parbattanews

কারবারী পদ নিয়ে রুমায় প্রতিপক্ষের গুলিতে বাবা-ছেলে নিহত

 

রুমা প্রতিনিধি:

পাড়াপ্রধান কারবারী পদ নিয়ে বিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বান্দরবানের রুমায় পাইন্দু ইউনিয়নের পাইন্দু উজানি পাড়াপ্রধান কারবারী ক্যঅংপ্রু মারমা(৬৫)কে গুলি করে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষরা।পালিয়ে যাবার সময় ছেলে ক্যংচাইহ্লা মারমা(২২)কেও কুপিয়ে হত্যা করে।

গুলিবিদ্ধ মংচাইহ্লা নামে আরেক ছেলেকে আজ শনিবার(৪ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এঘটনায় পাইন্দু উজানি পাড়ায় রক্তের বন্যায় বইছে। তবে দুই ছেলে মৃত্যু তথ্যটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি এখনো। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন পাইন্দু ইউপি চেয়ারম্যান উহ্লামং মারমা।

শুক্রবার(৩ আগস্ট) রাত ১০টার দিকে পূর্ব শুত্রুতার জেরে বাড়িতে বন্দি থাকা অবস্থায় গুলি করে হত্যা করে। মংবাসিং নামে সেজ ছেলে পালিয়ে অল্পের জন্য রক্ষা পায়।

শনিবার সকালে রুমা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এঘটনার পর প্রতিপক্ষ উজানি পাড়ার ভারপ্রাপ্ত কারবারী মংরেঅং ও তার সাঙ্গরা পালিয়ে গেছে। নিহত কারবারী ক্যঅংপ্রু মারমা ও ভারপ্রাপ্ত কারবারী মংরেঅং সম্পর্কে মামা-ভাগিনা।

আহত মংচাইহ্লা মারমা বলেন, রাত ১০টা দিকে মংরেঅং নেতৃত্বে চার পাঁচজন আমাদের বাড়ির সামনে আসে এবং বলে তোদের সবাইকে শেষ করে দেব বাবা ছেলে কোনো গোষ্ঠী রাখব না বলে বন্দুক তাক করে। ততক্ষণে আমাদের ঘর বাইরে থেকে আটকে ফেলে। আমি আর বাবা ঘরের ভিতর আটকে যায়। আমরাও ভিতর থেকে আটকে দেই। এসময় ঘরের বাইরে থাকা আমার মা আক্রমণকারীদের পা ধরে আমার আর বাবার প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে কান্নাকাটি করে কিন্তু মংরেঅং গং শোনেনা আমার মায়ের আকুতি। সাড়ে ১০টার দিকে অামাদের ঘরের বেড়া দা দিয়ে কেটে বন্দুকের তাক করে আমাদের গুলি করে দুইবার।  গুলি করার সময় মংরেঅং (৫৫) এর সাথে তার ছোট ভাই মংমংশে(৩৫) ও ভগ্নিপতি অংসাথুই(৩৪) কে বেড়ার ফাঁকে দেখতে পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এসময় তারা উল্লাস করে। প্রথম গুলিতে আমার বাবা লুটিয়ে পড়ে। পরের গুলি আমার লাগলে আমিও অজ্ঞান হয়ে পড়ি। সম্ভবত আমি মরে গেছি এই ভেবে তারা চলে যায়। শনিবার সকালে পাড়াবাসী আমাকে উদ্ধার করে রুমা সদরে নিয়ে আসে। আসার পথে শুনলাম, আমার কনিষ্ঠ ভাই মংচাইথুই কেও খুঁজে বের করে দা দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে।

উল্লেখ্য যে ২০১৭ সালে ২৬জুলাই পাড়ায় প্রভাব বিস্তারকে কেন্দ্র করে নিহত ক্যঅংপ্রু কারবারীর বড় ছেলে হ্লাসিংমং মারমা(৩২) কর্তৃক বর্তমান ভারপ্রাপ্ত কারবারী মংরেঅং মারমার ছোটভাই ও বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুশৈমং মারমাকে গুলি করে হত্যা করে। ওই ঘটনায় নিহত কারবারী ক্যঅংপ্রু মারমাসহ তিন ছেলেসহ চারজনই জেলে ছিল। গত ৩১জুলাই পিতাসহ মেজ ও সেজ ছেলে মংক্যহ্লা মারমা ও মংবাসিং মারমা জামিনে বেরিয়ে আসে। বৃহস্পতিবার সকালে তারা পাইন্দু উজানি পাড়ায় নিজ বাসায় পৌঁছেন।

তবে এপ্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ রুমা সদরে এসে পৌঁছেনি। তাই পুলিশের কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

Exit mobile version