parbattanews

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরও অনিশ্চয়তা, চীনা প্রস্তাব মানছে না মিয়ানমার

প্রতীকী ছবি

চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে পরীক্ষমূলক ও স্বল্প পরিসরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করতে চায় বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমার। সে লক্ষ্যে বহুল প্রতীক্ষিত প্রত্যাবাসন বৈঠকটি যুক্তি, পাল্টা যুক্তি, খানিকটা বিতর্কের মধ্যদিয়েই শেষ হয়েছে। চীনের মধ্যস্থতায় ওই বৈঠকে বসেছিলেন মিয়ানমার এবং বাংলাদেশের মহাপরিচালক পর্যায়ের কর্মকর্তারা।

দায়িত্বশীল কূটনৈতিক সূত্র বলছে, ইয়াঙ্গুনের ওই বৈঠকে খোলামেলা আলোচনা হয়েছে। তাতে অনেক বিষয়েই মতপার্থক্য আরও স্পষ্ট হয়েছে। বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের নিজ নিজ গ্রামে পুনর্বাসনের চীনা প্রস্তাব বা প্রতিশ্রুতিকে মানছে না মিয়ানমার। তারা এর বিপক্ষে এখন বিভিন্ন ‘যুক্তি’ দাঁড় করানোর চেষ্টা করছে। রাখাইনে গণহত্যার আলামত নষ্ট না করা সংক্রান্ত আইসিসি’র নির্দেশনাকেও মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ সামনে আনছে! কূটনৈতিক সূত্র জানিয়েছে, এতকিছুর পরও বৈঠকে পাইলট প্রকল্পের আওতায় কিছু রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছে মিয়ানমার। প্রত্যাবাসনের প্রথম ধাপে দেশটি নিবন্ধিত ৩ হাজার রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে নিতে চায়।

বাংলাদেশ এতে শর্তসপেক্ষে রাজি হয়েছে। ঢাকার চাওয়া একটাই তা হলো যত দ্রুত সম্ভব মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন শুরু করা। তবে ঠিক কবে এই প্রত্যাবাসন শুরু হবে, তা সদ্যসমাপ্ত বৈঠকেও ঠিক হয়নি।

এ অবস্থায় প্রত্যাবাসন যে প্রস্তাবিত রোডম্যাপ অর্থাৎ ডিসেম্বর তথা নির্বাচনের আগে হচ্ছে না সেটা অনুমেয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রত্যাবাসন নিয়ে অনিশ্চয়তায় সংকট আরও বাড়বে বৈ কমবে না। প্রত্যাবাসন শুরুর আগে রোহিঙ্গাদের মনোবল বাড়াতে হবে জানিয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, যাদের প্রত্যাবাসন করা হবে, আগে তাদের মনোবল বাড়াতে হবে। তারপর তাদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় যেতে চায় তাদের পাঠানো হবে। আমরা টেকসই প্রত্যাবাসন করতে চাই। যেন প্রথম ধাপের পর পরবর্তী ধাপেও রোহিঙ্গারা যেতে থাকে।

মিয়ানমার থেকে একটি প্রতিনিধিদল কক্সবাজারে এসে রোহিঙ্গাদের মনোবল বাড়ানোর বিষয়ে কাজ করার কথা রয়েছে। মিয়ানমার প্রতিনিধিদলের কক্সবাজার সফরের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কূটনীতিক বলেন, তারা আসবে। আমরা চাই, তারা এসে রোহিঙ্গাদের আগ্রহী করে তুলুক; তাদের নিশ্চয়তা দিক। প্রত্যাবাসনের আগে আমাদের মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গাদের মনোবল বৃদ্ধি করা।

ইয়াঙ্গুন বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের মহাপরিচালক মিয়া মাঈনুল আলমের নেতৃৃত্বে ৪ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেন। এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মূল প্রশ্ন, তারা ফিরে যেতে নিরাপদ বোধ করছে কিনা। রোহিঙ্গারা যদি নিরাপদ বোধ না করে, তাহলে জোর করে ফেরত পাঠাবে না বাংলাদেশ। কারণ স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও সম্মানের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন চায় ঢাকা। প্রত্যাবাসনে রাজি হওয়া রোহিঙ্গাদের জন্য বেশ কিছু ঘর তৈরি করেছে মিয়ানমার সরকার। তবে সেগুলো দেখে এসে প্রত্যাবাসনে অনাগ্রহের কথা জানিয়েছেন রোহিঙ্গা নেতারা। এখন তাদের আস্থা অর্জনে নেপিদো থেকে আরও কিছু পদক্ষেপ নেয়ার কথা।

Exit mobile version