parbattanews

রূপ মাধুরীতে ভুবন ভোলাতে শরৎ এসেছে পাহাড়ে পাহাড়ে

KAS- PIC

শাহজাহান কবির সাজু:

শরতের রোদ আর বৃষ্টির লুকোচুরি নিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন-

“আজি ধানের ক্ষেতে রৌদ্রছায়ায় লুকোচুরি খেলা রে ভাই লুকোচুরির খেলা

নীল আকাশে কে ভাসালে সাদা মেঘের ভেলা রে ভাই- লুকোচুরির খেলা।

নীল আকাশে সাদা মেঘের ভেলা ভাসিয়ে পাহাড়ের প্রকৃতিতে শরতের আগমন। আকাশের সাদা মেঘের সাথে পাল্লা দিয়ে আরো সাদা হয়ে পাহাড়ী উপত্যকারেএখানে সেখানে ফোটা কাঁশ ফুলে শরতের সমীরণে ঢেউ খেলে যাচ্ছে। তাই দেখে মুগ্ধ ভানু  কোথাও কোথাও মেঘ ভাঙা এক চিলতে রোদ উঁকি দিয়ে নামিয়েছে পাহাড়ের চুড়ায়। অমনি লজ্জা পেয়ে মেঘ আটকে দিচ্ছে রোদের উঁকি। এভাবেই শরৎ নেমেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের সবুজ পাহাড়ের বুকে।

ঋতু চক্রের বর্ষ পরিক্রমায় শরতের আগমন ঘটে বর্ষার পরেই। প্রকৃতিতে শরৎ আসে স্নিগ্ধ আর কোমলতার রূপ নিয়ে। বর্ষার জমে থাকা পানিতে পানছড়ির বিভিন্ন জলাশয়ে ফোটা হরেক রঙের শাপলা-পদ্ম, ডাঙায় ফোঁটা শেফালী, মালতি, কামিনী, জুঁই, শিউলি, টগর আর আমনের মাঠে মৃদু হাওয়ায় সবুজ চারার হেলে-ধুলে নুয়ে পড়ার নয়নাভিরাম দৃশ্যগুলো যেন শরতের রূপমাধুরী।

পানছড়ির শান্তিপুর রাবার ড্যাম, অরণ্য কুটির ও ঝর্ণাটিলা যেমনি সারা বছর দর্শনার্থীদের পদচারণায় থাকে মুখরিত, ঠিক তেমনি ঋতুপরিক্রমায় আসা শরৎ ঋতুটিও মন জুড়ানো, প্রাণ জুড়ানো রূপবৈচিত্রে ভরপুর।

শরতের কাশফুলে মুগ্ধ হয় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। বিশেষ করে শরতে চেংগী নদীর দু’পাশ, মাঠে প্রান্তরে ও পানছড়ি-খাগড়াছড়ি-তবলছড়ি সড়কের দু’পাশে তাকালেই দেখা মিলে কাঁশফুল উঁকি মারার দৃশ্য। পানছড়ির বিভিন্ন সড়কের দু’পাশ জুড়ে থোকায় থোকায় ফোটা কাঁশফুলের ছোঁয়া পেতে বিদ্যালয়-কলেজমুখী শিক্ষার্থীরা থাকে মুখরিত। তাইতো শরৎ প্রকৃতিকে যেমনি সাজিয়ে তোলে অপরূপ সাজে, তেমনি মানুষের মনেও পৌঁছে দেয় প্রশান্তির পরশ।

হুট করে একটু রোদ আবার এক পশলা বৃষ্টি আর দিগন্তজুড়ে সাতরঙা হাসি দিয়ে ফুটে উঠে রংধনু। দিনের সোনালী আলোর ঝিলমিলিকে হারিয়ে দুধ ধোঁয়া ধবধবে জোছনার আলোতে মন হয়ে উঠে মাতোয়ারা। তাইতো কবি লিখেছেন-

শরতে আজ কোন অতিথি এলো রে প্রাণের দ্বারে/
আনন্দ গান গা রে হৃদয় আনন্দ গান গা রে………..।

সব মিলিয়ে শরতের অপরূপ সাজে সেজে উঠেছে পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ের সর্বত্র।

Exit mobile version