parbattanews

রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় সেনাবাহিনী দায়িত্ব নেওয়ায় ফিরে এসেছে শৃঙ্খলা

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের উপর নির্যাতনের ফলে প্রাণ বাঁচাতে সেদেশ থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা ও নিয়ন্ত্রেনে কাজ করছে সেনাবাহিনী। এতে ফিরে এসেছে শৃঙ্খলা। ফলে রোহিঙ্গারা যথাযথভাবে পাচ্ছে ত্রাণ, চিকিৎসা সেবা, আশ্রয় সহ নানা সুযোগ সুবিধা।

অন্যদিকে যারা রোহিঙ্গাদের সহযোগিতা করছে তাদেরও পড়তে হচ্ছেনা ঝামেলায়। এতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে সহযোগিতা করতে আসা লোকজন ও সহযোগিতা নেওয়া রোহিঙ্গারা।

মিয়ানমারে চলা সহিংসতায় পালিয়ে আসা ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয়, খাওয়া, চিকিৎসা সহ নানা মৌলিক চাহিদা মেটাতে সরকার ও বিভিন্ন সংস্থা। পাশাপাশি তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে এদেশের মানুষ।

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাদের জন্য আসছে ত্রান, মেডিকেল ক্যাম্প। তাদের জন্য করা হয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও সেনিটেশন ব্যবস্থা। শুধু তাই নয় তাদের লেখা-পড়া ও ধর্ম চর্চার জন্য স্কুল ও মসজিদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আর যাতায়াতের সুবিধার্থে সেনাবাহিনী সংস্কার করছে সড়ক।

মানবিক দিক বিবেচনা করে অস্থায়ীভাবে থাকতে দেওয়া রোহিঙ্গাদের এত সুযোগ সুবিধা দেওয়ার পরেও শুরুর দিকে ছিল চরম বিশৃঙ্খলা। তারা ত্রান নিতে এসে সৃষ্টি করত ঝামেলা। কাড়া-কাড়িতে কেউ একাধিকবার ত্রান পেত। আবার অনেকে একেবারেই পেতনা। এছাড়া অনেকে রাস্তুার দুই পাশ থেকে সরত না ত্রানের জন্য। ফিরে যেতনা তাদের জন্য তৈরি করা অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে। আবার অনেক পুরাতন রোহিঙ্গাও ত্রাণ নিয়ে ঝামেলা করছে নতুনদের সাথে মিশে। এ অবস্থায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও রোহিঙ্গাদের নিয়ন্ত্রেনে হিমশিম খাচ্ছিল প্রশাসন। পরে ত্রান সহায়তা কার্যক্রমে সেনা সদস্যরা অংশ গ্রহণ করেছে। আর সেনা সদস্যদের অংশগ্রহণের পরে ত্রাণ বিতরণে ফিরে এসেছে শৃঙ্খলা।

ত্রান দিতে আসা লোকজন জানায়, ত্রান বিতরণে সেনা সদস্যদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে ব্যবস্থাপনায় যেমন উন্নতি লাভ করেছে তেমনি যথাযথভাবে ত্রান পাচ্ছে রোহিঙ্গারা।

এ ব্যাপারে রামু সেনা নিবাসের জিওসি, মেজর জেনারেল মাকসুদুর রহমান জানান, বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা ত্রানগুলো সেনাবাহিনী বুঝে নেওয়ার পরে ১৪টি ত্রান বিতরণ কেন্দ্র এসব বন্টন করে রোহিঙ্গাদের জন্য পাঠানো হচ্ছে। আর যথা নিয়মে বিতরণ করা হচ্ছে। রামু ১০ পদাতিক ডিভিশনের ৩টি বিগ্রেট কাজ করছে ৩জন বিগ্রেডিয়ার জেনারেলের নেতৃত্বে।

শুধু তাই নয়, এসব রোহিঙ্গা কোনভাবে রাস্থার পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে তাদের জন্য অস্থায়ীভাবে তৈরি করা নির্ধারিত আশ্রয় কেন্দ্রে ফিরে যাচ্ছিলনা। পরে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে রোহিঙ্গারা ওসব স্থানে ফিরে যাচ্ছে। এছাড়া রোহিঙ্গাদের কারণে শুরু থেকেই উখিয়া-টেকনাফে লেগে থাকত যানযট। তা এখন অনেকটা কমে এসেছে সেনাবাহিনীর কারণে।

আরো শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে উখিয়া ডিগ্রি কলেজের অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে গত রবিবার বিকালে এক সমন্বয় সভা করেছে সেনাবাহিনী। রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় যেসব সংস্থা কাজ করছে তাদের সাথে নিয়েই এই সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়।

৬৫ পদাতিক ডিভিশনের কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তাগাউছুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় রোহিঙ্গাদের ছবিযুক্ত রেশন কার্ড প্রদানের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এসব কার্ডের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের ত্রাণসহ সব ধরণের মানবিক সহায়তা দেয়া হবে। এ সভায় বিভিন্ন সংস্থার কর্তাদের সাথে কথা ও পরিকল্পনা হয় আরো সহজ ও উন্নতভাবে রোহিঙ্গাদের কিভাবে সেবা প্রদান করা হয়।

Exit mobile version