parbattanews

রোহিঙ্গা নেতারাই লুটে নিচ্ছে ত্রাণ, বঞ্চিত হচ্ছে দরিদ্ররা

কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য আসা ত্রাণ-সাহায্য লুটে নেওয়ার অভিযোগ এসেছে ক্যাম্পে দায়িত্বরত রোহিঙ্গা নেতাদের (মাঝি) উপর। জানা যায়, দেশি-বিদেশি অনেক সংস্থা প্রত্যেক রোহিঙ্গা পরিবারের জন্য বরাদ্দকৃত বিভিন্ন ত্রাণ সামগ্রীর টোকেন দিয়ে থাকলেও রোহিঙ্গা নেতারা তা প্রতিটি পরিবারকে না দিয়ে বরং নিজের ঘর এবং আত্মীয়-স্বজনদের বিলিয়ে দিচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন।

কুতুপালং মধুরছড়া ক্যাম্প ৪ এর মো. ইলিয়াছ বলেন, ‘আমরা শুনি আমাদের জন্য অনেক ত্রাণ-সাহায্য আসে। কিন্তু সেই হারে আমরা পাই না। অনেক সময় দেখা যায় যে, ক্যাম্পের মাঝি ও হেড মাঝিরা মিলে ভাগাভাগি করে তাঁদের বাসায় নিয়ে যায়। আবার ত্রাণ কমিটির সদস্যরাও এই অবিচার করে থাকে আমাদের সাথে। বেশি ত্রাণ আসলে আমাদের সবগুলো দেয় না। আমরা কিছু বলি না কাউকে, বললে যা পাই তাও পাবো না। ’

বালুখালী ক্যাম্পের জে ব্লকের ঐজিদা বেগম জানান, ‘ত্রাণ পাই না এমনটা কিন্তু নয়। তবে অনেকের মুখে শুনি তাঁরা অনেক কিছুই পেয়ে থাকে যা আমরা পাই না। অথচ ত্রাণ সবার জন্যই সমান আসে, কারো জন্য বেশি কারো জন্য কম এমনটা নয়। অনেক মাঝি আছেন যারা তাঁদের ব্লকের মানুষদের যথাযথ ত্রাণ সামগ্রীর টোকেন পৌঁছে দেয়। অনেকেই আছেন যারা সপ্তাহে ৪টি টোকেন আসলে ২/৩টি দেয় বাকিটা দেয় না। ঐ টোকেনগুলো মাঝিরা জব্দ করে রেখে দেয় পরে তাঁদের আত্মীয় স্বজনদের দিয়ে দেয়।’

তাঁদের নিজস্ব ব্লকের মাঝি সম্পর্কে তিনি আরো বলেন, ‘এই ব্লকের মাঝি নিজেকে ব্যস্ত দেখিয়ে মাঝেমধ্যে ত্রাণের টোকেন দেন না। ত্রাণ কর্মীরা নাম লিখতে আসলে তাঁদের গিয়ে ব্লকের রিপোর্ট দেন না। যারা আসলে আমাদের দায়িত্ব নিয়েছেন তাঁরাই যদি এরকম অন্যায় করে তাহলে আমাদের আর কি করার থাকে।’

জানতে চাইলে এ বিষয়ে বালুখালী ক্যাম্প ১২ জে ব্লকের কবির মাঝি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি সবাইকে যথাক্রমে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দিতে। অনেক সময় দেখা যায় যে কিছু পরিবার নাম টোকেন-এ উঠে আসে না ভুলক্রমে। কিন্তু জেনে বোঝে আমরা এরকম অবিচার করি না। মাঝেমধ্যে এমন হয় যে ত্রাণকেন্দ্র থেকে দূরে কিছু পরিবারে ত্রাণ সামগ্রী নিতে আসার মত কেউ থাকে না, এমন পরিবারের সদস্যদের অনেক সময় পাই না। তবে এখন থেকে ত্রুটিহীন কাজ করার চেষ্টা করবো।’

এ বিষয়ে পাশের ব্লকের মাঝি নুরুল বশর জানান, ‘রোহিঙ্গাদের জন্য যে খাদ্য ও মালামাল আসে সেগুলো তো তাঁদের প্রতিটি পরিবারকে পেতে হবে এবং তার জন্যই আমাদের মতো ক্যাম্পে মাঝি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা মাঝিরাই যদি নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে অন্যের জিনিস খেয়ে ফেলি তাহলে এটা অন্যায় হয়। তবে সব মাঝিতো এক নয়, কিছু কিছু মাঝিরা মিলে এরকম করে থাকে। এরা ক্যাম্পে ঘৃণিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘মিয়ানমারে থাকতে যারা অন্যের জিনিস চুরি করা ও লোকসানের চিন্তায় ডুবে থাকতো আজ তাঁরাই এখানে এসে এরকম মাঝি সেজে দরিদ্রের মালপত্র লুটে নিচ্ছে। ক্যাম্পে বেশিরভাগই গরীব লোকজন। তাঁদের সাথে এরকম করাটা উচিৎ নয়।

Exit mobile version