parbattanews

রোহিঙ্গাদের অসতর্কতা ও জনসমাগম বাড়াতে পারে করোনা ঝুঁকি

কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে বসবাসরত রোহিঙ্গা ক্যাম্প করোনা ঝুঁকিতে রয়েছে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞমহল।

জাতিসংঘের মতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় ৬৬ লক্ষ বাস্তুচ্যুত শরণার্থী রয়েছে। তন্মধ্যে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প সবচেয়ে বড় শরণার্থী ক্যাম্প বলে ধারণা করা হয়। এখানে নতুন পুরাতন মিলে প্রায় ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা ইতোমধ্যে অবস্থান করছে।

মহামারী করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) থেকে বাঁচতে সবসময়ই সতর্কতা অবলম্বন, সচেতনতা গড়া, সামাজিক দূরত্ব বজায়, পরিচ্ছন্ন থাকা ও জনসমাগকে এড়িয়ে চলতে বলা হয়েছে।

কিন্তু রোহিঙ্গাদের জন্য এসব নির্দেশনা কল্পনাতীত। কারণ তাদের বসবাসের ঘনত্ব আর অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে উল্লেখযোগ্য নির্দেশনা মেনে চলা দুঃসাধ্য। এছাড়া তাদের অবহেলা আর অসর্তকতার কারণেও ছড়াতে পারে করোনা ভাইরাস।

ইতিপূর্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বিভিন্নভাবে তাদের সতর্কতা জারি করেছে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এছাড়া স্বাস্থ্য সংস্থাগুলো রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সচেতনতায় অবিরাম কাজ করে যাচ্ছে। প্রয়োজনে বিভিন্ন দ্রব্য দিয়ে সহায়তা করছে এনজিওগুলো। সাবান, মাস্ক, স্যানিটাইজার সহ ইত্যাদি করোনা বিস্তার রোধ মূলক জিনিসপত্র দেওয়া হয়েছে রোহিঙ্গাদের।

এতকিছুর পরেও জনসমাগম কমছেনা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। বুধবার (১ এপ্রিল) সরেজমিনে হাকিমপাড়া ১৪ নং ক্যাম্পের বিভিন্ন জায়গায় গেলে দেখা যায় তাদের জনকীর্ণ অবস্থার স্থির চিত্র। ক্যাম্পের অভ্যন্তরে খোলা অবস্থায় দোকানপাট। চায়ের দোকানগুলোতে চলছে ভরপুর আড্ডা। কেউ কেউ দলে দলে বসে লুডুর মতো খেলা খেলছে। বাইরে থেকে মনে হবে তারা উৎসবমুখর পরিবেশে আর খুব আমেজে আছে।

অন্যদিকে ক্যাম্পের গভীরে গড়া বাজারগুলো খোলামেলা অবস্থায় রয়েছে। যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক এসে জমায়েত হয়। সচেতন রোহিঙ্গারা মনে করছেন এসব চিত্র করোনা ঝুঁকির সম্ভাবনা বাড়াতে পারে।

হাকিমপাড়া ১৪ নং ক্যাম্পের আজিজ নামের একজন সাধারণ রোহিঙ্গা বলেন,”এখানে করোনা আসার সম্ভাবনা নেই। শুনলাম এই ভাইরাসটি এখনো কক্সবাজার পার হয়নি। এছাড়া সাধারণ রোহিঙ্গা স্রষ্টার উপর বিশ্বাস রাখছে। সবাই নামাজে অভ্যস্ত হয়েছে। তাই কেউ করোনাকে তেমন ভয় পাচ্ছেনা।”

হাকিমপাড়া ১৪ নং- ক্যাম্পের ই-ব্লকের সলিমুল্লাহ নামের এক সচেতন রোহিঙ্গা বলেন,”যতদূর জানি রোগটি ছোঁয়াছে। এটি থেকে বাঁচতে হলে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা আবশ্যক। কিন্তু আমরা এতই ঘন পরিবেশে থাকি যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা অসম্ভব ব্যাপার। এমতবস্থায় বাড়ি থাকলেও ছোট্ট বাড়িতে লোকজন বেশি থাকায় পর্যাপ্ত দূরত্ব মেনে চলা সম্ভব হবেনা। যার কারণে করোনা আতঙ্ক রয়েছে এখানে।”

স্থানীয় ৫নং পালংখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন,”আমরা করোনা আতঙ্কে আছি দয়া করে রোহিঙ্গা বিচরণ বন্ধ করুন। রোহিঙ্গারা যত্রতত্র চলা ফেরা করছে। তাদের মধ্যে নূন্যতম সচেতনতা বোধ দেখা যাচ্ছেনা। রোহিঙ্গারা মাস্ক ছাড়া অবাধ চলাচল করছে। সেগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেখতে হবে।”

তিনি আরো বলেন,”পালংখালী ইউনিয়নে করোনার জন্য জনসচেতনতার কথা বলে লাভ কি? রোহিঙ্গারা পালংখালী বাসী তথা স্থানীয়দের করোনা ঝুঁকিতে ফেলছে। রোহিঙ্গারা যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাচ্ছে প্রশাসন দেখেও দেখেনা।”

Exit mobile version