রামু কলেজ সরকারিকরণে সর্বত্র উৎসবের আমেজ

Ramu Collage pic 19  july (01)
রামু প্রতিনিধি :
কক্সবাজার শহর থেকে ১২ কিলোমিটার রাস্তা পেরোলেই রামু উপজেলা। আর এই উপজেলার প্রবেশের একটু পর মহাসড়কে পাশে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে অবস্থিত এই উপজেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ এই রামু কলেজ।

রামু উপজেলায় একটি মাত্র উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাধীনতার পর রামু কলেজকে সরকারি ঘোষনায় রামুবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হয়েছে। এ কারণেই উপজেলার সর্বত্র উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। রামু কলেজ সরকারি ঘোষণায় বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ তাদের স্বস্তি প্রকাশ করেছেন।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কক্সবাজার জেলার ছয়টি কলেজ সরকারিকরণের অনুমোদন দেন। এতে রামু কলেজও রয়েছে।

১৯৮৯ সালের ১ এপ্রিল রামু বাইপাসের অদূরে ৭ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত কলেজে প্রায় ৭০ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু হয় রামু কলেজের। প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের বরেণ্য শিক্ষাবিদ প্রফেসর মোশতাক আহমদ এবং প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট আবুল মনসুর চৌধুরী।

এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক সরকারিকরণের জন্য কলেজটি ঘোষিত হওয়ায় বিশেষ অবদান রয়েছে একুশে পদকে ভূষিত রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের অধ্যক্ষ উপ-সংঘরাজ সত্যপ্রিয় মহাথের এবং পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এম,পি’র।

কক্সবাজার জেলা ছাত্র ইউনিয়নের সহ সভাপতি অর্পন বড়ুয়া জানান, কলেজটি সরকারিকরণ হওয়ায় এলাকার অসংখ্য গরীব-মেধাবী শিক্ষার্থীরা অনেক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। পাশাপাশি শিক্ষক সংকট দুরীকরণ, প্রয়োজনীয় ভবন, ছাত্রাবাস ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে।

তিনি আরো বলেন- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক সমাজ বিনির্মাণে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মত রামু কলেজেও বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ উদযাপনসহ ধর্মীয় উৎসবগুলো পালনের ব্যবস্থা করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৭টি ভবনেই এখন নিয়মিতভাবে পাঠদান কার্যক্রম চলে আসছে। গেল বছরে এইচএসসিতে পাশের হার ছিল ৮৪%। একাদশ, দ্বাদশ, বিএ পাশ কোর্স ও অনার্সসহ সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে এ কলেজে। চলতি বছরে একাদশ শ্রেণীর প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়েছে ৮ শতাধিক শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের তুলনায় অপর্যাপ্ত শিক্ষক। অনেকগুলো বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক নেই সরকারীকরণের জন্য ঘোষিত কলেজটিতে। কলেজে ৫৪ জন শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছে। তৎমধ্যে শিক্ষক রয়েছে ৩৭ জন।
রামু কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল হক জানান, কলেজে শিক্ষার্থীদের তুলনায় শিক্ষক সংকট রয়েছে। বিশেষ করে ফিন্যান্স, সমাজ বিজ্ঞান, হিসাব বিজ্ঞান, মার্কেটিং, কম্পিউটার, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং অনার্সের হিসাব বিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা ও অর্থনীতি বিষয়ে শিক্ষক নেই। আগামী দিনে সবক’টি বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হলে পর্যাপ্ত ও অভিজ্ঞ শিক্ষক কলেজটিকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে যাবে; এমনটাই প্রত্যাশা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের।

তিনি বলেন- আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার এমপি’র ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রামু কলেজ সরকারীকরণ করা সম্ভব হয়েছে। এজন্য তিনি কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে এমপি’র প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

রামু কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি জানান, যুগোপযোগী ও মানসম্মত শিক্ষা গ্রামে গঞ্জে পৌঁছে দিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতার কোন ঘাটতি নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা রামুবাসীর স্বপ্ন পুরণ করেছেন। শুধু রামু কলেজ নয়’ রামু খিজারী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়কেও সরকারীকরণের জন্য ঘোষণা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি রামু-কক্সবাজারবাসীর পক্ষে কৃতজ্ঞতা জানান তিনি।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন