parbattanews

রেল লাইন প্রকল্পে মালিকানাধীন জমি থেকে বালি নেওয়ার অভিযোগ

রামু প্রতিনিধি:

রামুতে রেল লাইন প্রকল্পের কাজে ব্যবহারের জন্য বাঁকখালী নদীর তীরবর্তী ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে জোরপূর্বক বালি নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের লম্বরীপাড়া এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলনের লক্ষ্যে বাঁকখালী নদীর দক্ষিণ তীরে বিশাল এলাকা লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে।

ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে লাল পতাকা দেখে হতবাক হয়েছেন জমির মালিকরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ওইসব জমির মালিক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয়রা জানান, বাঁকখালী নদীতে তাদের জমির পাশে একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। মেশিনের পাশে নদীর তীরে তাদের নিজস্ব খতিয়ানভুক্ত জমি রয়েছে। এসব জমিতে তারা শীতকালীন শষ্য আবাদও করেছেন।

সম্প্রতি তাদের জমিতে কে বা কারা লাল পতাকা সম্বলিত খুটি দিয়ে বালি উত্তোলনের প্রক্রিয়া শুরু করেছে। প্রায় ২০ একর জমিতে এ ধরণের লাল পতাকা দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। পতাকা দেয়ার পূর্বে এসব জমির মালিকদের কোনভাবেই অবহিত করা হয়নি।

নির্বিচারে বালি ও মাটি উত্তোলন করা হলে জমির মালিকরা নিঃস্ব হয়ে পড়বে। কারণ এসব জমি চাষাবাদ করে বর্তমানে শতাধিক পরিবার জীবিকা নির্বাহ করছে।

সম্প্রতি রামু উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় ভুক্তভোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কক্সবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল রেল লাইনের কাজে বাঁকখালীর তীরের বালি বা মাটি উত্তোলন না করতে নির্দেশ দেন।

অথচ এ নির্দেশনা অমান্য করে বালি উত্তোলন করার ঘটনায় জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।

ক্ষুব্দ এলাকাবাসী জানান, বালি বা মাটি নিলে জমির মালিকদের ন্যায্য পাওনা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু এখানে জমির মালিক কিংবা স্থানীয় প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিদের তোয়াক্কা না করে ব্যক্তি মালিকানাধিন জমি থেকে মাটি লুট করার পায়তারা চলছে।

স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলা ওলামালীগ সভাপতি নুরুল আজিম জানান, এভাবে নির্বিচারে বালি উত্তোলন করলে এলাকায় বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙ্গণ তীব্র আকার ধারণ করবে। কারণ ইতিপূর্বেও এ এলাকার আশ-পাশে ব্যাপক নদী ভাঙণে শত শত পরিবার গৃহহারা হয়েছে।

লম্বরীপাড়া এলাকার বাসিন্দা ফরিদুল আলম জানান, বাকখালী নদী ড্রেজিং করার অজুহাতে একটি চক্র বালি বিক্রয়ের মহোৎসবে মেতে উঠেছে। প্রশাসনের খবরদারি না থাকায় চক্রটি বেপরোয়া হয়ে ইচ্ছে মত যেখান-সেখান থেকে বালি উত্তোলন অব্যাহত রেখেছে।

রাজারকুল ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আজিমুল আলম লিটন ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মাশেকুর রহমান জানান, প্রভাব খাটিয়ে যত্রতত্র এবং ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি থেকে বালি উত্তোলন করা হলে হাজারো মানুষের ক্ষতি হবে। এতে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হবে। তাই এ ব্যাপারে এলাকার সংসদ সদস্য এবং প্রশাসনকে সজাগ ভূমিকা রাখতে হবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাঁকখালী নদী ড্রেজিং প্রকল্পের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প কর্মকর্তা শাহজাহান সরকার জানান, ব্যক্তি মালিকানাধিন জমির বিষয়ে স্থানীয়রা তাকেও অবহিত করেছে। কিন্তু নদী খননের নকশায় ওই চরের মাটি কাটার জন্য নির্দেশনা রয়েছে। জেলা বা উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত দিলে আমরা সে অনুযায়ী কাজ করবো।

তিনি আরও জানান, নদী ড্রেজিং করে উত্তোলন করা বালি রাজস্ব দিয়েই রেল লাইন নির্মাণ প্রকল্পের কাজে সরবরাহ করা হচ্ছে।

Exit mobile version