বরের রামু হামলার সময় এই বিহারেও হামলা চালিয়েছিল দুর্বৃত্তরা। এ সময় বিহারের ভেতরে খুব বেশী ক্ষতি করতে না পারলেও ফটক ভাংচুর করে চলে যায়।

Exit mobile version